এইদিন ওয়েবডেস্ক,দুর্গাপুর(পশ্চিম বর্ধমান),১৫ অক্টোবর : পশ্চিম বর্ধমান জেলার বেসরকারি মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীর যৌন নির্যাতন কান্ডে নতুন মোড় । পুলিশের দাবি, নির্যাতিতা গোপন জবানবন্দিতে জানিয়েছেন যে গণধর্ষণ নয়, একজন ধর্ষণ করেছিল তাকে । আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের সিপি সুনীল কুমার চৌধুরী বলেন, নির্যাতিতার স্টেটমেন্ট অনুযায়ী, এক জন অভিযুক্ত তাঁকে ধর্ষণ করেছে । নির্যাতিতার সহপাঠীর ভূমিকা নিয়ে আমাদের প্রশ্ন রয়েছে। ওকে আমরা বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করছি। সে কারণে ওর জামাকাপড়ও সিজ করেছি । এদিকে নির্যাতিতার বাবা বলেছেন,”যত তাড়াতাড়ি পারি বাংলা ছেড়ে চলে যাব । আমরা আর আসবো না বাবু।”
এদিকে আজ বুধবার নির্যাতিতার সহপাঠী ধৃত ওয়াসিফ আলি শেখকে আদালতে তোলা হয় । কিন্তু বার কাউন্সিলের পক্ষ থেকে কোনো আইনজীবী তার হয়ে সওয়াল করতে রাজি হননি । শেষ পর্যন্ত স্টেট লিগ্যাল সার্ভিসের পক্ষ থেকে আইনজীবী পূজা কুর্মি ধৃতের জামিনের জন্য আবেদন জানান । কিন্তু তার আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত । অন্যদিকে পুলিশ ধৃতের ১০ দিনের হেফাজত চেয়ে আবেদন জানায় । বিচারক ৭ দিনের জামিন মঞ্জুর করেন ।
পুলিশ জানিয়েছে, নির্যাতিতা গোপন জবানবন্দিতে জানিয়েছেন যে কোনো এক নির্জন রাস্তা দিয়ে তাঁকে জঙ্গলের ভিতর নিয়ে যাওয়া হয়েছিল,সেখানে তাঁকে তিন দুষ্কৃতী ঘিরে ধরেছিল । নির্যাতিতার প্রশ্ন তোলেন, কেন ওই সহপাঠী তাকে ছেড়ে চলে এসেছিল ? তাঁর সহপাঠীর কাছে ফোন থাকা সত্ত্বেও তিনি কেন ঘটনার কথা কাউকে জানাননি? কেন কলেজ কর্তৃপক্ষ কিংবা পুলিশকে জানাননি ?
দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের সিপি বলেছেন, নির্যাতিতার স্টেটমেন্ট অনুযায়ী, এক জন অভিযুক্ত তাঁকে ধর্ষণ করেছেন। নির্যাতিতার সহপাঠীর ভূমিকা নিয়ে আমাদের প্রশ্ন রয়েছে। ওকে আমরা বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করছি। সে কারণে ওর জামাকাপড়ও সিজ করেছি। বিএনএস- এর ধারায় ছিনতাইয়ের অভিযোগে ৩০৪ (২), ৩০৮ (২), তোলাবাজি, ৩১৭(২) ধারায় মামলা হয়েছে।
এদিকে আদালত চত্বরে নির্যাতিতার বাবাকে খুব হতাশ দেখা যায় । সেই হতাশার স্পষ্ট ছাপ ছিল তার কথাবার্তায় । তিনি বলেন,’আমি বাংলা ছেড়ে চলে যাব । আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ যা নষ্ট হওয়ার হয়ে গেছে । আপনাদের মিডিয়ার মাধ্যমে আমি নিবেদন করছি যে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি হোক । সোনার বাংলা সোনার হয়ে থাকুক । আমরা উড়িষ্যা চলে যাব । আমি বহু আশা ভরসা করে মেয়েকে ডাক্তারি পড়ানোর জন্য এখানে পাঠিয়েছিলাম । তার তো যা হওয়ার হয়ে গেছে । আর কিছু বলার নেই । খুব কষ্ট হচ্ছে । যত তাড়াতাড়ি পারি বাংলা ছেড়ে চলে যাব । আমরা আর আসবো না বাবু ।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমি দিদির কাছে অনুরোধ করছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের ন্যায় দেবেন । আমার মেয়ের মত বাংলার কোন মেয়ের যেন এরকম না হয় ।’ আজও তিনি ঘটনা তদন্ত ভার সিবিআই এর হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে আবেদন জানিয়েছেন । তবে তিনি বলেন,’ওটা পশ্চিমবঙ্গের সরকারের উপর নির্ভর করছে । মমতা দিদি আমার মায়ের মত । ওনাকে কোটি কোটি প্রণাম ।’ তিনি হাতজোড় করে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যদি কিছু আমি ভুল বলে থাকি তাহলে নিজের ছেলে মনে করে আমাকে ক্ষমা করে দেবেন । আমার মেয়েকে ন্যায় দেওয়ার চেষ্টা করবেন । ও শুধু আমার মেয়ে নয়, গোটা ভারতের মেয়ে । মমতা দিদি আমি যদি অন্যায় কিছু বলে থাকি তাহলে নিজের ছেলে মনে করে আমাকে ক্ষমা করে দেবেন এবং আমার মেয়েকে ন্যায় দেবেন । এইটাই আমার অনুরোধ।’ সাংবাদিতা তাকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন ? উত্তরে তিনি বলেন,’আমি শুধু আমার মেয়েকে নিয়ে যেতে চাই ।’।
“

