এইদিন ওয়েবডেস্ক,দুর্গাপুর(পশ্চিম বর্ধমান),১৪ অক্টোবর : পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের IQ সিটি মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারি পড়ুয়াকে গণধর্ষণের ঘটনায় পুলিশ বিজড়া ডাঙাপাড়ার শেখ রিয়াজউদ্দিন, ফিরদৌস শেখ, নাসিরুদ্দিন শেখ ওরফে সম্রাট, সফিক শেখ এবং বিজড়া বাউড়িপাড়ার অপু বাউড়িকে গ্রেফতার করেছে। উড়িষ্যার জলেশ্বরের বাসিন্দা দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রী তাঁর এক সহপাঠী ছাত্রের সঙ্গে কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়েছিলেন। কলেজ ক্যাম্পাস থেকে প্রায় ১ কিমি দূরে মোহনবাগান অ্যাভিনিউ এলাকায় তাকে ঝোপের মধ্যে টেনে নিয়ে গিয়ে ৫ জন মিলে তার উপর নারকীয় অত্যাচার চালায় বলে অভিযোগ । নির্যাতিতা এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
ইতিমধ্যে কলেজ ক্যাম্পাসের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, শুক্রবার সন্ধে ৭টা ৫৮ মিনিট নাগাদ, এক সহপাঠীর সঙ্গে রাতের খাবার খেতে কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে বেরোন নির্যাতিতা। রাত ৮টা ৪২ মিনিটে ক্যাম্পাসে একাই ফিরে আসছেন নির্যাতিতার সহপাঠী । ফলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির দাবিও পুলিশের তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়৷ কারন মমতা ব্যানার্জির দাবি ছিল মেয়েটি রাত্রি ১২:৩০ নাগাদ কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়েছিল । এদিকে পুলিশের তদন্তে যেটা উঠে এসেছে, শুরু থেকেই তাঁদের পিছু নেয় ৩ অজ্ঞাত পরিচয় যুবক। কলেজ ক্যাম্পাস থেকে প্রায় ১ কিমি দূরে মোহনবাগান অ্যাভিনিউ। সেখানে জঙ্গলের ভিতরে মেয়েটিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় । কেড়ে নেওয়া হয় তার মোবাইল ফোন।
পুলিশ সূত্রে খবর, নির্যাতিতাকে গণধর্ষণের সময় সেখানে আরও ২ জন চলে আসে। অভিযোগ, তখনই তরুণীর মোবাইল ফোন নিয়ে চলে যায় ৩ অভিযুক্ত। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা আবার ফিরে আসে। এরপর নির্যাতিতার মোবাইল ফোন থেকেই তাঁর সহপাঠীকে ফোন করে ঘটনাস্থলে ডাকা হয়। সুতরাং এই নারকীয় ঘটনায় নির্যাতিতার সহপাঠীর প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহের উদ্রেগ হয়েছে । পুলিশ সূত্রে দাবি, ফুটেজে দেখা যায়,নির্যাতিতার সহপাঠী বেরিয়ে যাওয়ার ঠিক ৪১ মিনিট পর,সে মেয়েটিকে নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকে৷ তার কয়েক মিনিটের মধ্যেই গার্লস হস্টেলের দিকে এগিয়ে যান নির্যাতিতা।
আজ মঙ্গলবার সকালে রিয়াজউদ্দিন ও নাসিরুদ্দিনকে নিয়ে বিজড়া গ্রামে যায় পুলিশ। দুর্গাপুর থানা ও নিউটাউনশিপ থানার যৌথ টিম তাদের নিয়ে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তাদের কাছ থেকে জেরায় পাওয়া তথ্য খতিয়ে দেখে। তদন্তকারীরা কথা বলেন স্থানীয়দের সঙ্গেও। একই সঙ্গে এদিনই ধৃতদের ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নিমাণ করার উদ্যোগ নেয় পুলিশ। ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তার নেতৃত্বে হাসপাতাল থেকে শুরু হয় প্রক্রিয়া। গোটা রাস্তা ও ঘটনাস্থল প্রথমে রেকি করে পুলিশ।
ঘটনার পুনর্নিমাণ করা হবে বলে এদিন সকাল থেকেই ঘটনাস্থলে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করে রাখা হয়েছিল । দুই জনের একজনকে জঙ্গলের ভিতরের দিকে নিয়ে গিয়ে তদন্ত করেন তদন্তকারীরা। ঘটনার আংশিক পুনর্নিমাণ করা হয়। তবে ঘটনাস্থলের আগেই সাংবাদিকদের আটকে দেওয়ায় ভিতরে কী হচ্ছে তা বিস্তারিত জানা যায়নি । গনরোষের কারনে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেই কারণে ধৃতকে ঘুর পথে ঘটনাস্থলে আনা হয় । কিছুক্ষণ পরে ছাত্রীর সহপাঠী ছাত্রকেও ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে পুলিশ ।।

