এইদিন ওয়েবডেস্ক,দুর্গাপুর(পশ্চিম বর্ধমান),১৩ অক্টোবর : পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের উড়িষ্যার জলশ্বরের বাসিন্দা ছাত্রীর গনধর্ষণের ঘটনায় তোলপাড় গোটা দেশ । বিশেষ করে গতকাল মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বিতর্কিত মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে । তিনি রাজ্যের মেয়েদের রাতে বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন । এদিকে এই বর্বরোচিত ঘটনায় ইতিমধ্যে ৪ ধর্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । তাদের মধ্যে শেখ রিয়াজউদ্দিন,শেখ ফিরদৌস ও শেখ সাফিকুলকে গতকাল আদালতে তোলা হলে ১০ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয় । নির্যাতিতার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন বিজেপির আইনজীবীরা ।
ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে আজ সোমবার সকাল থেকে দুর্গাপুর সিটি সেন্টারে অনির্দিষ্টকালের ধর্না কর্মসূচির শুরু করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি “ধর্ষকদের নেত্রী কে ? মমতা ব্যানার্জি আবার কে” শ্লোগান তোলেন । মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির পদত্যাগ এবং ৫ ধর্ষকের ফাঁসির দাবি জানান তিনি । শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, বিজেপির কর্মসূচি ভন্ডুল করার জন্য মঞ্চে হামলা ও মাইকের তার কেটে দিয়েছিল দুর্গাপুর পুলিশের । হাসপাতালে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি এবং ডাক্তারদের হুমকি দেখিয়ে মুখ বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ । এমনকি উড়িষ্যা মহিলা কমিশনকে পর্যন্ত নির্যাতিতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি ।
শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, নির্যাতিতার বাবা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে তার মেয়ে খুন হয়ে যেতে পারেন ।’ তিনি জানান, পরিবারের দাবি অনুযায়ী নির্যাতিতাকে ভুবনেশ্বর এইমসে পাঠানোর দায়িত্ব নেবে রাজ্য বিজেপি । রবিবার বিজেপি নেত্রী লকেট চ্যাটার্জিকেও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিতা ছাত্রীর সঙ্গে পুলিশ দেখা করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ । লকেট বলেছেন,’যদি একজন ধর্ষককে এনকাউন্টার করা হত তাহলে রাজ্যে এই ধরনের ঘটনা ঘটত না ।’
প্রসঙ্গত,গত শুক্রবার রাতের খাবার খেতে বেরিয়ে গনধর্ষণের শিকার হন দুর্গাপুর আইটিসি মেডিকেল কলেজের পাঠরতা উড়িষ্যার জলশ্বরের ওই ছাত্রী । কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে গেলে ৫ জন নরপশু তাকে টেনে ঝোপের মধ্যে নিয়ে গিয়ে পাশবিক অত্যাচার চালায় । এই ঘটনায় নির্যাতিতার এক সহপাঠীর ভূমিকা অত্যন্ত সন্দেহজনক । বিজেপির অভিযোগ যে ধর্ষকরা ভিন সম্প্রদায়ের হওয়ায় পুলিশ তাদের পরিচয় গোপন ও তথ্যপ্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করেছিল প্রথমদিকে৷ কিন্তু বিজেপির সক্রিয়তাই ব্যার্থ হন । বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানান,’সজ্জন ঝুনঝুনওয়ালের ওই মেডিকেল কলেজে ৮০ লক্ষ টাকা দিয়ে নির্যাতিতাকে ভর্তি করিয়েছিলেন তার বাবা ৷ নির্যাতিতার ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে রাজ্য বিজেপি সর্বোতভাবে পাশে থাকবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন এদিন । এদিনের বিজেপির ধর্নামঞ্চে নির্যাতিতার বাবাও উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে ।।

