এইদিন স্পোর্টস নিউজ,১৩ অক্টোবর : রবিবার বিশাখাপত্তনমের এসিএ-ভিডিসিএ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত আইসিসি মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৫-এর চতুর্থ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩ উইকেটে হার মানতে হল ভারতকে । স্কোরবোর্ডে ৩৩০ রানের ‘হিমালয়’ চাপিয়েও শেষরক্ষা হল না। তবে ভারতের স্মৃতি মান্ধানা ইতিহাস তৈরি করেছেন । অন্যদিকে পরাজয় কেবল ম্যাচের হার নয়, বরং আসন্ন ইংল্যান্ড ম্যাচের আগে ভারতীয় ড্রেসিংরুমে গভীর চিন্তার ভাঁজ ফেলল।
এই ম্যাচে ভারতীয় দলকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন স্মৃতি মান্ধানা এবং প্রতীকা রাওয়াল। পাওয়ারপ্লেতে দুই খেলোয়াড়ই বিস্ফোরক ব্যাটিং করেছিলেন। পাওয়ারপ্লেতে ভারত কোনও উইকেট না হারিয়ে ৫৮ রান করে। এই সময়ে স্মৃতি একটি গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ড গড়েন। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান স্মৃতি এই বছর মহিলাদের ওয়ানডেতে ১,০০০ রান পূর্ণ করা প্রথম মহিলা হয়ে ওঠেন।
স্মৃতি মান্ধানা এক ক্যালেন্ডার বছরে মহিলাদের ওয়ানডেতে ১,০০০ রান করা প্রথম ব্যাটসম্যান হয়েছেন। এর আগে অন্য কোনও মহিলা খেলোয়াড় এই কৃতিত্ব অর্জন করতে পারেননি। প্রাক্তন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক বেলিন্ডা ক্লার্ক এর আগে ১৯৯৭ সালে মহিলাদের ওয়ানডেতে ৮০.৮৩ গড়ে ৯৭০ রান করেছিলেন। স্মৃতি মান্ধানা মহিলাদের ওয়ানডেতে ৫,০০০ রানও পূর্ণ করলেন। তিনি দ্বিতীয় ভারতীয় এবং বিশ্বের পঞ্চম খেলোয়াড় হিসেবে এই কৃতিত্ব অর্জন করলেন। স্মৃতি মাত্র ১১২ ইনিংসে এই মাইলফলক অর্জন করলেন। স্মৃতি হলেন সেই খেলোয়াড় যিনি মহিলাদের ওয়ানডেতে সবচেয়ে কম ইনিংস এবং বলে ৫,০০০ রান করেছেন। তিনি স্টেফানি টেলর (১২৯ ইনিংস) এবং সুজি বেটসের (৬১৮২ বল) রেকর্ড ভেঙেছেন।
ম্যাচের দিকে তাকালে, একটা সময় অস্ট্রেলিয়ার পরাজয় নিশ্চিত মনে হচ্ছিল । পাওয়ার প্লে-তে ৮২ রান তোলার পরেও পরের ২০ ওভারে রান তোলার গতি মন্থর হয়ে যায়। বাঁহাতি শ্রী চরণী (৩/৪১) এবং দীপ্তি শর্মার স্পিন জুটিকে সামলাতে তখন কার্যত হিমশিম খাচ্ছিলেন অজি ব্যাটাররা। বিশেষত শ্রী চরণী ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সেরা ছিলেন। বেথ মুনি (৪) এবং অ্যানাবেল সাদারল্যান্ডকে (০) দ্রুত ফেরানোর পর যখন অস্ট্রেলিয়া তখন (১৭০/৩) সমস্যায়। কিন্তু এরপরেই হিলি এবং গার্ডনারের জুটি ম্যাচটিকে একতরফা করে দেন।
এই ম্যাচ থেকে ভারতের একমাত্র ইতিবাচক দিক স্মৃতির রানে ফেরা এবং ব্যাটারদের বল নষ্ট না করার মানসিকতা। কিন্তু বারবার প্রকাশ্যে চলে এল ভারতীয় বোলিং এবং ফিল্ডিং বিভাগের দুর্বলতা। ৩৩০ রানের পুঁজি নিয়েও ম্যাচ হারার অর্থ, বোলাররা চাপের মুহূর্তে লাইন-লেংথ ধরে রাখতে পারেননি। সামনে আরও কঠিন প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। আগামী রবিবার সেই ম্যাচে পরাজিত হলে সেমিফাইনালের পথ আরও কঠিন হবে। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের শিখরকে দলগত জয়ের চূড়ায় পৌঁছানোর চ্যালেঞ্জ এখন হরমনপ্রীত বাহিনীর সামনে।।

