এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৯ অক্টোবর : চলতি অক্টোবর মাসেই পশ্চিমবঙ্গে শুরু হচ্ছে স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা এসআইআর । অর্থাৎ মৃত ভোটার, ঠিকানা বদল, একই সময়ে দু’জায়গায় নাম এবং বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী প্রভৃতি ভুয়ো ভোটারদের নাম বাতিলের প্রক্রিয়া চলবে । কিন্তু তৃণমূলস্তরে যারা এসআইআর-এর কাজ করবেন বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও-রা । কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস সরকার যেভাবে এসআইআর-কে এনআরসি বলে মানুষকে উসকানি দিচ্ছে তাতে বিএলও-দের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে কলকাতার সল্টলেকে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন,’ইডি, সিবিআই, এনআইএ, আইটি-এর মত বা জেপি নাড্ডা থেকে শুভেন্দু অধিকারী হয়ে খগেন মুর্মু পর্যন্ত, জনপ্রতিনিধি ও জাতীয়-রাজ্যস্তরের নেতাদের উপর যেভাবে আক্রমণ হচ্ছে বিএলও-দের উপরেও সেভাবে আক্রমণের আশঙ্কা করছি আমরা ৷’ তিনি বলেন,’ইলেকশন কমিশনকে সংবিধানের ২২৪ থেকে ২২৯ ধারায় সব ক্ষমতা দিয়ে গেছেন বাবাসাহেব আম্বেদকর । তারপরেও বিএলও-রা যদি আক্রান্ত হয় তাহলে তার দায় নির্বাচন কমিশনের উপর বর্তাবে ।’ সূত্রের খবর, আজকের কমিশনের বৈঠকে ইঙ্গিত মিলেছে যে ১৫ অক্টোবরের পরই এরাজ্যে বাংলায় এসআইআর হতে পারে। সেই কারণে কমিশন চাইছে, বিজ্ঞপ্তির আগেই এনুমারেশন ফর্ম ছাপিয়ে রাখা হোক,যাতে বিহারের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়। সেই বিষয়টি বুধবারই স্পষ্ট করে দিয়েছে কমিশন। কারণ বিহারে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর এনুমারেশন ফর্ম ছাপানোর কাজ শুরু হয়। তাতে সমস্যায় পড়তে হয় কমিশনকে। যাবতীয় কাজ ১১-১৫ অক্টোবর শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে বারবার কর্তারা ১১-১৫ অক্টোবর এই সময়সীমার উল্লেখ করেছেন। তাতেই মনে করা হচ্ছে, ১৫ অক্টোবরের পরই বাংলায় এসআইআর হতে পারে।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,এসআইআর শেষ হওয়ার পরে প্রথমে ড্রাফ্ট ভোটার লিস্ট বেরোবে । ক্লেম, অবজেকশনের জন্য ১৫ দিন বা একমাস থাকে । তারপরে একটা ফাইনাল ভোটার লিস্ট বের হয় । ফাইনাল ভোটার লিস্ট বের হওয়ার পরে যেকোনো সময় নির্বাচন কমিশন বর্তমান রাজ্য সরকারের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন করতে পারে ।’
তিনি বলেন,’পশ্চিমবঙ্গের ২০২১ সালের ৫ই মে সরকার গঠন হয়েছিল । ভোট ঘোষণা হয়েছিল ২৬ শে ফেব্রুয়ারি । বিহারে যেমন ২২-শে নভেম্বর সরকারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে । এর মধ্যে নির্বাচিত সরকারকে দায়িত্ব হস্তান্তর করা সাংবিধানিক নিয়ম । আর নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে তার অন্তত এক সপ্তাহ আগে পুরো প্রক্রিয়াটা শেষ করা । তাই নির্বাচন কমিশনক ৬ ও ১১ ভোট, ১৪ নভেম্বর গননা এবং ১৬ নভেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটা শেষ করে নোটিফিকেশন জারি করতে চাইছে ।’
তিনি বলেন,’পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও ২০ থেকে ২৫ শে এপ্রিলের মধ্যে সমগ্র প্রক্রিয়াটা না শেষ করলে ৫ তারিখ থেকে রাষ্ট্রপতি শাসন অটোমেটিক হয়ে যাবে এবং রাজ্যপালের হাতে শাসন ক্ষমতা চলে যাবে । তাই এখানে এসআইআর হওয়ার পরেই ২,৩ বা ৬ মাসের কোন গল্প নেই । প্রথম কথা হচ্ছে, নির্বাচনের আগে স্পেশাল রিভিশন হচ্ছে। ২০০২ সালেও হয়েছিল, আবার হচ্ছে । আমাদের এখানে জানুয়ারি মাসে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হয়। এবারে এস আই আর হওয়ার কারণে আগে পরে হতে পারে । বিএলও-দের কাজের পরিবেশ এবং রাজ্য সরকার কতটা সুস্থভাবে এসআইআর করতে দেবে তার ওপর নির্ভর করছে সবকিছু ৷’।

