এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,০৮ অক্টোবর : এরাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের শাসনে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির কারনে চাকরি হারিয়ে আজ ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর পরিবার যে কি করুন পরিনতির মুখে পড়েছেন তা একমাত্র ভুক্তভোগীরাই উপলব্ধি করছেন । যারা শিক্ষা বিতরণ করে সম্মানের জীবনের স্বপ্ন দেখেছিলেন, স্বপ্ন দেখেছিলেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যোগ্য নাগরিক হিসাবে গড়ে তোলার, তারাই আজ পরিবারের অন্ন সংস্থানের জন্য বেছে নিচ্ছেন ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পেশা ৷ ওই সমস্ত চাকরিকারাদের মধ্যে অন্যতম হলেন মালদা জেলার রতুয়ার গৃহবধূ তনুশ্রী সাহা সিংহ ও তার স্বামী । রাস্তার পাশে ছোট্ট একটা দোকানে বসে বিক্রি করছেন ঝালমুড়ি, তেলেভাজা, চিপস আর বিড়ি সিগারেট । যোগ্যতার যোগ্য সম্মান না পেয়ে তারা এখন দুষছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে । তনুশ্রীদেবী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন,’আমাদের আজকের এই পরিনতির জন্য একমাত্র দায়ি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ।’
তনুশ্রীদেবী জানান, তিনি ও তার স্বামী স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০১৬ সালের প্যানেলে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন । স্বামী-স্ত্রী দুজনেই ২০১৮ সালে মালদার রতুয়ার সম্বলপুর হাইস্কুলে চাকরি পান তারা । কিন্তু দুর্নীতির কারনে গোটা প্যানেল সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে দেওয়ায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর সঙ্গে তাদের স্বামী-স্ত্রীরও চাকরি চলে যায় । তিনি আফশোস করে বলেন,রাজ্য সরকার প্রথমেই যদি যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা সর্বোচ্চ আদালতকে দিত তাহলে তাদের এই করুন পরিনতির মুখে পড়তে হত না ।
জানা গেছে,তনুশ্রীদেবীর দুই নাবালক সন্তান, বৃদ্ধা বিধবা শাশুড়িকে নিয়ে ৫ জনের সংসার । একদিকে পরিবারের দু’বেলা অন্ন সংস্থান,অন্যদিকে সন্তানদের পড়াশোনার খরচ কিভাবে চালাবেন তা ভেবেই অতান্তরে পড়েন ওই দম্পতি । শেষে তারা ধারদেনা করে মালদা শহরে রাস্তার পাশে ছোট্ট একটি দোকান ভাড়া নেন । এরপর স্বামী-স্ত্রী মিলে ঝালমুড়ি, তেলেভাজা, চিপস আর বিড়ি সিগারেট বিক্রি করতে শুরু করেন । আজ বুধবার সকালে তনুশ্রীদেবীকে দোকান চালাতে দেখা যায় । চোখেমুখে একরাশ বিষন্নতা নিয়ে তিনি বলেন,’এই ছোট্ট দোকান থেকে কত আর উপার্জন হবে ? খুব কষ্ট করেই সংসার চালাতে হচ্ছে ।’।