এইদিন ওয়েবডেস্ক,গাজিয়াবাদ,০৮ অক্টোবর : বিহার ভিত্তিক জনপ্রিয় ইউটিউবার এবং সোশ্যাল মিডিয়ার কন্টেন্ট নির্মাতা মণি মেরাজ ও উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদ-ভিত্তিক সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার বন্দনার (“ভান্নু ডি গ্রেট” নামে পরিচিত) মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল । আদিত্য বাজিরাও মিশ্র নামে একজন এক্স ব্যবহারকারী বন্দনাকে সতর্কও করে দিয়ে বলেছিলেন,’মণি মেরাজের কাছ থেকে দুরে থাকো । লাভ জিহাদ করবে । পরে পস্তানো ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না ।’ কিন্তু বন্দনা তাকে তুইতোকারি ও উপহাস করে বলেছিলেন,”তোদের খালি হিন্দু- মুসলিম । তোরা অন্ধ ভক্ত । আমার ১৮+ বয়স । আমাকে বোঝাতে আসিস না । বরঞ্চ তোর নিজের বোনকে লাভ জিহাদ থেকে বাঁচা ।’ এমনকি ওই তরুনী থানায় এফআইআর দায়ের করার হুমকি পর্যন্ত দেয় ।’
কিন্তু প্রতারিত হয়ে পরে বন্দনা তার স্বামী মেরাজের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ দায়ের করেছেন। বন্দনা অভিযোগ করেছেন যে মণি মেরাজ নিজেকে হিন্দু বলে দাবি করে তার সাথে বন্ধুত্ব করেছিল, তারপর প্রতারণা করেছিলেন, শারিরীক সম্পর্ক করেছিল এবং জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করেছিল । মণি মেরাজের আসল নাম মহম্মদ মেরাজ।’
এদিকে অভিযোগ উঠছে যে তরুনীর এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা । কারন সে জেনেশুনেই এই সম্পর্ক তৈরি করেছিল । এখন প্রতারিত হয়ে ভিকটম কার্ড খেলে ঘটনাটিকে “লাভ জিহাদ” বলে অবিহিত করে তার স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলছেন বলে অভিযোগ উঠছে । যাই হোক, ওই মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে তার স্বামী মহম্মদ মেরাজকে পাটনার আনিসাবাদ থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, মণি মেরাজ এবং বন্দনার প্রথম দেখা হয়েছিল ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে দিল্লিতে। বন্দনা অভিযোগ করেছেন যে মেরাজ নিজেকে একজন সনাতন হিন্দু হিসেবে পরিচয় করিয়েছিলেন, একটি হাতে তাগা পরতেন এবং নিজেকে হিন্দু বলে পরিচয় দিতেন। তাদের বন্ধুত্ব যত গড়াচ্ছিল, তারা একসাথে কাজ করতে শুরু করে।
একদিন মেরাজ তাকে গাজিয়াবাদে তার ফ্ল্যাটে নিয়ে যায়, যেখানে সে ঠান্ডা পানীয় মিশিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। পরে সে ক্ষমা চেয়ে তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেয়, কিন্তু বন্দনা গর্ভবতী হয়ে পড়লে, সে তাকে গর্ভপাত করতে বাধ্য করে। বন্দনা বলেন যে দুই বছর পর মেরাজ তাকে বিয়ের অজুহাতে বিহারে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তিনি জানতে পারেন যে মেরাজ মুসলিম এবং ইতিমধ্যেই বিবাহিত। যখন তিনি প্রতিবাদ করেন, তখন বন্দনাকে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়, মারধর করা হয় এবং তার ফোন কেড়ে নেওয়া হয়।
তাকে লাঞ্ছিত করা হয়, গরুর মাংস খেতে বাধ্য করা হয় এবং কলমা পাঠ করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ না করলে তাকে মৃত্যুর হুমকি দেওয়া হয়। এরপর ২০২৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর কোনভাবে বন্দনা মেরাজের বাড়ি থেকে পালিয়ে গাজিয়াবাদে ফিরে আসেন। তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন, যার পর মণি মেরাজকে গ্রেপ্তার করে ট্রানজিট রিমান্ডে গাজিয়াবাদে আনা হয়।
তদন্তে জানা গেছে যে মনি মেরাজের আসল নাম মহম্মদ মেরাজ। তিনি আগে তার ভাইয়ের মুরগির দোকানে কাজ করতেন। এরপর টিকটকে অশ্লীল ভিডিও তৈরি করে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। টিকটক নিষিদ্ধ হওয়ার পর, তিনি ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করতে থাকেন। পুলিশের মতে, মেরাজের সোশ্যাল মিডিয়ায় ১০০ টিরও বেশি অশ্লীল এবং উস্কানিমূলক ভিডিও রয়েছে। তিনি ভোজপুরি ছবিতেও অভিনয় করেছেন। পুলিশ এখন পুরো বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছে। এদিকে প্রতারিত হয়ে ধর্মনিরপেক্ষ তরুনী হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরং দলের শরণাপন্ন হন এবং সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি লাভ জিহাদের শিকার বলে দাবি করেছেন ।।
“