এইদিন ওয়েবডেস্ক,শিলিগুড়ি,০৮ অক্টোবর : জলপাইগুড়ি জেলার ডুয়ার্সের নাগরাকাটায় আক্রান্ত শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ আজ বুধবার একটি চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন । তবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি অভিযোগ করেন যে যখন ঘিরে ফেলা হয় তখন তারা তাদের গাড়ি নিরাপদে যাওয়ার রাস্তা করে দেওয়ার জন্য পুলিশের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলেন । কিন্তু পুলিশ তাদের উন্মত্ত জনতার হাতে তাদের ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায় বলে তিনি অভিযোগ করেছেন । পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, একশ শতাংশ আমি নিশ্চিত যে পরিকল্পিত ভাবেই আমাদের উপর হামলা চালানো হয়েছিল ।
সোমবার হামলার মুহুর্তের ঘটনার বিবরণ দিতে দিয়ে তিনি বলেন,’নাগরাকাটায় সাধারণ মানুষ আমাদের সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করছিলেন । কিন্তু সেই সময় মাথা ঢাকা এক মহিলা ও ফ্রেঞ্চ কাটের দাড়ির এক পুরুষ সেখানে এসে প্রথমে ঝামেলার সৃষ্টি করে । তারপরের ঘটনা আপনারা ভিডিওতে দেখেছেন ।’ তিনি আরও বলেছেন,’ওরা বলছিল দিদির সৈনিক, দিদির ভাই । আপনি কে ? আপনি তো বিজেপি করেন৷ আপনি এখান থেকে যান। যখন ওরা নাম জিজ্ঞেস করছে তখন বুঝলাম আমার উপর আক্রোশের কারনটা কি৷’ তিনি জানান, ত্রাণ দেওয়া বিষয় নয় । হামলাকারীরা বলছিল যে আপনি কেন বলেছেন যে মুখ্যমন্ত্রী কার্নিভালে নাচছেন ? তা আমার এই প্রশ্ন করার অধিকার নেই ? উনি না নেচে বসে থাকতে পারতেন ৷ কিন্তু উনি তো নেচেছেন ।
আজ বুধবার শঙ্কর ঘোষকে মাটিগাড়ার ওই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হলেও চিকিৎসকরা তাকে দু সপ্তাহ বাড়িতে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন । তিনি বলেন,’শারিরীক ব্যাথা রয়েছে । কাঁধে কিছু সমস্যা রয়েছে । বলেছে যে ২-৩ সপ্তাহ লাগবে৷ অতদিন তো আমি ঘরে বসে থাকতে পারব না । কারন বন্যাত্রাণের কাজ চলছে৷ যতদিন শরীর আছে,রাজনীতি করা ছেলে, ঠিক আছে, চলবে ।’
তবে বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে ছেড়ে দেওয়া হলেও মালদা উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । তার অবস্থা এখনো শঙ্কটজনক । খগেন মুর্মুর স্বাস্থ্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘খগেনদার অবস্থা খুবই খারাপ । ওনার মুখে বোল্ডার মারা হয়েছে । ওই বোল্ডার আমার,সি আই এস এফ বা যে কারোর লাগতে পারত৷ খগেনদার বাম দিকের চোখের নিচে হাড় ভেঙেছে । ডাক্তাররা বলেছেন যে আর এক ইঞ্চি উপরে লাগলে চোখ তো যেতোই, প্রাণহানি পর্যন্ত হতে পারত ।’ তিনি আরও বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী খগেন মুর্মুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বলছেন ডাইবেটিসের কথা । তাহলে ডাইবেটিসের জন্য কি ওনার ওখানে ফেটে গেলো ?’
শঙ্কর ঘোষ বলেন, আমাদের গাড়ির একটা কাঁচও আস্ত নেই । বেঁচে ফিরেছি এটাই অনেক৷ আমাকে যেভাবে মারা হয়েছে, আমি যদি কোনো ভাবে মাটিতে পড়ে যেতাম তাহলে ওরা আমাকে পিটিয়ে মেরে দিত ।’ এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি দাবি করেছিলেন যে দুর্যোগের দিন তিনি উত্তরবঙ্গে গেলে ত্রাণ কাজ ব্যাহত হতে পারত । এই বিষয়ে শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, ওই সময় গেলে ত্রাণে সমস্যা হত । তাহলে ময়নাগুড়িতে ঝড়ের সময় গভীর রাতে কেন এসেছিলেন ? তখন নির্বাচন ছিল বলে ? আসলে ওনার কাছে নির্বাচনটাই আসল, উত্তরবঙ্গের মানুষের জীবন নয়৷ উনি রাজনৈতিক নাটক করেন ।’।