এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৬ অক্টোবর : আজ সোমবার জলপাইগুড়ি জেলার নাগরাকাটার বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ দিতে যাওয়া মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক আহত শঙ্কর ঘোষের উপর প্রাণঘাতী হামলা চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদল । গুরুতর আহত হয়েছেন খগেন মুর্মু । দুষ্কৃতীদের ছোড়া পাথরের আঘাতে তার মাথা ফেটে যায় । আহত হন শঙ্কর ঘোষও ৷ তিনিই সাংসাদকে রক্তাক্ত ও অর্ধ অচেতন অবস্থায় মাটিগাড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন । একই হাসপাতালে ভর্তি আছেন শঙ্কর ঘোষও ৷ তার ডান হাতে গুরুতর আঘাত লেগেছে বলে জানা গেছে৷সেখানে আক্রান্ত সাংসদ ও বিধায়ককে দেখতে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য এবং মাটিগাড়ার বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মণ। তারা গোটা ঘটনা নিয়ে রাজ্যের তৃণমূল সরকার এবং দলের কড়া সমালোচনা করেন। এদিকে দলীয় সাংসদ ও বিধায়কের উপর হামলাকারী “তৃণমূলের বিশেষ সম্প্রদায়ের উগ্র চরমপন্থী”দের নাম প্রকাশ্যে আনলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । ছবিসহ হামলাকারী চার দুষ্কৃতীর নাম প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন তিনি । তার উল্লিখিত ওই চার হামলাকারী হল : রমজান আলী,সৈফুল হক,আইনুল আনসারি ও পিঙ্কি খাতুন ।
শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,তৃণমূলের সেই এক ‘সন্ত্রাসবাদ মডেল’, দেখুন কাদের ব্যবহার করা হয় আজকের নাগরাকাটায় সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষদের ওপর এই নির্মম প্রাণঘাতী আক্রমণ ঘটাতে।ঠিক যেই সব দুর্বৃত্তদের এনেছিল কোচবিহারের খাগড়াবাড়িতে আমার ওপর আক্রমণ করতে, সেই ভাবেই এখানেও একই ভাবে সেই ‘বিশেষ সম্প্রদায়ের’ কিছু উচ্ছৃঙ্খল আইন অমান্যকারীদের পরিকল্পিত ভাবে জড়ো করা হয় এই ঘৃণ্য অপরাধ-অরাজকতা ঘটাতে।এরা নিজেরাই আতঙ্কিত যে মমতা সরকার চলে গেলে এদের বেআইনি কার্যকলাপ বন্ধ হয়ে যাবে, আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আতঙ্কিত যে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হলে এদের খোলা ছাড় দিতে হবে নয় তো এরাই কোনো দিন ঘটী উল্টে দিবে।এরা একে অপরের পরিপূরক তাই রাজ্যে আইনের শাসন বিলুপ্ত হয়ে গেছে…।’
পাশাপাশি তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের ভিডিও পোস্টও করেছেন । খগেন মুর্মুর ভিডিও-তে তিনি লিখেছেন,’আজ নাগরাকাটায় আমাদের সাংসদ শ্রী খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক ডঃ শঙ্কর ঘোষের উপর নৃশংস হামলায় তারা গুরুতর আহত হয়েছেন। উত্তরবঙ্গে বন্যার্তদের ত্রাণ সরবরাহ করতে যাওয়ার সময় তৃণমূল কংগ্রেসের গুন্ডাদের এই কাপুরুষোচিত কাজটি ঘটে। আমি ঈশ্বরের কাছে তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। আমি আগামীকাল তাদের সুস্থতার খোঁজখবর নিতে এবং আমার সহায়তা প্রদানের জন্য তাদের সাথে দেখা করব।’
প্রসঙ্গত,আজ নাগরাকাটায় বন্যা কবলিতদের খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল । নাগরাকাটার আগে তারা দু’দলে ভাগ হয়ে যান । তার মধ্যে একটি দলে ছিলেন শিলিগুড়ির বিধায়ক শংকর ঘোষ এবং মালদহ উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু। তারা নাগরাকাটার বামনডাঙায় আসতেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের একটা দল নিরাপত্তা রক্ষীদের সামনেই ইটবৃষ্টি ও লাঠি নিয়ে হামলা চালায় । সেই সাথে বিধায়ক ও সাংসদকে পিছন থেকে ধাক্কাধাক্কি ও জুতো পর্যন্ত মারে ৷ সেই সময় লাঠি বা ইঁটের আঘাতে মাথা ফাটে সাংসদ খগেন মুর্মুর ।
মালদা জুড়ে বিজেপির পথ অবরোধ ও বিক্ষোভ
বিজেপির উত্তর মালদার সাংসদ খগেন মুর্ম আক্রান্ত হওয়ার প্রতিবাদে মালদার চাঁচলে আজ সোমবার সন্ধ্যায় পথে নামে বিজেপি। বিজেপি নেতাকর্মীরা চাঁচলের রাজপথ অবরোধ করে, রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় । নেতৃত্ব দেন বিজেপি নেতা রতন দাস, প্রশান্ত পাল সহ অন্যান্যরা।মালদার হবিবপুর ব্লকের আইহোতে জোরদার আন্দোলন করল বিজেপি। বিজেপি নেতাকর্মীরা মিলে আইহো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পথ অবরোধ করে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন ।
মালদার বামনগোলা ব্লকের বামনগোলার পাকুয়াহাটি এলাকায় বিজেপি নেতাকর্মীরা মিলে পথ অবরোধ করে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন । মালদার গাজোলে হল পথ অবরোধ। গাজোলের বামনগোলা মোড়ে ৫১২নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিলেন বিজেপির উত্তর মালদার সভাপতি প্রতাপ সিং, গাজোলের বিজেপি বিধায়ক চিন্ময় দেব বর্মণ, বিজেপি নেতা নিহার রঞ্জন মন্ডল সহ অন্যান্যরা।
পুরাতন মালদায় বিজেপি নেতাকর্মীদের জোরদার আন্দোলন করেন । ধিক্কার মিছিল করে, পথ অবরোধের মাধ্যমে মঙ্গলবাড়িতে তুমুল বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা । নেতৃত্ব দেন বিজেপির উত্তর মালদার সভাপতি প্রতাপ সিংহ, মালদা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক গোপাল চন্দ্র সাহা, বিজেপি নেতা শ্যামচাঁদ ঘোষ, স্নেহাংশু ভট্টাচার্য সহ অন্যান্যরা । মালদা শহরেও পথ অবরোধ করে বিজেপি৷।