এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৫ অক্টোবর : দুর্গাপূজার মুখেই প্রবল বৃষ্টিপাতে কলকাতা প্লাবিত হওয়ায় বিহার ও ঝাড়খণ্ড সরকারের বিরুদ্ধে “জল ঠেলে দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । এবারে শনিবার রাতে দার্জিলিংয়ে প্রবল বর্ষণে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার ঘটনাতেও তিনি ফের ‘সিকিম ও ভুটান থেকে নদীর জল’ আসাকে দায়ি করলেন তিনি । মমতা সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম এক্স ও ফেসবুকে লিখেছেন, ‘উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যাপ্লাবিত হওয়ায় আমি গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। কাল রাত্রে উত্তরবঙ্গে কয়েক ঘন্টার বিপুল বৃষ্টি হওয়ায় এবং বাইরে থেকে নদীর জল আমাদের রাজ্যে বিপুল পরিমাণ এসে পড়ায় বিশেষত উত্তরবঙ্গে উদ্বেগজনক বন্যা পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে।’
তিনি আরও লিখেছেন,’গতকাল রাত্রে উত্তরবঙ্গে ১২ ঘন্টায় ৩০০ মিলিমিটারেরও বেশি হঠাৎ বৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি সংকোশ নদী এবং সাধারণভাবে সিকিম ও ভুটান থেকে বিভিন্ন নদীর বিপুল পরিমাণ জল এ রাজ্যে চলে আসায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়।
অকস্মাৎ এই বিপুল বৃষ্টিতে এবং নদীর বন্যায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমাদের কয়েকজন ভাই- বোন আমরা হারিয়েছি বলে খবর এসেছে। এই দু:সংবাদে আমি বিপুলভাবে মর্মাহত। প্রত্যেক মৃত ব্যক্তির পরিবারবর্গকে আমি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি। প্রত্যেক পরিবারের কাছে আমাদের সহায়তা অবিলম্বে পৌঁছে যাবে।’
মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন,’জলের ভয়ংকর তোড়ে দুটি লোহার সেতু ভেঙ্গে গেছে, প্রচুর রাস্তার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে, বিশেষত মিরিক, দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, মাটিগাড়া এবং আলিপুরদুয়ার থেকে আমাদের কাছে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির খবর আসছে।আমি গতকাল রাত থেকেই পরিস্থিতির উপরে টানা নজর রেখেছি। ইতিমধ্যেই মুখ্য সচিব, পুলিশের ডিজি, উত্তরবঙ্গের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মিটিং করেছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে সেই মিটিংয়ে ছিলেন গৌতম দেব ও অনীক থাপা। আমি সর্বক্ষণ সকলের সঙ্গে যোগাযোগে আছি এবং এই সূত্রে আগামীকাল নিজেই মুখ্যসচিব-কে নিয়ে উত্তরবঙ্গ যাচ্ছি।’
তিনি জানিয়েছেন,’ইতিমধ্যে উত্তরবঙ্গে পর্যটকদের প্রতি আমাদের পরামর্শ, যে যেখানে আছেন সেখানেই থাকুন। আমাদের পুলিশ আপনাদের উদ্ধার করে নেবে। এই উদ্ধার সংক্রান্ত খরচ আমাদের এবং পর্যটকদের এই বাবদ উদ্বিগ্ন না হবার জন্য অনুরোধ করছি। প্রাকৃতিক অবস্থানের জন্য মিরিকের মতো কিছু কিছু জায়গা বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যদিও আরো অনেক এলাকা আমাদের নজরে আছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে সব খবর রাখছি, প্রয়োজনমতো নির্দেশ দিচ্ছি এবং পরিস্থিতি মোকাবিলার ব্যবস্থা করছি। আমাদের অফিসার ও পুলিশ সর্বত্র ও সকল ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের কাছে সকল সহায়তা নিয়ে পৌঁছে যাবে। রাজ্য সদর দপ্তর এবং জেলাগুলি ২৪ ঘন্টা কন্ট্রোল রুম খুলে রাখছে।যে কোন প্রয়োজনে আমাদের নবান্নে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করুন।’ পাশাপাশি মমতা ব্যানার্জি সাহায্যের জন্য কয়েকটি নম্বরও দিয়েছেন : যোগাযোগের ফোন নম্বর ০০৯১- ২২১৪-৩৫২৬/ ০০৯১- ২২৫৩-৫১৮৫ । টোল ফ্রি-৯১-৮৬৯৭৯-৮১০৭০ ১০৭০৷
এদিকে জানা গেছে যে ভেঙে পড়া দুধিয়া সেতুটি রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে রাজ্যের পিডবলুডি-এর অধীনে । ২০১৮ ও ২০২২ সালে সালে সেতুটির সংস্কার হয় । তারপরেও সেতুটি ভেঙে পড়ায় প্রশ্ন উঠছে ।।