এইদিন ওয়েবডেস্ক,বেঙ্গালুরু,০৩ অক্টোবর : বেঙ্গালুরুর এক মহিলা তার স্বামীর বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন । মহিলার অভিযোগ যে তার স্বামী সৈয়দ ইনামুল হক তাদের যৌন সঙ্গমের ভিডিও গোপনে রেকর্ড করে বন্ধুদের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাচ্ছিল । এমনকি বন্ধুদের সাথে সঙ্গমের জন্য তার সাথে চাপ সৃষ্টি করছিল । কথা না মানলে অশ্লীল ভিডিওগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করার হুমকি দিচ্ছিল । তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে তার স্বামীর আরও ১৯ জন মহিলার সাথে সম্পর্ক আছে । বেঙ্গালুরুর পুট্টেনহাল্লি থানায় এনিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সৈয়দ ইনামুল হক এবং তার পরিবারের অনান্য লোকজনদের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা হয়েছে। স্বামী সৈয়দের বিরুদ্ধে এখন যৌতুক নিষিদ্ধকরণ আইন এবং অন্যান্য ধারায় তার স্ত্রীকে “শারীরিক ও মানসিকভাবে হয়রানি” করার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ৩৫ বছর বয়সী ওই মহিলা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে সৈয়দ ইনাম উল হকের সাথে বাগদান করেন এবং একই বছরের ডিসেম্বরে মুসলিম রীতি অনুসারে বিয়ে করেন। সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলতে গিয়ে ভুক্তভোগী বলেন,’১৫ ডিসেম্বর একজন বিবাহ দালালের মাধ্যমে আমি সৈয়দ ইনামুলের সাথে বিয়ে করি এবং রিসেপশনের রাতেই সে আমাকে তালাক দেয়। এরপর, আমাকে মারধর করে এবং ব্যক্তিগত ভিডিও রেকর্ড করে বন্ধুদের কাছে পাঠায়।’ তিনি জানান,বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে একটি দুই চাকার গাড়ি এবং ৩৪০ গ্রাম সোনার অলঙ্কার দেওয়া হয়। কিন্তু বিয়ের পরপরই তার স্বামী প্রকাশ করে যে সে ইতিমধ্যেই বিবাহিত। আমি তার দ্বিতীয় স্ত্রী। শুধু তাই নয়, ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন যে তার অন্য আরও ১৯ জন মহিলাদের সাথে সম্পর্ক ছিল।
আরও মর্মান্তিক বিষয় হল, তার স্বামী সৈয়দ, অর্থের বিনিময়ে তাকে বিদেশে “তার বন্ধুবান্ধব এবং সহযোগীদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের” জন্য চাপ দিচ্ছিল । যখন তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন, তখন তিনি তার সাথে যৌন সম্পর্কের ছবি এবং ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করার হুমকি দেয় । তার স্বামী তাকে প্রকাশ্য স্থানে, হোটেলে এমনকি তার বাবা-মায়ের বাড়িতেও নির্যাতন করত । স্বামী তাকে তার বাবা-মায়ের সাথে দেখা করতে বাধা দিত বলে ভুক্তভোগীর অভিযোগে বলা হয়েছে।
পুলিশের কাছে অভিযোগে মহিলা জানিয়েছেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে, একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে, স্বামীর বোনের ছেলেও তার সাথে জোর করে যৌন মিলন করেছিল। যদিও তিনি তার স্বামীকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন, তবুও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরে, তার স্বামী তাকে ফ্ল্যাট কেনার জন্য তার গয়না বিক্রি করার জন্য চাপ দেয় । যখন তিনি তা করতে অস্বীকৃতি জানান, তখন তার স্বামী তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে ।
মহিলা জানিয়েছেন,চলতি বছরের জুন মাস থেকে তারা বেঙ্গালুরুর বিনায়ক নগরের একটি বাড়িতে বসবাস করছিলেন, যেখানে তার স্বামী শোবার ঘরে একটি গোপন ক্যামেরা স্থাপন করেছিল এবং তার স্বামীর সাথে তার ব্যক্তিগত মুহূর্তগুলি তার সম্মতি ছাড়াই রেকর্ড করেছিল । ২১শে সেপ্টেম্বর, তার স্বামী তার সাথে ঝগড়া করে এবং গভীর রাতে তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়৷ তিনি বলেন, এর পরেই আমি আমার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির আরও তিন সদস্যের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশের কাছে আবেদন করি, ভুক্তভোগী মহিলার অভিযোগ।
এই বিষয়ে তথ্য প্রদান করে পুত্তেনাহাল্লি থানার একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে, আমরা ৩০ সেপ্টেম্বর যৌতুক নিষিদ্ধকরণ আইনের প্রাসঙ্গিক ধারা এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫১(২) (অপরাধমূলক ভয় দেখানো), ৪৯৮এ (স্বামী বা স্বামীর আত্মীয়ের দ্বারা একজন মহিলাকে নিষ্ঠুরতার শিকার করা), ৪১৫ (প্রতারণা), ৩৫৪সি এবং ৩৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে এবং পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।।