এইদিন বিনোদন ডেস্ক,০২ অক্টোবর : প্রখ্যাত ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীতশিল্পী পণ্ডিত ছান্নুলাল মিশ্র আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৪:১৫ মিনিটে বারাণসীতে ৯১ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন । তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন এবং বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেসে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে সমগ্র সঙ্গীত জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে । আজ বারাণসীর পবিত্র মণিকর্ণিকা ঘাটে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
পণ্ডিত ছান্নুলাল মিশ্রের জন্ম ১৯৩৬ সালের ৩ আগস্ট উত্তর প্রদেশের আজমগড় জেলার হরিহরপুর গ্রামে। ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীতের সংস্কৃতি ছিল তাঁর রক্তে। প্রথমে তিনি তাঁর বাবা পণ্ডিত বদ্রীপ্রসাদ মিশ্রের কাছ থেকে সঙ্গীতের তালিম নেন এবং পরে কিরানা ঘরানার ওস্তাদ আব্দুল গণি খান সাহেবের কাছ থেকে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন । পণ্ডিত ছান্নুলাল মিশ্র খেয়াল, ঠুমরি, দাদরা, কাজরি, চৈত এবং ভক্তিমূলক ভজনের জন্য পরিচিত ছিলেন। তিনি বিশেষ করে পূর্ব ঠুমরি ধারাকে বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত করে তুলেছিলেন। তাঁর কণ্ঠ ছিল গভীর এবং আবেগের স্পর্শ ছিল। তিনি তুলসীদাসের রামচরিতমানস গ্রন্থ, কবীরের ভজন এবং লোকসঙ্গীতের রেকর্ডিংও করেছিলেন, যা আজও শ্রোতাদের নাড়া দেয়।
২০১১ সালে প্রকাশ ঝা-এর চলচ্চিত্র “আরক্ষণ”-এ দুটি সিরিয়াল শাস্ত্রীয় ভিত্তিক গান “সান আলবেলি” এবং “কৌন সি দোর”-এ তার প্রাণময় গান গেয়ে শ্রোতাদের মন জয় করেছিলেন তিনি । ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য পণ্ডিত ছান্নুলাল মিশ্র বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছিলেন। তিনি ২০১০ সালে পদ্মভূষণ এবং ২০২০ সালে পদ্মবিভূষণে ভূষিত হন। এছাড়া সুর সিংহার সংসদের শিরোমণি পুরস্কার (মুম্বাই), উত্তরপ্রদেশ সঙ্গীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার, বিহার সঙ্গীত শিরোমণি পুরস্কার এবং সঙ্গীত নাটক আকাদেমি ফেলোশিপ দিয়ে তাকে সম্মানিত করা হয় ।
কোভিড-১৯ মহামারীর সময় পণ্ডিত ছান্নুলাল মিশ্রও ব্যক্তিগত শোকের মধ্য দিয়ে গিয়েছিলেন। ২০২১ সালে, তাঁর স্ত্রী মানিক রানী মিশ্র এবং কন্যা সঙ্গীতা মিশ্র কোভিডের কারণে মারা যান। পরপর স্ত্রী ও কন্যাকে হারিয়ে তিনি গভীরভাবে মর্মাহত করেছিল, তবুও তিনি কখনও সঙ্গীতের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ভাঙেননি। পণ্ডিত ছান্নুলাল মিশ্র কেবল একজন সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন না, তিনি বারাণসীর সাংস্কৃতিক পরিচয়ও ছিলেন।।