এইদিন আন্তর্জাতিক ডেস্ক,০২ অক্টোবর : ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ভীষণ ষড়যন্ত্র শুরু করেছে ইউরোপের কিছু দেশ। সুইডেন,ফ্রান্স প্রভৃতি দেশগুলির প্রত্যক্ষ ইন্ধনে ত্রাণের নামে বিশাল “সুমুদ ফ্লোটিলার নৌবহর” গাজার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে৷ ইতিমধ্যে সুমুদ ফ্লোটিলার ১৩টি জাহাজ আটক করেছে ইসরায়েল৷ কিন্তু এখনো গাজার দিকে আরো অন্তত ৪০টি জাহাজ এগিয়ে চলেছেন। সমগ্র ষড়যন্ত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে হামাসপন্থী সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থানবার্গ (Greta Thunberg)৷ বাইশ বর্ষীয় থানবার্গকে অত্যন্ত বিপজ্জনক আখ্যা দিয়েছেন ব্লিটজ পত্রিকার সম্পাদক সালহা উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী । তিনি বলেছেন,’গ্রেটা থানবার্গ হামাসপন্থী। মানবিক সাহায্য সরবরাহের আড়ালে, তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছিল। আটককৃত প্রতিটি নৈরাজ্যবাদীকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্ত করা উচিত।’
এদিকে ত্রাণের নামে “সুমুদ ফ্লোটিলার নৌবহর” গাজার উদ্দেশ্যে পাঠানোর তীব্র সমালোচনা করেছে ইসরায়েল ৷ ইসরায়েলের বিদেশমন্ত্রক টুইট করেছে, “হামাস-সুমুদ নৌবহরের একমাত্র উদ্দেশ্য হল উস্কানি। ইসরায়েল,ইতালি, গ্রীস এবং জেরুজালেমের ল্যাটিন প্যাট্রিয়ার্কেট সকলেই গাজায় তাদের যেকোনো সাহায্য শান্তিপূর্ণভাবে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ফ্লোটিলাকে একটি উপায় প্রস্তাব করেছে এবং এখনও দিচ্ছে। কিন্তু নৌবহরটি প্রত্যাখ্যান করেছে কারণ তারা সাহায্যে আগ্রহী নয়, বরং উস্কানিতে আগ্রহী। ইসরায়েলি নৌবাহিনী হামাস-সুমুদ নৌবহরের সাথে যোগাযোগ করেছে এবং তাদের পথ পরিবর্তন করতে বলেছে। ইসরায়েল নৌবহরটিকে জানিয়েছে যে তারা একটি সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্রের দিকে এগিয়ে আসছে এবং আইনত নৌ অবরোধ লঙ্ঘন করছে। ইসরায়েল নিরাপদ চ্যানেলের মাধ্যমে গাজায় শান্তিপূর্ণভাবে যেকোনো সাহায্য স্থানান্তরের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করেছে।”আর একটি টুইটে বলা হয়েছে,’ইতিমধ্যেই হামাস-সুমুদ ফ্লোটিলার বেশ কয়েকটি জাহাজ নিরাপদে থামানো হয়েছে এবং তাদের যাত্রীদের ইসরায়েলি বন্দরে স্থানান্তর করা হচ্ছে। গ্রেটা এবং তার বন্ধুরা নিরাপদ এবং সুস্থ আছেন।’
কিন্তু গাজামুখী ত্রাণবাহী হামাস-সুমুদ ফ্লোটিলার ১৩টি জাহাজ আটকের পরও উপত্যকার দিকে এগিয়ে চলেছে বহরের আরো অন্তত ৪০টি জাহাজ।
এর আগে গাজা অভিমুখী নৌবহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলাকে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ঘিরে ফেলে ইসরাইলি যুদ্ধজাহাজ। বুধবার রাতে আলমা, আদারা ও সিরিয়াস নামের তিনটি জাহাজে ইসরাইলি সেনারা উঠে পড়ে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম মিডেল ইস্ট আই।
অন্যদিকে, ফ্লোটিলার আয়োজকদের উদ্ধৃতি দিয়ে আল আরাবিয়ার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গাজায় সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা তাদের জাহাজগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
গাজা অভিমুখী এই মিশনের আয়োজকরা বলেছেন, ইসরাইলি দুটি ‘যুদ্ধজাহাজ’ দ্রুতগতিতে এসে বহরের তিন জাহাজ আলমা, আদারা ও সিরিয়াসকে ঘিরে ফেলে। এসময় সবধরনের নেভিগেশন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে যায়। জাহাজে অবস্থানরত আয়োজক থিয়াগো আভিলা এক সাংবাদিক সম্মেলনে যোগাযোগ ব্যবস্থা অচলের ঘটনাকে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর ‘সাইবার হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন।
মিডেল ইস্ট আই জানিয়েছে, আদারা নামে জাহাজে ইসরাইলি সেনারা ওঠার পর সেটিতে থাকা অধিকারকর্মীদের তাদের মোবাইল ফোন জলে ফেলে দিতে দেখা গেছে৷ তবে তারা ইচ্ছা করে মোবাইল ফোন ফেলে দিয়েছেন নাকি তাদের বাধ্য করা হয়েছে সেটি নিশ্চিত নয়। সুমুদ ফ্লোটিলার অফিসিয়াল চ্যানেলগুলোর একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাহাজগুলোকে অবৈধভাবে আটক করা হচ্ছে। ক্যামেরা অফলাইনে আছে এবং সামরিক কর্মীরা জাহাজে উঠেছে । আমরা জাহাজে থাকা সকল অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা এবং অবস্থা নিশ্চিত করার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছি।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নামের এই নৌবহরে বেসামরিক নৌকা ও জাহাজ রয়েছে। এসব নৌযানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ৫০০ জন নাগরিক রয়েছে । তাদের মধ্যে সংসদ সদস্য, আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মী এবং সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও রয়েছেন । বামপন্থী মনস্ক ওই সমস্ত ব্যক্তিরা বরাবরই ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাসকে সমর্থন জানিয়ে আসছে৷ আর এটাকেই কাজে লাগাচ্ছে আরব দেশগুলি ।।