এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,২৮ সেপ্টেম্বর : নিজেদেরকে সমাজ সংস্কারক আখ্যা দিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে ধর্মীয় উন্মাদনার সৃষ্টি করে রেখেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মাহবুবুর রহমান নামে এক মৌলবাদী ও তার দল৷ তাদের মূল লক্ষ্য হল হিন্দু সাধুসন্ন্যাসী । ধর্মীয় রীতি মেনে যারা মাথায় জটা ও গোঁফদাড়ি রাখে তাদেরকে মূলত নিশানা করে ওই দলটি৷ পরিচ্ছন্নার নামে সাধুসন্তদের জটা ও চুল কেটে দিয়ে নিজেদের ধর্মের এজেন্ডা চালিয়ে আসছে ওই ইসলামিক গ্যাংটি । সম্প্রতি ঢাকার এমনই একটা ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় । তাদের অশুভ উদ্দেশ্যে টের পেয়ে মাহবুবুর রহমানদের নিজের সম্প্রদায়ের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ নিন্দায় সরব হয়েছেন ।
জানা গেছে,ঢাকার পোস্তগোলা মহাশ্মশানে মৃতদেহ সংস্কার করা লিটন সাধু নামে এক সন্ন্যাসী জিহাদি মাহবুবুরদের সর্বশেষ শিকার হয়েছেন। দেবী কালির ভক্ত লিটন সাধু ঢাকার সদরঘাট এলাকায় ফল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন । ঘটনার দিন মাহবুবুর রহমান ও তার তিন সহযোগী মিলে প্রকাশ্য দিবালোকে বাজারের মধ্যে লিটন সাধুকে ঘিরে ধরে । এরপর একটি মেশিন দিয়ে তার জটা ও দাড়িগোঁফ কেটে দুই হাতে প্রায় ৫০ ভরি ওজনের দুটি রুপোর বালা খুলে নিয়ে দলটি চম্পট দেয় । বালাগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা। গত কয়েক দিন ধরেই সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে ।
জানা গেছে,মাহবুবুর রহমান ওরফে মাহবুব সরকার), কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বাইশগাঁও গ্রামে বাসিন্দা সামছুল আলমের ছেলে ।সে নিজেকে “মাহবুব ক্রিয়েশন ফোর” নামের একটি সংগঠনের উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচয় দেয় । তারা মানুষকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার নাম করে সমাজে সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে । কারন ওই দলটির নিশানায় শুধু হিন্দু সাধুসন্ত ৷ কিন্তু ঘুণাক্ষরেও তারা নিজের সম্প্রদায়ের মৌলবীদের দাড়িগোঁফ কেটে পরিচ্ছন্ন থাকার বার্তা দেয় না । লিটন সাধুর আগে আরও এক সাধুর সঙ্গে এই প্রকার বর্বরতা করেছিল মাহবুবুর রহমানরা৷ তবে সেই সাধুর কাছে কোনো টাকাপয়সা বা গহনা না থাকায় তারা কিছু লুটপাট করতে সক্ষম হয়নি ।
লিটন সাধু জানান, তিনি প্রাণপণ চেষ্টা করেও নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি। হঠাৎ করে কয়েকজন এসে তাকে ঘিরে ফেলে এবং জোরপূর্বক চুল-জটা কেটে হাতের বালা খুলে নিয়ে চলে যায়। এই ঘটনার পর তিনি প্রচণ্ড মানসিক আঘাত পেয়েছেন এবং আইনগত সহায়তা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, আধ্যাত্মিক ও সামাজিকভাবে পরিচিত একজন মানুষের সঙ্গে এ ধরনের বর্বর আচরণ উদ্বেগজনক। তারা ঘটনার দ্রুত তদন্ত এবং অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। তবে, এই ঘটনায় এখনো কোনো মামলা বা পুলিশি পদক্ষেপের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ভুক্তভোগী এবং স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন।।