এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২০ সেপ্টেম্বর : আজ শনিবার সন্ধ্যায় কলকাতার হাতিবাগান সর্বজনীন, শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব,টালা প্রত্যয় প্রভৃতি দুর্গাপুজোর মণ্ডপগুলির উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । কিন্তু পিতৃপক্ষে দুর্গাপুজোর মণ্ডপের উদ্বোধনের পাশাপাশি সেই সময় মমতা ব্যানার্জি তার মাথা নিজের শাড়ির আঁচল ঢেকে রাখায় প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তাঁর দাবি যে ৩২-৩৩ শতাংশ ভোটব্যাংক একত্রিত করতেই ‘হিজাব’ পরে মমতা ব্যানার্জি নিজেকে ‘প্রো মুসলিম’ বলে বার্তা দিয়েছেন ।
কলকাতার ৬ মুরলীধর সেন লেনে রাজ্য বিজেপি কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী এই বিষয়ে বলেছেন,’অত্যন্ত অন্যায় । একটু আগে অতীন ঘোষের পুজোতে গেছেন এবং একটা বিশেষ সম্প্রদায়কে বার্তা দেয়ার জন্য হিজাব পড়েছেন ।’ এরপর নিজের রুমাল বের করে হিজাব পরার মত মাথায় লাগিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’এইভাবে তিনি পুজোর উদ্বোধন করেছেন ।’তিনি বলেন, সরাসরি এটা হিন্দুর আস্থা এবং রীতিনীতিতে আঘাত । পিতৃপক্ষের আজকে শেষ দিন । হিন্দুদের যাদের পিতা মাতা গত হয়েছেন তারা পিণ্ড দান করেন । তাদের কাল অশৌচ থেকে মুক্তি পান । আজকে কোনভাবেই শুভ কাজ হয় না ।’
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ,’পুরো প্লান মাফিক করা হয়েছে । যেহেতু হিন্দুরা বিভক্ত, হিন্দুরা ভোট দিতে যান না, ভোট দিতে গেলেও অনেকে অনেক ভাবে ভোট দেন ভাগ করেন, আসলে এসব করে একটা বিশেষ বার্তা তিনি ৩২-৩৩ শতাংশ ভোটারদের দিচ্ছেন যে আমি সম্পূর্ণরূপে সেকুলার । আমি প্রো মুসলিম । আর এটা ওই ভোট ব্যাংকে একত্রিত করার উদ্দেশ্যে৷’ শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’যদি বৃষ্টির কারণেই হিজাব পড়তে হয় তাহলে বৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য ছাতা নিতে পারতেন ।’
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর আজকে দুর্গাপূজার মণ্ডপের উদ্বোধনের তীব্র সমালোচনা করে শুভেন্দু অধিকারী সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন,’মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার প্রমাণ করলেন যে তিনি হিন্দুদের সংস্কৃতি রীতিনীতি বিরোধী।তিনি আমাদের শাস্ত্রীয় আচার অনুষ্ঠানে ইচ্ছাকৃত ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন শুধুমাত্র তার সংকীর্ণ ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য।
হিন্দু শাস্ত্র মতে দেবপুরাণ, ঋষিপুরাণ এবং পিতৃপুরাণে পিতৃপক্ষের উল্লেখ রয়েছে যেখানে বলা আছে যে আমাদের পূর্বপুরুষেরা পিতৃপক্ষের সময় মর্ত্যে নেমে আসেন।’
তিনি লিখেছেন,’পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষ পিতৃপক্ষ নামে পরিচিত যা ভাদ্র মাসের পূর্ণিমা থেকে শুরু হয় এবং আশ্বিনের অমাবস্যায় শেষ হয়, এই ১৫ দিনটিকেই পিতৃপক্ষ বলে। পিতৃপক্ষের সময় আমরা পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তির জন্য জল দান করি, শ্রাদ্ধ ও তর্পণ করা হয়। এই ১৫ টি দিন আমদের পূর্বপুরুষদের স্মরণ ও তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্যই নিবেদিত। এই সময় আনন্দ, উৎসব করা বা নতুন কিছুর সূচনা করা কঠোর ভাবে বর্জনীয়। মহালয়ায় পিতৃপক্ষের শেষে দেবীপক্ষের সূচনা হয়, যে সময় আমরা মা দুর্গার আহ্বান করি, যা প্রকৃত অর্থেই শুভ সময়।অথচ, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী নির্লজ্জভাবে মহালয়ার ঠিক আগেই দুর্গাপুজো মণ্ডপের উদ্বোধন করলেন এবং অত্যন্ত সচেতন ভাবেই।’
শুভেন্দু অধিকারী আরও লিখেছেন,’মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে হিন্দু শাস্ত্র, পূরাণ সবকিছুকে পদদলিত করে মা দুর্গাকেও তার রাজনৈতিক প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। তিনি আমাদের সনাতনী সংস্কৃতি, আচার, চিরন্তন বিশ্বাসকে আঘাত করে চলেছেন দিনের পর দিন শুধু মাত্র তাঁর ভোটব্যাঙ্ক কে খুশী করতে।’ সবশেষে তিনি “হিন্দু_বিরোধী_মমতা” হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেছেন ।।