এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,১৮ সেপ্টেম্বর : শেখ হাসিনাকে অনৈতিকভাবে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে বাংলাদেশের দখল নিয়েছে মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে কট্টর ইসলামি দলগুলি । তারপর থেকে বাংলাদেশ জুড়ে হিন্দুদের উপর অবর্ণনীয় নির্যাতন চলছে । খুন, ধর্ষণ,ঘরবাড়ি-দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট, জমিজায়গা জবরদখল, মন্দিরে হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা লাগাতার ঘটে চলেছে বাংলাদেশে । বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে বেশী সরব হতে দেখা যায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে । কিন্তু বাংলাদেশের কট্টর ইসলামি রাজনৈতিক দল বিএনপির নেত্রী ও রমনা কালিমন্দির কমিটির সভাপতি অপর্ণা রায় দাসের কথায় বাংলাদেশে আদপেই হিন্দু নির্যাতন হয় না । উলটে বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতন নিয়ে সরব হওয়ায় তিনি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে “কুকুর” বলেও গালাগালি করেছেন । এদিকে জানা যাচ্ছে যে বাংলাদেশে ফের অসম্পূর্ণ দুর্গা প্রতিমায় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে ।
গতকাল রমনা কালিমন্দির কমিটির একটা জমায়েতে অপর্ণা রায় দাসকে হ্যান্ড মাইকে বলতে শোনা গেছে,ভারত থেকে শুভেন্দু বারবার বলে যে বাংলাদেশের হিন্দুরা শান্তিতে নেই । শান্তিতে না থাকলে পুজো পালন কি করে হয় ? গত বছর আমাদের পুজো ৩১ হাজার হয়েছে । তাহলে কিভাবে হল ?’ কপালে বড়সড় লাল রঙের গোল টিপ ও হাতে লাল তাগা পরিহিতা ওই মহিলাকে এরপর বলতে শোনা গেছে,’ভারতের ওই কুকুর শুভেন্দু ঘেউ ঘেউ করে । তাকে আমি নিমন্ত্রণ জানাচ্ছি যে আপনি এসে দেখে যান যে বাংলাদেশের হিন্দুরা কত ভালো আছে । আমি আপনাদের নিমন্ত্রণ জানাচ্ছি রমনা কালীমন্দির এর পক্ষ থেকে ।’ মহিলার কথায়, সকল ধর্মের মানুষ নির্যাতিত হয়েছে । আমি বলবো না যে শুধু সনাতন ধর্মালম্বির মানুষ নির্যাতিত হয়েছে । সকল মানুষ, জনগণ নির্যাতিত হয়েছে । সবচেয়ে আনন্দের বিষয় ছিল বিগত বছরের দশমীতে৷ এই মন্দির প্রাঙ্গণে ছোট ছোট মেয়েরা সিঁদুর খেলেছে । স্বাধীনতার পর এর আগে এত সাড়ম্বরে তারা পালন করতে পারেনি ।’
এদিকে বাংলাদেশের মিডিয়ার খবরে জানা গেছে, বাংলাদেশের গাজীপুরের কাশিমপুরের নামা বাজার শ্মশানঘাট এলাকায় আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজার আগে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাতের অন্ধকারে কয়েকজন এসে প্রতিমার উপর আক্রমণ চালিয়ে সেটি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়ে যায় । ঘটনার পর এলাকাজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে । স্থানীয় পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তারা অভিযোগ করেছেন, “প্রতিবারই দুর্গাপূজার আগে এ ধরনের হামলা ঘটে, তবে প্রশাসনের তৎপরতা অপ্রতুল। আমরা আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান নিরাপদভাবে উদযাপন করতে পারি না।” ভুক্তভোগীরা প্রশাসনের শিথিল মনোভাবের কারণে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত, গ্রেপ্তার এবং যথাযথ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয়দের মতে, এই ধরনের হামলা হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ ও স্থানীয়দের বয়ান সংগ্রহ করা হচ্ছে। যদিও এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি ।
অন্যদিকে বিএনপির নেত্রী ও রমনা কালিমন্দির কমিটির সভাপতি অপর্ণা রায় দাসের ঘৃণ্য মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন খোদ বাংলাদেশের হিন্দুরাই । সুষ্মিতা কর নামে এক বাংলাদেশি তরুনী একটি ভিডিও বার্তায় বলেছেন,’দাদা চলে যায়, বোনকে রেখে যায় । আমাদের সম্মানিত পিনাকী ভট্টাচার্য দাদা দেশের বাইরে গেছেন । যাওয়ার সময় অপর্নাদিকে নিয়ে যেতে ভুলে গেছেন । অপর্ণা দিদি আপনি একজন হিন্দু নারী নেত্রী, যিনি সরাসরি রাজনীতির সাথে যুক্ত । বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির হিন্দু নারী সদস্য । যেখানে আপনাকে নিয়ে গর্ব করা উচিত সেখানে আপনি এমন মন্তব্য করেন যে হিন্দু স্বপ্ন সম্প্রদায় আপনাকে “দিব্যাং লোকাংশ গচ্ছতু” বলতে বাধ্য হয় । আপনি আগেও বলেছেন এবারও একই ভুল করলেন ।’ তিনি আরও বলেছেন,যশোরের অভয়নগরে যখন হামলা হল আপনি সেখানে গিয়েছিলেন । তারপরও বলেন এ দেশে সাম্প্রদায়িক হামলা হয় না ? কিভাবে বলেন এ কথা ?