এইদিন বিনোদন ডেস্ক,১৪ সেপ্টেম্বর : প্রয়াত হলেন “লালনকন্যা” খ্যাত বাংলাদেশের লোকসঙ্গীত শিল্পি ফরিদা পারভীন । হাসপাতালে ১২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ১৫ মিনিটে তিনি মারা গেছেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। তিনি স্বামী এবং চার সন্তান রেখে গেছেন। শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আজ রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে শিল্পীর মৃতদেহ । পরে কুষ্টিয়ায় মা-বাবার কবরের পাশে তাকে কবরস্থ করা হবে। হাসপাতাল থেকে সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিল্পীর স্বামী বংশীবাদক ওস্তাদ গাজী আব্দুল হাকিম।
ফরিদা পারভীন দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। ২ সেপ্টেম্বর ডায়ালাইসিসের পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। এরপর থেকে তিনি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত বুধবার বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় । হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, তার রক্তচাপ আশঙ্কাজনক কম এবং সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় জ্ঞানও কমে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত শনিবার রাতে তার মৃত্যু হয় ।
ফরিদা পারভীনের জন্ম ১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানা এলাকায়। মাত্র ১৪ বছর বয়সে ১৯৬৮ সালে তিনি তার পেশাদার সংগীতজীবন শুরু করেন। নজরুলগীতি ও দেশাত্মবোধক নানা ধরনের গান করেছেন। তবে মূলত তিনি লালন ফকিরের গান গেয়ে পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। লালনের গানের বাণী ও সুরকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে ফরিদা পারভীনের অবদান সর্বজনস্বীকৃত। শুরুতে নজরুল সংগীত, পরে আধুনিক গান দিয়ে ফরিদা পারভীনের যাত্রা শুরু হলেও জীবনের বেশির ভাগ সময় তার কেটেছে লালন সাঁইয়ের গান গেয়ে। যেকারণে সঙ্গীত জগত তাকে লালন কন্যা আখ্যা দিয়েছিল । শিল্পী জীবনে তিনি ১৯৮৭ সালে একুশে পদক প্রাপ্তি এবং ১৯৯৩ সালে সেরা প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন । এছাড়া ২০০৮ সালে জাপান সরকারের ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কারও পান।।