এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১১ সেপ্টেম্বর : বর্তমানে উত্তরবঙ্গে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । গতকাল জলপাইগুড়ি জেলায় সরকারি কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে একটি সভায় ভাষণ দিয়েছিলেন তিনি । ভাষণে বাঙালির অস্মিতা রক্ষা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি দেশের জাতীয় সঙ্গীত পাঠ করেন । কিন্তু শুরুতেই তিনি হোঁচট খান । কারন জাতীয় সঙ্গীতের প্রথম লাইনটাই তিনি ভুলে যান । যা নিয়ে মমতা ব্যানার্জিকে কটাক্ষ করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন,’বাঙালি অস্মিতার রক্ষাকর্ত্রী সাজার নাটক করতে বিদ্যার দরকার হয়।’ তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে “অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী” বলেও বিদ্রুপ করেছেন ।
নিজের এক্স হ্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপিং শেয়ার করেছেন শুভেন্দু অধিকারী । ভিডিওতে মুখ্যমন্ত্রীতে বলতে শোনা যায় ন্যাশনাল সঙ ভারতবর্ষের, কে গেয়েছিলেন ? বাংলা থেকে নামটা কি ? বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ।’ এরপর তিনি বলেন, ‘বন্দেমাতরম… “সুজলাং সুফলাং শস্য মাতরম ।’
শুভেন্দু অধিকারী প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, ‘রাজনৈতিক স্বার্থে বার বার অস্মিতা অস্মিতা আওড়ানো এক আর সেই বিষয়ে দক্ষতা থাকা আরেক ব্যপার ! তাই “অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী” এই বহুল প্রচলিত বাংলা প্রবাদ এর প্রদর্শন প্রতিনিয়ত বাঙালি কে দেখতে বাধ্য করছেন মাননীয়া।
‘বন্দেমাতরম` গান টি প্রথিতযশা সাহিত্যিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি, ওনার রচিত উপন্যাস ‘আনন্দমঠ’ এ এই গানটি রয়েছে যা ১৮৮২ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। এই দেশাত্মবোধক গান স্বাধীনতা আন্দোলনের আবহে অসংখ্য স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা বিপ্লবীদের উদ্বুদ্ধ করেছিল, যা পরবর্তীতে আমাদের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে পরিণত হয়। এই গানের প্রথম কটি লাইন হল;
বন্দে মাতরম্ ৷
সুজলাং সুফলাং
মলয়জশীতলাম্
শস্যশ্যামলাং
মাতরম্ !
শুভ্র-জ্যোৎস্না-পুলকিত-যামিনীম্
ফুল্লকুসুমিত-দ্রুমদলশোভিনীম্
সুহাসিনীং সুমধুরভাষিণীম্
সুখদাং বরদাং মাতরম্
বন্দেমাতরম্…….।
কিন্তু মাননীয়া আজ জলপাইগুড়িতে যে ‘বন্দেমাতরম্’ গানটি গাইলেন
সুজলাং সুফলাং (মলয়জশীতলাম্ ভুলে গিয়েছিলেন) শস্য (শ্যামলাং বাদ) মাতরম,,,
‘শ্যামলাং’ টাও সম্ভবতঃ উনি ভুলে গেছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি লিখেছেন,’মাননীয়া আপনি আবার ব্যর্থ। ‘বাঙালি অস্মিতার রক্ষাকর্ত্রী’ সাজার নাটক করতে হলেও যে বিদ্যা বুদ্ধির উপাদান প্রয়োজন, তার সামান্য ভগ্নাংশ ও আপনার মধ্যে নেই। বিপ্লবের স্ফুলিঙ্গ প্রজ্জ্বলনকারী জাতীয় স্তোত্র বা রাষ্ট্রগান ‘বন্দেমাতরম্’ কে বিকৃত করার জন্য দেশবাসীর কাছে আপনি ক্ষমা চান।’।