এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),০৮ সেপ্টেম্বর : রবিবার বিকেলে সারপ্রাইজ ভিজিটে এসে কর্তৃপক্ষের সাড়া না পেয়ে ভাতাড় সমবায় শষ্য উৎপাদন ও বিপনন সমিতি লিমিটেডের অফিস সিল করে দিয়ে গিয়েছিলেন মহকুমা খাদ্য আধিকারিক। আজ সোমবার সকালে সিল খোলার কথা ছিল৷ কিন্তু বর্ধমান (সদর) মহকুমা খাদ্য আধিকারিক দীপক মণ্ডল সকাল শোয়া দশটায় পুলিশকে সাথে নিয়ে অফিসের সামনে চলে এলেও দীর্ঘ প্রায় ২ ঘন্টা ধরে সমবায় ম্যানেজার প্রিয়ব্রত সাঁতরার দেখাই পাওয়া গেলো না । শেষ পর্যন্ত সকাল ১১:৪৬ নাগাদ ম্যানেজারকে টোটোয় চড়ে বাজার থেকে আসতে দেখা যায় । এরপর সিল খুলে পুলিশ ও সমবায়ের কর্মীদের নিয়ে অফিসে ঢুকে পরিদর্শন শুরু করেন মহকুমা খাদ্য আধিকারিক । দাবি করা হচ্ছে যে সমবায় ম্যানেজার আজ নিজের বাড়িতেই ছিলেন এবং সেটা জানতেন মহকুমা খাদ্য আধিকারিক ৷ বিষয়টি নিয়ে তিনি চরম ক্ষুব্ধ । তবে সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি এনিয়ে বিশেষ মুখ খোলেননি । শুধু বলেছেন, “তদন্ত করা হবে ।”
প্রসঙ্গত,রবিবার বিকেলে ভাতাড় সমবায় শষ্য উৎপাদন ও বিপনন সমিতি লিমিটেডের অফিসে সারপ্রাইজ ভিজিটে আসেন বর্ধমান (সদর) মহকুমা খাদ্য আধিকারিক দীপক মণ্ডল । যদিও সমবায় অফিস ছুটি ছিল। দরজা ও কোলাপসিবল গেটে তালা ছিল। বিকেল সাড়ে চারটে থেকে ঘন্টা খানেক অফিসের সামনে অপেক্ষা করেন মহকুমা খাদ্য আধিকারিক । কিন্তু ম্যানেজার না আসায় বাধ্য হয়ে তাকে ফিরে যেতে হয় । দীপক মণ্ডল বলেছিলেন, ‘এখন সরকারি নির্দেশে সমবায় থেকে রেশন দোকান সর্বত্রই রুটিনমাফিক পরিদর্শন চলছে। শনিবার ও রবিবারেও পরিদর্শন হতে পারে। ভাতারের ওই সমবায় অফিসে পরিদর্শনের জন্য গিয়েছিলাম । সমবায় ম্যানেজারকে দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ ফোন করে বলা হয়েছিল। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও আসেনি। তাই সিল করে দেওয়া হয়েছে । সোমবার আবার যাব। যাতে এর মধ্যে কিছু অন্তর্ঘাত না হয় তাই সিল করে দেওয়া হল।”
জানা গেছে,আজ যথারীতি ভাতার থানার পুলিশকে সাথে নিয়ে সমবায় অফিসে আসেন । কিন্তু দীর্ঘ দু’ঘন্টা ধরে ম্যানেজারের দেখা পাওয়া যায়নি । এদিকে তীব্র রোদ থেকে বাঁচতে সমবায় অফিস সংলগ্ন মহাপ্রভু তলায় গাছের ছায়ায় ম্যানেজারের জন্য হাপিত্তেশ করে অপেক্ষা করতে দেখা যায় মহকুমা খাদ্য আধিকারিককে । বিষয়টি নিয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে বিশেষ মুখ খুলতে না চাইলেও মহকুমা খাদ্য আধিকারিক দীপক মণ্ডল “এইদিন”কে বলেন,’আমরা সকাল ১০ টার মধ্যে ভাতারে চলে আসি । প্রায় সাড়ে ১০টা থেকে সমবায়ের অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে আছি । কিন্তু ম্যানেজার আসেননি । ঘন্টা দুয়েক অপেক্ষার পর বর্ধমান ফিরে যাবো ।’ তিনি তখন জানান যে ফিরে গিয়ে তিনি ডিসিকে ডিটেন জমা দেবেন ।
প্রসঙ্গত,ভাতাড় সমবায় শষ্য উৎপাদন ও বিপনন সমিতি লিমিটেডের ম্যানেজার প্রিয়ব্রত সাঁতরার বাড়ি কুলচন্ডা গ্রামে ৷ সমবায় অফিস থেকে গ্রামের দুরত্ব মাত্র কয়েক’শ মিটার । তার বৃদ্ধ বাবা রথীন সাঁতরা কিডনির রোগে আক্রান্ত৷ মাসে একবার করে তাকে ডাইলিসিস করাতে নিয়ে যেতে হয় । তবে দু’একদিনের মধ্যে তাকে তাকে তার বাবাকে ডাইলিসিস করাতে নিয়ে যেতে দেখা যায়নি বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের । এমনকি আজ সোমবার সকালে তাকে বাইক চড়ে বাজারে যেতে দেখা গেছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর । অনুমান করা হচ্ছে যে আজ বাড়িতেই ছিলেন সমবায়ের ম্যানেজার । এদিকে নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও অফিস না খোলায় চুড়ান্ত নাকাল হয় সমবায়ের গ্রাহকদের । অনেককে নিজের কাজে এসে ফিরেও যেতে দেখা গেছে ৷ এদিকে দপ্তরের শীর্ষ আধিকারিককে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করানোর বিষয়টি নিয়ে শোড়গোল পড়ে গেছে এলাকায় ।।

