এইদিন আন্তর্জাতিক ডেস্ক,০৭ সেপ্টেম্বর : মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে পতিতাবৃত্তি ও জুয়া খেলার অভিযোগে ৩৭৭ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করেছে ইমিগ্রেশন বিভাগ ৷ একই অভিযোগে বাংলাদেশি ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ছাড়াও ইন্দোনেশিয়ান,থাই, ভিয়েতনামী এবং লাওটিয়ান মিলে মোট ৮২৮ বিদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে কুয়ালালামপুরের ইমিগ্রেশন বিভাগ ।
মালয়েশিয়ার সংবাদ সংস্থা বারনামার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে জালান ইপোহ-এর একটি তিন তারকা হোটেলে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেই সময় কাজের চুক্তির কপি, ছয়টি থাই পাসপোর্ট, তিনটি ভিয়েতনামী পাসপোর্ট, তিনটি ইন্দোনেশিয়ান পাসপোর্ট ও একটি লাওসিয়ান পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া একই রাতে (৬ সেপ্টেম্বর) নেগেরি সেম্বিলানের নিলাই এলাকায় আর একটি বিশেষ অভিযানে ২১ জন মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজনকে ‘প্রাইমিস কেয়ারটেকার’ এবং বাকি ২০ জনকে পরিচারিকা হিসেবে কাজ করার সন্দেহে ধরা করা হয়েছে। তাদের বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এর আগে, মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের একটি অনলাইন জুয়ার আখড়ায় অভিযান চালিয়ে দেশটির অভিবাসন দপ্তর ৭৭০ জন বিদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে। বারনামা সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধৃতদের মধ্যে ৩৭৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছে । মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ জানায়, রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে অভিযান শুরু হয়। এই অভিযানটি দুই সপ্তাহের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চালানো হয়। এতে পুত্রজায়া ইমিগ্রেশন সদর দপ্তরের গোয়েন্দা ও বিশেষ অভিযান বিভাগের কর্মকর্তা ও সদস্যরা অংশ নেন।
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক দাতুক জাকারিয়া শাবান এক বিবৃতিতে বলেন,ধৃত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন, মিয়ানমারের ২ জন নারী, একজন ভারতীয় নারী, একজন ইন্দোনেশিয়ান পুরুষ, ১৭ জন ইন্দোনেশিয়ান নারী, নয়জন থাই নারী, ছয়জন ভিয়েতনামী নারী, একজন লাওটিয়ান নারী। তাদের বয়স ১৯ থেকে ৬১ বছরের মধ্যে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, ছয়জন থাই, তিনজন ভিয়েতনামী, দুইজন ইন্দোনেশিয়ান ও একজন লাওটিয়ান নারী পাসের অপব্যবহার করেছেন। এছাড়া, একজন ইন্দোনেশিয়ান পুরুষ অতিরিক্ত সময় ধরে অবস্থান করেছেন। অপর দুইজন মিয়ানমারের পুরুষ, একজন ভারতীয় পুরুষ, ১৫ জন ইন্দোনেশিয়ান নারী, তিনজন ভিয়েতনামী নারী এবং তিনজন থাই নারীর বৈধ ভ্রমণ নথি ছিল না। ইমিগ্রেশন বিভাগের দাবি, আটক ব্যক্তিরা হোটেলটিকে বিদেশি পতিতাবৃত্তি কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছিলেন। ‘গ্রাহকরা হোয়াটসঅ্যাপ বা সরাসরি এসে ছবি দেখে নারীদের বেছে নিতে পারতেন। প্রতি ঘণ্টায় ২৫০ থেকে ৪০০ মালয়েশিয়ান মূদ্রা রিঙ্গিত চার্জ নেওয়া হতো। মনে করা হচ্ছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এই সিন্ডিকেটটি সক্রিয় ছিল।
মহাপরিচালক বলেন, আইনি প্রক্রিয়ায় ১৯৬৩ সালের ইমিগ্রেশন রেগুলেশনের ৩৯(বি) ধারার অধীনে ছয়জন থাই, তিনজন ভিয়েতনামী, দুইজন ইন্দোনেশিয়ান ও একজন লাওটিয়ান নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই আইনের ৬(৩) ধারায় দুইজন মিয়ানমারের একজন পুরুষ, একজন ভারতীয় পুরুষ, ১৫ জন ইন্দোনেশিয়ান নারী, তিনজন ভিয়েতনামী মহিলা ও তিনজন থাই নারীকে আটক করা হয়। এছাড়া ১৫(৪) ধারায় একজন ইন্দোনেশিয়ানকেও আটক করা হয়েছে। ইমিগ্রেশন বিভাগ জানায়, সবাইকে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুত্রজায়া ইমিগ্রেশন অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সাতজন স্থানীয় পুরুষকে তদন্তে সহযোগিতার জন্য উপস্থিত হওয়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছে।।