এইদিন বিনোদন ডেস্ক,০৫ সেপ্টেম্বর : বলিউড পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী তাঁর দ্য ফাইলস ট্রিলজির তৃতীয় কিস্তি “দ্য বেঙ্গল ফাইলস” নিয়ে ফিরে এসেছেন । ছবিটির নাম ঘোষণার দিন থেকেই শিরোনামে উঠে এসেছে। রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া থেকে শুরু করে নেটিজেনদের মধ্যে ছবির ধারণা নিয়ে বিভ্রান্তি, দ্য বেঙ্গল ফাইলস অবশেষে সমস্ত বাধা অতিক্রম করেছে। এদিকে মুম্বাইয়ে একটা সাংবাদিক সম্মেলন করে পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী অভিযোগ করেছেন,’পশ্চিমবঙ্গ সরকার পুলিশকে লেলিয়ে দিয়ে ছবিটি রিলিজ আটকে দিয়েছে ।’ পুলিশ সরাসরি সিনেমা হল মালিকদের ফোন করে ছবি রিলিজ না করার জন্য হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
বিবেক অগ্নিহোত্রী তাঁর দ্য ফাইলস ট্রিলজির তৃতীয় কিস্তি নিয়ে ফিরে আসছেন। ছবিটির নাম ঘোষণার দিন থেকেই শিরোনামে উঠে এসেছে। রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া থেকে শুরু করে নেটিজেনদের মধ্যে ছবির ধারণা নিয়ে বিভ্রান্তি, দ্য বেঙ্গল ফাইলস অবশেষে সমস্ত বাধা অতিক্রম করেছে। ছবিটি ১৯৪৬ সালের গ্রেট কলকাতা কিলিংস-এর সময় বাংলার অকথিত গল্প, ১৯৪৬ সালের নোয়াখালী দাঙ্গা এবং ত্রিপুরা ও কুমিল্লার ঘটনা সহ বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির আশেপাশের অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া সাম্প্রদায়িক হিংসার সত্য কাহিনী তুলে ধরেছে । এটি ১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট থেকে ৩ দিন ধরে মুসলিম লীগের নেতা হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দীর “ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে”-এর নামে হিন্দু নরসংহার ও ভারত বিভাজনের চিত্র তুলে ধরেছে ।
“দ্য বেঙ্গল ফাইলস”-এর দর্শকদের কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত “এক্স”-এর ইতিবাচক পর্যালোচনা পাওয়া যাচ্ছে। কেউ কেউ এটিকে ‘প্রত্যেক ভারতীয়ের জন্য অবশ্যই দেখা উচিত’ বলে মন্তব্য করেছেন, আবার কেউ কেউ বলেছেন যে গল্পটি শক্তিশালী এবং আবেগপ্রবণ। নেটিজেনরা এমনকি বলেছেন যে এটি কেবল একটি চলচ্চিত্র নয়, বরং একটি আয়না। আপনি যদি ছবিটি দেখার পরিকল্পনা করেন, তাহলে এখানে টুইটার পর্যালোচনাগুলি দেখুন।
দ্য বেঙ্গল ফাইলস টুইটার পর্যালোচনা
একজন ব্যবহারকারী বলেছেন,’দ্য বেঙ্গল ফাইলস প্রতিটি ভারতীয়ের জন্য অবশ্যই দেখা উচিত। আমাদের ইতিহাসের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা আমাদের অজানা ছিল,বিবেক অগ্নিহোত্রী এবং তার টিম দ্বারা দুর্দান্তভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে । পল্লবি যোশী,মিঠুন চক্রবর্তী, অনুপম খের এবং অন্যান্য অভিনেতাদের অসাধারণ অভিনয়।’
আর একজন বললেন,’এইমাত্র দ্য বেঙ্গল ফাইলস দেখলাম রেটিং: ৪.৫/৫ এই সিনেমাটি শক্তিশালী এবং আবেগঘন। প্রথমার্ধটি শক্তিশালী গল্প বলার মাধ্যমে গড়ে ওঠে, এবং দ্বিতীয়ার্ধটি কোর্টরুম নাটক এবং আবেগ, নির্বাক মুহূর্ত, ডার্ক চ্যাপ্টার অফ বেঙ্গল, ট্রুথস উইথ ফুল অফ ভায়োলেন্স সহ একটি চমকপ্রদ ক্লাইমেক্স দিয়ে তীব্র আঘাত হানে। অভিনেতারা অসাধারণ কাজ করেছেন, বিশেষ করে প্রধান চরিত্রটি – আগুনে ভরা। পরিচালনা এবং সঙ্গীত আপনাকে আকৃষ্ট করে, যদিও কিছু অংশ সংলাপ- ভারী মনে হয়।’
একটি টুইটে লেখা ছিল,’দ্য বেঙ্গল ফাইলস কেবল একটি চলচ্চিত্র নয়, এটি একটি আয়না। একটি আয়না যা দেখায় যে কীভাবে বাংলার রক্তে ভেজা অতীত দুর্ঘটনাক্রমে নয়, বরং পরিকল্পিত ভাবে সৃষ্টি করা হয়েছিল। কংগ্রেস নির্বাচিত ইতিহাসের উপর সমৃদ্ধ হয়েছিল। বুদ্ধিজীবীরা স্বৈরাচারকে রোমান্টিক করে তুলেছিল। মিডিয়া নীরবতাকে ধর্মনিরপেক্ষতা বলে বিক্রি করেছিল। এই সিনেমাটি কেবল যা ঘটেছিল তা নিয়েই নয়, যারা এখনও মিথ্যাকে সমর্থন করে তাদের প্রতিও আপনাকে ক্ষুব্ধ করে তোলে।’
আর একটি টুইটে লেখা হয়েছে,(৪/৫) দ্য বেঙ্গল ফাইলস ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে (১৯৪৬) এর একটি কঠিন দৃশ্য, তীব্র এবং অবিস্মরণীয়। দুর্দান্ত অভিনয় শক্তিশালী গল্প বলা = অবশ্যই দেখতে হবে ।’
বছরের সবচেয়ে আলোচিত চলচ্চিত্র, দ্য বেঙ্গল ফাইলস-এ ম্যাডম্যান চতুর চরিত্রে মিঠুন চক্রবর্তী, মা ভারতীর চরিত্রে পল্লবী যোশি, শিব পন্ডিত চরিত্রে দর্শন কুমার, ভারতী চরিত্রে সিমরন কৌর, মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর চরিত্রে অনুপম খের, হুসেইনির চরিত্রে শাশ্বতা চ্যাটার্জি, নমাশি চক্রবর্তী, নমাশি চক্রবর্তী হুসেরা আলীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এটি পরিচালনা করেছেন বিবেক অগ্নিহোত্রী এবং প্রযোজনা করেছেন অভিষেক আগরওয়াল, পল্লবী জোশী এবং বিবেক অগ্নিহোত্রী।
সাংবাদিক সম্মেলন করে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন “দ্য বেঙ্গল ফাইলস”- এর পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী । তিনি বলেন, বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বাংলার বড় সিনেমা হলগুলির মালিক ও সিওদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে । আমি ওদের পারমিশন নিয়ে বলছি, পুলিশ ওদের ফোন করে সরাসরি হুমকি দিয়ে বলছে যে ছবিটা যদি রিলিজ হয় তাহলে তার পরিণতি ভালো হবে না । পুলিশ বলছে যে পার্টির লোকেরা এসে যদি ভাঙচুর করে তাহলে কে বাঁচাবে ? এছাড়া বিশ্বের ইতিহাসে এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি, যেখানে কলকাতার তিনটে বড় সংবাদপত্র ছবিটার বিজ্ঞাপন দিতে অস্বীকার করেছে । এই ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি । তৃতীয়তঃ, এই ছবিটা বাংলায় ডাব হয়েছে । কারণ লক্ষ লক্ষ্য বাঙালি এই ছবিটা দেখতে চায় । ডিস্ট্রিবিউটাররা বলছে যে ছবিটা যদি বাংলায় রিলিজ হয় তাহলে ইতিহাস সৃষ্টি করবে ।
তিনি বলেন, যেটা জানা যাচ্ছে যে বাংলার পুলিশ এবং সরকারের আপত্তির কারণ হলো, ছবিটার বিষয়বস্তু হচ্ছে হিন্দু নরসংহার এবং জনবিন্যাসের পরিবর্তনের কথা তুলে ধরা হয়েছে । আমি শুধু একটাই প্রশ্ন করতে চাই যে যে ছবি সেন্সর বোর্ড সিবিএফসি দ্বারা অনুমোদিত, গোটা ভারত জুড়ে রিলিজ হলো, সেখানে বিশ্বের চারটে দেশ থেকে সমস্যা আসছে । সংযুক্ত আরব আমিরাত(ইউএই), মরিশাস সিঙ্গাপুর এবং মালেশিয়া -এই চারটি দেশ হলো ইসলামিক দেশ, সেকুলার দেশ নয় । আর পঞ্চম যে রাজ্যটা সংযোজিত হয়েছে,সেটা হলো পশ্চিমবঙ্গ ।’
বিবেক অগ্নিহোত্রী বলেন,সে কারণে আমি সকলের কাছে অনুরোধ করছি, আজ আমাদের ছবির সঙ্গে এই ঘটনা ঘটছে কাল আপনাদের ছবির সঙ্গে একই ঘটনা ঘটতে পারে । কাল মিডিয়ার সঙ্গে হতে পারে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে হতে পারে । পুলিশকে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সরকার যে গুন্ডামি করছে তা সম্পূর্ণ সংবিধান বিরোধী । প্রতিবাদ জানানোর জন্য আমরা এই সাংবাদিক সম্মেলন করতে বাধ্য হলাম ।’।