এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),০১ সেপ্টেম্বর : বিগত প্রায় এক মাস ধরে একটি পাগল হনুমান কার্যত প্রাণ অষ্টাগত করে তুলেছিল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার বেলডাঙ্গার বাসিন্দাদের । রাস্তা দিয়ে যাওয়ার উপায় ছিল না । ছুটে এসে দাঁত বসিয়ে দিচ্ছিল হনুমানটি । হনুমানের কামড়ে ইতিমধ্যে ১০-১২ গ্রামবাসী জখম হয়েছেন বলে জানা গেছে । তাঁরা সকলেই ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে জলাতঙ্কের টিকা নিচ্ছেন । কিন্তু আহতদের মধ্যে নয়ন মাঝি নামে এক যুবকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । অবশেষে বুধবার বিকেলে বর্ধমান থেকে বনদপ্তরের লোকজন এসে হনুমানটিকে ঘুম পাড়িয়ে খাঁচা বন্দি করে নিয়ে গেলে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন গ্রামবাসীরা ।
জানা গেছে, বেশ কিছুদিন আগে ভাতার থানার বেলডাঙ্গা গ্রামে বেশ কিছু হনুমানের আবির্ভাব হয় । তাদের মধ্যে একটি হনুমান মাস খানেক আগে থেকে অস্বাভাবিক আচরন করতে শুরু করে । তবে প্রথম দিকে সে মানুষকে তাড়া করলেও হামলা করত না । কিন্তু দিন পনেরো ধরে খুব আক্রমনাত্মক হয়ে উঠেছিল হনুমানটি । রাস্তা দিয়ে কেউ গেলেই আচমকা ছুটে এসে শরীরে দাঁত বসিয়ে দিচ্ছিল ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,সোমবার সন্ধ্যায় গ্রাম ঢোকার মুখে মিষ্টান্নের দোকানে বসেছিলেন শুভেন্দু দেয়াসী নামে এক যুবক । সেই সময় কিছুটা দুরেই বসেছিল হনুমানটি । তখন রাস্তা দিয়ে ছোটছোট ছেলেমেয়েরা যাচ্ছিল । তাদের উপর হামলা না করে দেয় এই আশঙ্কায় হনুমানটিকে তাড়ানোর চেষ্টা করেন শুভেন্দুবাবু । তখন ওই পাগল হনুমানটি ছুটে এসে তাঁর পাছায় দাঁত বসিয়ে দেয় । বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন । এরপর এদিন সকালে বেলডাঙ্গা গ্রামের বাউরি পাড়ার বাসিন্দা নয়ন মাঝির উপর হামলা চালায় ওই হনুমানটি ।
জানা গেছে,সকালে মাঠে কাজে যাচ্ছিলেন পেশায় জনমজুর নয়ন । সেই সময় হনুমানটি ছুটে এসে তাঁর হাতের মাংস খুবলে নেয় । তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন । স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে ভাতার হাসপাতালে ভর্তি করে । কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে বর্ধমানে স্থানান্তরিত করা হয় ।
জানা গেছে,লাগাতার হামলার জেরে হনুমানটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার জন্য বনদপ্তরের কাছে বেশ কয়েকদিন আগেই আর্জি জানিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা । শেষে এদিন সকালে বনদপ্তরের কর্মীরা হনুমানটিকে উদ্ধার করতে আসেন । কিন্তু পাগল হনুমান তাঁদের তেড়ে গেলে তখনকার মত বনদপ্তরের কর্মীরা চলে যান । এরপর বিকেল নাগাদ ঘুম পাড়ানি বন্দুক তাঁরা নিয়ে ফের বেলডাঙ্গা গ্রামে আসেন । তার আগে বনদপ্তরের কর্মীদের সুবিধার জন্য পাগল হনুমানটির গায়ে আলতা ছিটয়ে তাকে চিহ্নিত করে রেখে দেয় গ্রামবাসীরা । শেষে ঘুম পাড়ানি গুলি ছুড়ে হনুমানটিকে বেহুঁশ করে খাঁচা বন্দি করে বনদপ্তরের লোকজন ।
দেখুন ভিডিও :
গ্রামবাসীরা জানান, খবর পেতেই যদি বনদপ্তরের কর্মীরা এসে হনুমানটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যেত তাহলে এত সংখ্যক মানুষ তার হামলায় জখম হতেন না । তবে শেষ পর্যন্ত মূর্তিমান আপদ বিদেয় হওয়ায় খুশি গ্রামবাসীরা ।।