এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০২ সেপ্টেম্বর : গতকাল মেয়ো রোডে গান্ধি মূর্তির পাদদেশে তৃণমূল কংগ্রেসের “অবৈধ” ধর্না মঞ্চ খুলে দেওয়ায় আজ মঙ্গলবার বিধানসভায় নিজের ভাষণে ভারতীয় সেনা ও ৭১ সালের পাকিস্থান সেনাকে এক করে দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু । সেই মন্তব্য রেকর্ড থেকে সরানোর অনুরোধ স্পিকার বিমান ব্যানার্জি না মেনে নেওয়ায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে সাসপেন্ডের অভিযোগ উঠল । তারই প্রতিবাদী বিধানসভা থেকে ওয়ার্ক আউট করলেন বিজেপি বিধায়করা । বিধানসভার বাইরে এসে শুভেন্দু অধিকারী স্লোগান তোলেন : “পাকিস্তানের দালাল তৃণমূল হটাও”, “ভারতীয় সেনা জিন্দাবাদ” এবং “ভারতীয় সেনার অপমান মানছি না মানবো না” ।
প্রসঙ্গত,কথিত ভাষা আন্দোলনের জন্য সেনাবাহিনীর কাছ থেকে দুদিনের জন্য কলকাতার মেয়ো রোডে গান্ধি মূর্তির পাদদেশে ধর্না মঞ্চ বাঁধার অনুমতি নিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস । কিন্তু একমাস পরেও সেই মঞ্চ না খোলায় সেনার তরফে সেটি খুলে ফেলার কাজ শুরু করে হয় । খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি মেয়ো রোডে ছুটে যান এবং দাবি করেন যে তাকে দেখে দুশো জন সেনা জওয়ান ছুটে পালিয়ে গেছে । মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন যে বিজেপির ইন্ধনেই সেনা মঞ্চ খুলে ফেলেছে । মুখ্যমন্ত্রীর এহেন বক্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি । এই বিষয়ে আজ বিধানসভায় বক্তব্য রাখেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু । ভাষণে তিনি বলেন, ‘গতকাল যখন সেনাবাহিনী আমাদের আন্দোলন মঞ্চ ভেঙে দিল, তখন ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ ঢাকা শহরে পাক সেনাবাহিনীর গুলি করে হত্যার ঘটনার কথা মনে পড়ছিল।’ শিক্ষামন্ত্রী আরও অভিযোগ করেন, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ভারতীয় সেনা তৃণমূলের মঞ্চ ভেঙেছে।’
শিক্ষামন্ত্রীর এই মন্তব্য করতেই প্রতিবাদের ফেটে পড়েন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারি সহ বিরোধী দলের বিধায়করা। শুভেন্দু অধিকারি ইন্ডিয়ান আর্মি জিন্দাবাদ স্লোগান দিতে শুরু করেন। বিক্ষোভের মুখে ভাষণ থামিয়ে দেন ব্রাত্য বসু। ব্রাত্যের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনাকে অপমান করার অভিযোগও আনেন। হট্টগোল থামানোর চেষ্টা করেন বিধানসভার স্পিকার। তবে পরিস্থিতি ক্রমশই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শেষে শুভেন্দু অধিকারিকে সাসপেন্ড করেন স্পিকার।
আজ সন্ধ্যায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেছেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু তার ভাষণে বলেন যে গতকাল আমাদের মঞ্চে ভারতীয় আর্মি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে বাধা দিয়েছে । তিনি সেনাবাহিনীর ভূমিকাকে ৭১ সালে পাক সেনাদের অত্যাচারের সঙ্গে তুলনা করেন । তখন আমি স্পিকার বিমান ব্যানার্জিকে অনুরোধ করলাম যে এই বক্তব্য সরিয়ে দিন ।কারণ ভারতের কোন বিধানসভা তে এটা করা যায় না। কারণ ভারতীয় সেনা আমাদের মান সম্মান । স্পিকার আমার কথার অবহেলা করেছেন । সেই সময় আমি ভারতীয় সেনার অপমান মানছি না মানবো না স্লোগান দিয়েছিলাম । তখন অরূপ বিশ্বাস স্পিকারের কাছে এসে বললেন এলওপিকে তাড়িয়ে দিন । সাসপেন্ড করে দিল । আমার বিধায়করা বললেন চলুন আমরা বেরিয়ে যাব ।’।