এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),৩১ আগস্ট : পিকনিকে গিয়ে টিনের তৈরি ডিঙিতে চড়ে দিঘিতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন এক গৃহশিক্ষক ও তার ৫ ছাত্র ৷ কিন্তু মাঝ জলে গিয়ে দাপাদাপি করলে ডিঙি উলটে যায় । বাকিরা সাঁতরে পাড়ে উঠে এলেও শিক্ষক ও এক ছাত্র তলিয়ে যান। আজ রবিবার বিকেল নাগাদ এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার পানুহাটের বনদিঘির পাড়ে হারগাছা নামে দিঘিতে । নিখোঁজদের মধ্যে গৃহশিক্ষক কাটোয়ার মুস্থুলী গ্রামের বাসিন্দা সুমন্ত ঘোষাল চাকরির পরীক্ষার প্রশিক্ষণের জন্য কাটোয়ার আমডাঙ্গা গ্রামের কাছে একটি আবাসিক কোচিং সেন্টারে থাকতেন । জনৈক শ্যামসুন্দর ঘোষের ওই কোচিং সেন্টারে তিনি নিজে প্রশিক্ষণ নিতেন এবং দিতেন। তার এক শিক্ষার্থী ও নদিয়া জেলার নবদ্বীপ এলাকার বাসিন্দা নির্মল রায়ও দিঘির জলে তলিয়ে গেছেন । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে কাটোয়া থানার পুলিশ এবং আসেন কাটোয়া-১ বিডিও ইন্দ্রজিৎ মারিক । পরে ডুবুরি এনে তল্লাশি শুরু হয়৷
জানা গেছে,হারগাছা নামে ওই দিঘিটি মাছ চাষ করেন পানুহাটের বনদিঘির পাড় এলাকার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ হালদার । কয়েকদিন আগে তাঁর একাদশ শ্রেণীর পড়ুয়া ছেলে শিবমের জন্মদিন ছিল । সেই উপলক্ষে আজ বনদিঘির পাড়ে পিকনিকের আয়োজন করা হয় । পিকনিকে ছিলেন গৃহশিক্ষক সুমন্ত ঘোষাল ও শিবম ছাড়াও দেয়াসীন গ্রামের বাসিন্দা সায়ন ঘোষ, অয়ন ঘোষ, পাঁচঘড়া গ্রামের বাসিন্দা উচ্চ মাধ্যমিক ছাত্র রাণা হাজরা, ওই গ্রামেরই বাসিন্দা দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র সুশোভন ঘোষ ও নদিয়া জেলার নবদ্বীপ এলাকার বাসিন্দা নির্মল রায়সহ মোট ৯ জন পড়ুয়া ।
জানা গেছে,দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর বিকেল নাগাদ সুমন্তবাবু, নির্মল রায়সহ ছয়জন টিনের ডিঙ্গিতে চড়ে দিঘির জলে নৌবিলাস করছিলেন । বাকি তিনজন পাড়ে অপেক্ষা করছিলেন । কিন্তু দিঘির প্রায় মাঝ জলে গিয়ে সুমন্তবাবুর শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে ঠাট্টাতামাসা করার সময় দাপাদাপি করলে ডিঙ্গিটি টালমাটাল হয়ে উলটে পড়ে । তখন চারজন সাঁতরে পাড়ে উঠে এলেও সুমন্তবাবু ও নির্মল উঠতে পারেননি । তারা দিঘির জলে তলিয়ে যান । এরপর বাকি পড়ুয়ারা ছুটে এলাকায় এসে খবর দেয় । প্রথমে স্থানীয় বাসিন্দারা জলে নেমে তল্লাশি চালান । পাশাপাশি খবর দেওয়া হয় কাটোয়া থানায় । খবর পেয়ে ডুবুরি নিয়ে এসে তল্লাশি চালায় পুলিশ । প্রথমে সুমন্ত ঘোষালের এবং সন্ধ্যা প্রায় ৭ টা নাগাদ নির্মল রায়ের দেহ উদ্ধার হয় ।।