এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,২৭ আগস্ট : মাস দুয়েক আগে বাংলাদেশের ঢাকার খিলক্ষেতে শতাব্দী প্রাচীন দুর্গা মন্দির ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় মহম্মদ ইউনূসের প্রশাসন ৷ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় কালী প্রতিমাও । তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ব্যর্থ হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন হিন্দু মহিলারা । একজন হিন্দু রাজার জায়গায় নির্মিত এই মন্দিরে বুলডোজার চালানো নিয়ে শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্বের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন ৷ অবিশেষে শারদীয়া উদযাপনের ঠিক আগেই মন্দিরের জায়গা ফিরে পেলেন হিন্দুরা ।
আজ বুধবার ঢাকার রেল ভবনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে খিলক্ষেত দুর্গা মন্দিরের জন্য জমি হস্তান্তর করা হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের প্রেস সচিব। এ ছাড়া খিলক্ষেত মন্দির কমিটির সভাপতি ও নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিবসহ শীর্ষ নেতারা, ছাত্র মহাজোটের সভাপতি ও নেতৃবৃন্দ এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি ও নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
হিন্দুরা এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, দীর্ঘদিনের দাবি পূরণে এই জমি হস্তান্তরকে মন্দির কমিটি ও হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ । কারন জমি হস্তান্তরের মাধ্যমে মন্দিরের স্থায়ী অবস্থান নিশ্চিত হলো। এই উদ্যোগ হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনায় দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা দেবে বলে মনে করছেন তারা । অনুষ্ঠান শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মন্দির কমিটিকে জমির প্রয়োজনীয় নথি হস্তান্তর করা হয় এবং ভবিষ্যতে মন্দির নির্মাণ ও উন্নয়নকাজে সহযোগিতার আশ্বাসও দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, দুই মসজিদ ও এক মন্দির বরাদ্দ পেলো রেলের জমি
। রাজধানীর জোয়ার সাহারা মৌজায় দুটি মসজিদ ও একটি মন্দিরের জন্য জমি বরাদ্দ প্রদান করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বুধবার (২৭ আগস্ট) রেলভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উক্ত মসজিদ ও মন্দিরের পরিচালনা কমিটির নিকট বরাদ্দপত্র তুলে দেন ঢাকার বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার মো: মহিউদ্দিন আরিফ।
বরাদ্দপ্রাপ্ত মসজিদ ও মন্দিরের মধ্যে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন জোয়ার সাহারা মৌজায় খিলক্ষেত রেলওয়ে জামে মসজিদের জন্য ০.২০১১ একর (৮৭৬০ বর্গফুট), একই মৌজায় আন-নূর-জামে মসজিদের জন্য ০.০৫৫২ একর (২৪০৫ বর্গফুট) এবং খিলক্ষেত থানাধীন একই মৌজায় খিলক্ষেত সার্বজনীন শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দিরের জন্য ০.০৫৬২ একর (২৪৫০ বর্গফুট) জমি বরাদ্দ প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত প্রতীকী মূল্যের বিনিময়ে এসব জমি বরাদ্দ প্রদান করা হয়।
রেলওয়ের জমি মসজিদ ও মন্দিরকে বরাদ্দ দেওয়াকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির হিসেবে উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের রোল মডেল। তারপরও বিভিন্ন সময়ে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে থাকে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কিংবা উপাসনালয় গুলোকে যারা অপবিত্র করতে চায় তাদের ধর্মীয় কোন পরিচয় নেই, তারা দুষ্কৃতকারী, ক্রিমিনাল। তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের বেহাত হয়ে যাওয়া দেবোত্তর সম্পত্তি যেগুলো নিয়ে আদালতে কোন মামলা-মোকদ্দমা নেই এরূপ সম্পত্তি উদ্ধারে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।।

