এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৬ আগস্ট : আজ মঙ্গলবার বর্ধমান শহরের মিউনিসিপাল বয়েজ হাইস্কুলের মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর জনসভা ছিল । মুখ্যমন্ত্রী তখন পড়ুয়াদের “স্মার্ট কার্ড” নিয়ে রাজ্য সরকারের প্রকল্পের বিবরণ দিচ্ছিলেন । কিন্তু ঠিক সেই সময় কয়েকজন টেট উত্তীর্ণ প্লাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। কোন প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল : “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই / নতুন প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ চাই” । কারোর হাতে ছিল : “দীর্ঘ বঞ্চিত প্রাথমিক এ নতুন শিক্ষক নিয়োগে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই” । কেউ “দিদি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে কিছু বার্তা দিন” লাকাট হাতে বিক্ষোভ দেখান । তাঁদের চিৎকারে মাঝখানে প্রায় মিনিট খানেক বক্তৃতা থামিয়ে দিতে বাধ্য হন মুখ্যমন্ত্রী । মুখ্যমন্ত্রীকে উত্তেজিত দেখা যায়৷ তবে সব থেকে বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রীর পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা পূর্ব বর্ধমানের জেলা শাসক ও পুলিশ সুপার ।
এদিকের শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রীর সভার এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে মজার ছলে একটা কবিতা লিখেছেন । তিনি কবিতাটির নাম দিয়েছেন “মাননীয়ার মেজাজ” । তিনি লিখেছেন :
খোশ মেজাজে দিচ্ছিলেন ভাষণ, মেকি উন্নয়নের খতিয়ান/সামনে বসা লোকজন সব দেবে হাততালি, শুনে জল মেশানো পরিসংখ্যান।
হঠাৎ কাটলো তাল, তুলে ধরেছে পোস্টার জন দুই-তিন/বলে কি না ‘প্রাথমিক নিয়োগ’ নিয়ে বার্তা দিন !
এত আস্পর্ধা, মাননীয়ার মেজাজ তিরিক্ষি,আমার অমতে মিটিং এ ঢোকে না কোনো কাক-পক্ষী ! / নিয়ে এসেছে চাকরি চাই-নিয়োগ চাই পোস্টার, কি যে হবে, সবাই দেখে ফেললে আর পাবো না নিস্তার !
কথা ঘোরানোর ছলে দিয়েদি একটু ধমক যাকে খুশি,ভাতা-র রাজ্যে চাকরি চায়, কি বিস্ময়!/ শিক্ষক নিয়োগ ওত সহজ নয় টাকা লাগবে অনেক বেশি।
এদিকে সেই সময় মঞ্চে তখন চরম আতঙ্কিত দেখা যায় জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে । মুখ্যমন্ত্রী তাদের হালকা ধমকের সুরে বলেন, ‘প্রশাসনকে অনুরোধ করব মিটিংয়ের সময় সংবাদ মাধ্যমের পিছনে ব্যারিকেড করতে। যাতে ওদেরও অসুবিধা না হয়, আর অন্যদেরও অসুবিধা না হয়।’ পাশাপাশি তিনি বিক্ষোভকারীদের ছবি তোলার জন্য হুড়োহুড়ি করায় সাংবাদিকদেরও ধমক দেন । এদিকে তখন পুলিশ সুপার দ্রুত মঞ্চ থেকে নিচে নেমে আসতে দেখা যায় ।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৩ সালে বিনপুরে মুখ্যমন্ত্রীর এক সভায় শিলাদিত্য নামে এক ব্যক্তি একই কায়দায় সারের দাম বৃদ্ধি নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। মুখ্যমন্ত্রীর তখন তাকে তাঁকে “মাওবাদী” তকমা দিয়েছিলেন । তবে আজকের বর্ধমানের সভায় বিক্ষোভের পর চাকরিপ্রাথীদের “মাওবাদী” তকমা দেননি তিনি । জানা গেছে,এদিন মুখ্যমন্ত্রী সভাতে অন্তত ৩০ জন ২০২২-এর প্রাথমিকে টেট উত্তীর্ণ মঞ্চের প্ল্যাকার্ড হাতে ‘ডি’ জোন লাগোয়া এলাকায় পৌঁছে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ।।

