এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৬ আগস্ট : আজ বর্ধমান মিউনিসিপাল বয়েজ হাইস্কুলের মাঠে “সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস এবং পরিষেবা প্রদান” কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । এদিকে কলকাতার সল্টলেকে দলীয় কার্যালয়ে রাজ্যে আদিবাসীদের উপর ঘটে চলা অত্যাচারের পরিসংখ্যান তুলে ধরলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্স-এ এক মুখ ঢাকা আধিবাসী মহিলার বক্তব্যের ভিডিও পোস্ট করেছেন । ভিডিওতে বলা হয়েছে যে গত ১৪ আগস্ট পুরুলিয়ার বান্দোয়ান হাসপাতালে শিশুপুত্রের চিকিৎসা করাতে গিয়ে বিশেষ সম্প্রদায়ের কর্মীর দ্বারা শ্লীলতাহানির শিকার হন ওই আদিবাসী মহিলা । মহিলাকে বলতে শোনা গেছে, ইমরান হক আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে । ওর রুমে ডেকে নিয়ে গিয়ে খারাপ ব্যবহার করেছি৷ স্বাধীনতা দিবসের দিনেও খারাপ ব্যবহার করেছে । আমি প্রতিবাদ করেছি । তখন ও বলল টেনশন করো না কেউ কিছু জানতে পারবেনা ।’
শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, এই রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজত্বে সকলেই বঞ্চিত, সকলেই অত্যাচারিত। বিগত চৌদ্দ বছরের অধিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার শাসনকালে পশ্চিমবঙ্গে যে নৈরাজ্য কায়েম করেছেন তা একরকম নজিরবিহীন।
অতি সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় আদিবাসী মূলবাসী সম্প্রদায়ের উপর বেশ কিছু অত্যাচারের ঘটনা ঘটেছে। আদিবাসী সম্প্রদায় যারা এই দেশের মূলবাসী এবং দেশের জল, জঙ্গলের উপর দেশের সংবিধান যাদের অধিকার দিয়েছে, দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে যাদের গুরুত্ব অপরিসীম, দেশের অগ্রগতিতে যাদের ভূমিকা কোনোও অংশে কম নয় আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে তারা কিভাবে অত্যাচারিত হচ্ছেন তার পাঁচটি ঘটনা প্রমান সহ আমি সর্বসমক্ষে উপস্থাপন করতে চাই….
ঘটনা ১: গত ১৪ই অগষ্ট ২০২৫, পুরুলিয়ার বান্দোয়ান হাসপাতালে নিজের শিশু সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে এক বিশেষ সম্প্রদায়ের কর্মীর দ্বারা শ্লীলতাহানির শিকার হন এক আদিবাসী মহিলা।
ঘটনা ২: গত ১৫ অগষ্ট ২০২৫, মেদিনীপুর চার্চ স্কুল মাঠে আয়োজিত একটি ফুটবল টুর্নামেন্টে একটি ম্যাচ চলাকালীন পেশায় প্রাইমারী শিক্ষক ও রেফারি সম্মানীয় শ্রী লক্ষণ মান্ডিকে ফুটবল ম্যাচ পরিচালনা করার সময় মাঠের মধ্যেই লাথি মারে তৃণমূলের এক নেতা। সর্বসমক্ষে তাকে হেনস্থা করা হয়।
ঘটনা ৩: ১৫ই অগষ্ট ২০২৫, সরকারের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির কারণে আন্দোলনরত চাকরিহারা এক যোগ্য শিক্ষক শ্রী সুবল সোরেন সেরিব্রাল অ্যাটাকের ফলে মারা যান।
ঘটনা ৪: ১৮ই অগষ্ট ২০২৫, ডেবরা ব্লকের লোয়াদা এলাকায় ‘ডাক্তার সোরেন’ নামের এক আদিবাসী যুবককে আবগারি দপ্তর একটি মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার করে। এবং আবগারি দপ্তরের হেফাজতে থাকাকালীন ঐ আদিবাসী যুবক কে পিটিয়ে খুন করা হয় । আঘাতের চোটে অসুস্থ হওয়ায় প্রথমে তাকে ডেবরা ও পরে মেদিনীপুর মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরে কলকাতা রেফার হওয়ায়, কলকাতায় স্থানান্তরিত করার সময় পথেই মৃত্যু হয় ডাক্তার সরেনের।
ঘটনা ৫: ১৮ই অগষ্ট ২০২৫, পুরুলিয়ার পাড়া বিধানসভার লোপানিয়া গ্রামে এক বিশেষ সম্প্রদায়ে হাতে আক্রান্ত হন আদিবাসী প্রৌঢ় ধনঞ্জয় মুদি ওরফে ধনু।
সবশেষে তিনি লিখেছেন,উপরের প্রতিটি ঘটনায় আদিবাসী পরিবারগুলি প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়া সত্বেও তারা সঠিক বিচার এখনো পান নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদিবাসী ও তফসিলি উপজাতি বিরোধী। এই সরকার আদিবাসী সমাজ তথা তফসিলি উপজাতিদের অধিকার হরণকারী সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার পুলিশ প্রশাসন দিয়ে আদিবাসী সমাজের উপর দমন, পীড়ন, অত্যাচার চালাচ্ছেন। ভারতীয় জনতা পার্টি আদিবাসী মূলবাসী সম্প্রদায়ের উপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই দমন পীড়ন নিতি এবং অত্যাচারের বিরুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে তাদের পাশে রয়েছে। এই সরকারকে বিদায় দিয়ে বিজেপি এই সব ঘটনার বিচার করবে এবং আদিবাসী সমাজ তথা তফসিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের প্রাপ্য ও যোগ্য মর্যাদা তথা সম্মান ফিরিয়ে দিতে বদ্ধপরিকর।।

