এইদিন ওয়েবডেস্ক,টাঙ্গাইল,২৩ আগস্ট : পরকীয়া সম্পর্কের এক মর্মান্তিক পরিণতির ঘটনা সামনে এসেছে বাংলাদেশ থেকে । বছর ৪০-এর এক বিবাহিত মহিলার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন বছর ৫৫-এর এক প্রৌঢ় । উভয়েরই একাধিক সন্তান রয়েছে ৷ দিন ১৭ আগে তারা নিকাহ করে সংসার করতে শুরু করে । কিন্তু মহিলার সন্তানদের জন্য মন খারাপ করায় দ্বিতীয় স্বামীর পুরুষাঙ্গ ব্লেড দিয়ে কেটে চম্পট দিয়েছেন । চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার শখিপুরে । আহত আব্দুল বাছেদ মুন্সি (রাসেল) নামে ওই প্রৌঢ় বর্তমানে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । এদিকে ঘটনার পর থেকেই উধাও তার দ্বিতীয় স্ত্রী আরজিনা আখতার ।
জানা গেছে,শখিপুর বড়চওনা দেবরাজ বাজারে বাড়ি আব্দুল বাছেদ মুন্সির (রাসেল)৷ একই এলাকায় শ্বশুর বাড়ি আরজিনা আখতারের ৷ আব্দুল বাছেদের বাড়িতে রয়েছে স্ত্রী এবং চার সন্তান । অন্যদিকে দুই শিশু সন্তানের রয়েছে আরজিনার । দু’জনার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া সম্পর্ক চলছিল বলে স্বীকার করেছেন খোদ আহত প্রৌঢ় ।
আব্দুল বাছেদ মুন্সির কথায়,’মেয়েটার সাথে সম্পর্ক ছিল আমার অস্বীকার করবো না। বাস্তব সত্য যেটা বলতেই হবে । আরজিনা আমায় বলেছিল, ‘তোমায় যদি না পাই আমি আত্মহত্যা করব’ । যাইহোক, এত দিনের ভালবাসা যেহেতু । আমি তখন বলেছিলাম তোমার ছেলেমেয়েদের ছেড়ে আসতে হবে । স্বামীকে তালাক দিতে হবে । তালাকের নথি এবং তোমার যাবতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে আসতে হবে ।’
তিনি বলেন,’তারপর হুজুরকে ডেকে এনে নিকাহ করলাম । যেহেতু সে ডিভোর্স দিয়েছে তাই আর কোন বাধাই ছিল না । এরপর কাবিন করতে হবে । আমি দ্রুত কাবিন করতে চেয়েছিলাম । কিন্তু ও একটু আপত্তি জানালো । ৬-৭ দিন আগে ওর সন্তানদের জন্য মন খারাপ করতে শুরু করে । দু-একজনের সঙ্গে যোগাযোগ হলে সন্তানদের কথা শুনে তার মায়া ধরে গেল । ছোট দুটো বাচ্চা আছে তো । আমায় বলেছিল, ‘তোমাকেও ছাড়তে পারছিনা এবং আমার আগের সংসারও ছাড়তে পারছি না’ । কারণ হলো একটাই ওর দুটো ছোট ছোট সন্তান রয়েছে ।’ তিনি বলেন,’এভাবে দুদিন গেলো । আমি তাকে অনেক বোঝালাম । কিন্তু আমায় বলেছিল যে সন্তান যদি না থাকতো তাহলে আমি তোমায় ছাড়তাম না ।’
ঘটনার দিনের বিবরণ দিতে গিয়ে আব্দুল বাছেদ মুন্সি জানান যে দিন তিনেক আগে তিনি দ্বিতীয় স্ত্রী কে নিয়ে একটা ভাড়া বাড়িতে ওঠেন । রাস্তার ধারে একটা ঘর । ওই ঘরে আগে এক দম্পতি থাকত ।কিন্তু স্ত্রী পালিয়ে যাওয়ার পর আমি সেই ঘরটা ছেড়ে দেয় । ফলে ঘরটা ফাঁকাই পড়েছিল । তিনি বলেন,’আমরা তিন দিন ওই ঘরে ছিলাম । গত ১৭ই আগস্ট ঘটনাটি ঘটে । আমরা একসাথে দুপুরে খাওয়া দাওয়া করেছি । ও আমার পাশে শুয়ে আছে । টিক টক দেখছে । আনুমানিক তখন চারটে সাড়ে চারটে হবে,আমি ঘুমিয়ে গেছি । সেই সময় একটা নতুন ব্লেড দিয়ে আমার লিঙ্গে চালিয়ে দিয়েছে । আমি তড়াক করে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ি ।’
জানা গেছে, দ্বিতীয় স্বামীর গোপনাঙ্গে হামলা চালানোর পরেও ঘরেতেই ছিলেন আরজিনা আখতার । এদিকে প্রবল রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে প্রৌঢ় তার গোপনাঙ্গে কাপড়ের টুকরো বেঁধে দেন । কিন্তু তাতেও রক্তসরন বন্ধ না হলে তিনি একটি ক্যারিব্যাগ গোপনাঙ্গে বেঁধে দেন । এরপর তিনি বাড়ির বাইরে এসে একটি টোটোয় চড়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হন । অন্যদিকে তখন তার দ্বিতীয় স্ত্রী একটা অটোতে চড়ে পালিয়ে যান ।হাসপাতালে আহত প্রৌঢ়ের সঙ্গে সাংবাদিকরা কথা বলতে গেলে তিনি দোয়া কালাম পড়ে বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন ।
জানা গেছে, ঘটনার পর পাড়ার হুজুরদের নিয়ে একটা সালিশি সভা বসে । সেই সালিশি সভাতে মহিলাকে ২ লক্ষ টাকা দিয়ে তার সাথে ছাড়াছাড়ি করে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় ৷ কিন্তু বাছেদ মুন্সি এই প্রস্তাবে রাজি হননি । তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, সালিশির নামে তিনি দালালদের দু লক্ষ টাকা দিতে পারবেন না । তিনি আরজিনাকে নিয়ে সংসার করতে চান । এদিকে শখিপুর বড়চওনা দেবরাজ বাজারের বাসিন্দারা মানববন্ধন করে বাছেদ মুন্সির দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করেছেন । তাদের অভিযোগ যে বাছেদ মুন্সির মত লম্পটদের জন্যই সমাজের দ্রুত অধঃপতন হচ্ছে । যদিও এই বিষয়ে কোন তরফেই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলে জানা গেছে । আহত প্রৌঢ় বাছেদ মুন্সি বলেছেন,’আমি ওকে খুব ভালোবাসি । তাই এ নিয়ে থানায় কোন অভিযোগ দায়ের করব না ।’।

