এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,১৫ আগস্ট : ‘শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করবে’ বলে মন্তব্য করেও জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রায় একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করলেন বাংলাদেশের তদারকি সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস । ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব তিথি উপলক্ষে আগামী কাল শনিবার, বিশ্বজুড়ে জন্মাষ্টমী উৎসব পালন করতে করতে চলেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা । বাংলাদেশের ঢাকার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির থেকে বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হওয়ার কথা রয়েছে । এই পবিত্র তিথিতে নিজের দেশের সনাতন ধর্মালম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মহম্মদ ইউনূস বলেছেন,’সমাজে সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে শ্রীকৃষ্ণ আজীবন ন্যায়, মানবপ্রেম ও শান্তির বাণী প্রচার করেছেন। শ্রীকৃষ্ণ যেখানেই অন্যায়- অবিচার দেখেছেন, সেখানেই অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য আবির্ভূত হয়েছেন।সৃষ্টিকর্তার বন্দনা ও সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় শ্রীকৃষ্ণের দর্শন ও মূল্যবোধ সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ সকলকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করে।’
ইউনূস বলেছেন,’সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতির ‘অনন্য বৈশিষ্ট্য’ এবং আবহমানকাল থেকে এদেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্প্রীতির এই বন্ধনকে অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর ।
ইউনূস বলেছেন,’সমাজে বিদ্যমান শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে সেজন্য সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানাই। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’ তিনি বলেন,’আমি ‘জন্মাষ্টমী’ উৎসবের সাফল্য এবং দেশের সকল নাগরিকের সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করি ।’
এদিকে জানা গেছে,ঢাকায় জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রার জন্য একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে । তার মধ্যে : শোভাযাত্রার রুটে কোনো ধরনের যানবাহন পার্কিং করা যাবে না। উচ্চস্বরে সাউন্ড সিস্টেম বাজানো থেকে বিরত থাকতে হবে। শোভাযাত্রার শুরুতেই অংশ নিতে হবে, কোনোভাবেই মাঝপথে যোগ দেওয়া যাবে না। নিরাপত্তার স্বার্থে হ্যান্ডব্যাগ, ট্রলি, বড় ভ্যানিটি ব্যাগ, পোটলা, দাহ্য পদার্থ, ছুরি, অস্ত্র, কাঁচি, ক্ষয়কারক তরল, ব্লেড, দিয়াশলাই, গ্যাসলাইটার সাথে নিয়ে অংশ নেওয়া যাবে না।শোভাযাত্রা চলাকালে পথে কোনো ধরনের ফলমূল ছোড়া যাবে না। শোভাযাত্রার সময় রাস্তায় অহেতুক দাঁড়িয়ে থেকে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। সন্দেহজনক কোনো ব্যক্তি বা বস্তু দেখতে পেলে তাৎক্ষণিক কাছাকাছি থাকা পুলিশকে জানাতে হবে।শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের স্বেচ্ছাসেবক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। ব্যারিকেড, পিকেট ও আর্চওয়ে ব্যবস্থাপনায় পুলিশকে সহযোগিতা করতে হবে।
পাশাপাশি জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা উপলক্ষে শনিবার ঢাকার বেশকিছু সড়ক বিকাল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ‘যথাসম্ভব’ এড়িয়ে চলাচল করতে অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ-ডিএমপি ।শোভাযাত্রা চলাকালীন নগরবাসীকে বিকল্প সড়কে চলাচল করতে অনুরোধ জানিয়ে সকলের ‘সর্বাত্মক সহযোগিতা’ চেয়েছে পুলিশ।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে,গীতাপাঠ, যজ্ঞ, নামসংকীর্তন, শোভাযাত্রা, কৃষ্ণ পূজাসহ নানা আয়োজনে শনিবার শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি উদযাপন করবেন বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।জন্মাষ্টীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ঢাকার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির থেকে বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করবেন ।।