এইদিন আন্তর্জাতিক ডেস্ক,১৫ আগস্ট : পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয় প্রভৃতি রাজ্যের বিশাল এলাকার সীমান্ত উন্মুক্ত । একবার বিএসএফ-এর নজর এড়িয়ে ঢুকে পড়তে পারলেই কেল্লাফতে । পশ্চিমবঙ্গের তো সহানুভূতিশীল লোকেদের ছড়াছড়ি । জুটে যায় ভোটার কার্ড, আধার কার্ডের মত ভারতীয় পরিচয় পত্র। এই সমস্ত পরিচয় পত্র দেখিয়ে ভিন রাজ্য গিয়ে জুটে যায় কাজও । কিন্তু ইসলামী রাষ্ট্র হওয়া সত্বেও বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই সৌদি আরবে গিয়ে এক বাংলাদেশী যুবককে করুন পরিণতের মুখে পড়তে হলো ।
চাকরির ন্ধানে সৌদি আরব পাড়ি দিয়েছিল বাংলাদেশের গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাফিরুল ইসলাম (২৫) নামে এক যুবক। কিন্তু বৈধ কাগজপত্র না থাকায় কাজ মেলেনি। বাধ্য হয়ে ১৫ মাস রাস্তায়, মসজিদে, আর ফ্লাইওভারের নিচে না খেয়ে কাটে তার । শেষ পর্যন্ত অনারাহে মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের ।
মৃত সাফিরুল গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের রসুলপুর বালুপাড়া গ্রামের দিনমজুর মহম্মদ জলিল শেখের ছোট ছেলে। গত বছরের মে মাসে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে আড়াই লাখ টাকা ঋণ এবং স্থানীয়ভাবে আরও এক লাখ টাকা ঋণ নিয়ে এক দালালের মাধ্যমে সৌদি আরব গিয়েছিলেন তিনি।
পরিবার জানায়, সৌদিতে পৌঁছে চাকরি না পেয়ে চরম অসহায় হয়ে পড়ে সাফিরুল। খাওয়ার জন্য কখনও মসজিদে মসজিদে যেত, কখনও রাস্তায় রাত কাটাত । অসুস্থ হলেও চিকিৎসা পায়নি। শেষ পর্যন্ত গত ২৮ জুলাই সৌদি আরবের এক হাসপাতালের গেটে মারা যায় সাফিরুল ।
স্থানীয়রা জানান, একই গ্রামের প্রবাস ফেরত দালালের মাধ্যমে সাফিরুল ও রনি নামে দুই যুবক সৌদি আরব গিয়েছিল । সঠিক কাগজপত্র না থাকায় দুজনেরই চাকরি হয়নি। সাফিরুল মারা গেলেও রনি এখনও মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে । এ ঘটনায় দালাল গা ঢাকা দিয়েছে এবং কোনো সহায়তাও দিচ্ছে না বলে অভিযোগ পরিবারের। মৃত্যুর অর্ধমাস পেরিয়ে গেলেও আর্থিক সংকটে দেহ দেশে আনা সম্ভব হয়নি।
সাফিউলের প্রতিবেশী মনির মিয়া জানান, দালালের প্রলোভনে পড়ে সাফিরুলের মর্মান্তিক অকাল মৃত্যু হয়েছে। সাফিরুলের মতো অনেক যুবক ওই দালালের প্রলোভনে পড়ে নিঃস্ব হয়েছে। দালালের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
গাইবান্ধা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মহম্মদ নেশারুল হক বলেন, খুবই দুঃখজনক ঘটনা। পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে দেহ দেশে আনতে সরকারি সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। দালালের মাধ্যমে যাতে কেউ বিদেশ না যান সেজন্য সতর্ক থাকার আহ্বান জানান এই কর্মকর্তা।।