এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১২ আগস্ট : পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের দুটো উপাধি দিয়েছে বিজেপি । প্রথম উপাধি হল “মমতা পুলিশ” এবং দ্বিতীয় উপাধি হলো “চটি চাঁটা” । আজ ফের একই ভাষায় পুলিশকে নিশানা করল বিজেপি । আসলে, কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ পন্থকে নবান্ন অভিযানের সময় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী “শুয়োরের বাচ্চা” বলে সম্বোধন করেছিলেন । তারই প্রতিবাদ জানাতে আজ মঙ্গলবার নিজেদের পরিবারকে আসরে নামিয়ে দেয় ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ ও কলকাতা পুলিশ আবাসিক সমিতি’ । পুলিশ ঘরনীরা আজ কলকাতা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে শুভেন্দু অধিকারীর সেই মন্তব্যের নিন্দা জানান । কিন্তু সম্প্রতি বোলপুর থানার আইসির মা ও স্ত্রীকে ধর্ষণে হুমকি দেওয়া তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে পুলিশের ঘরণীরা রীতিমতো তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন । আর এর পরেই রাজ্য পুলিশের পরিবারের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেন । রাজ্য বিজেপির যুব নেতা তরুণ যদি তিওয়ারি পুলিশ ঘরণীদের সাংবাদিক সম্মেলনকে ‘পরিবারকে নামিয়ে এনে পুলিশের রাজনৈতিক নাটক’ বলে কটাক্ষ করেছেন ।
জানা গেছে,এদিন কলকাতা প্রেস ক্লাবে ওই সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মূলত পশ্চিমবঙ্গ এবং কলকাতা পুলিশে কর্মরত পুলিশ আধিকারিক ও কর্মীদের স্ত্রীরা। সংগঠনের সদস্য সালমা সুলতানা শুভেন্দুর মন্তব্যের নিন্দা করেন । কিন্তু বীরভূম জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে ওঠা প্রশ্ন শুনেই তিনি মেজাজ হারিয়ে ফেলেন ।
আসলে সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেন, ‘বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে যে ভাবে কটু কথা বলে তাঁর মা ও স্ত্রীকে আক্রমণ করেছিলেন অনুব্রত, সেটা কি সমর্থন করেন পুলিশের স্ত্রীরা? যদিও এমন প্রশ্নের স্পষ্ট কোনও জবাব দিতে পারেননি সালমা সুলতানাসহ পুলিশের বাকি ঘরনীরা । শেষে মেজাজ হারিয়ে তারা সাংবাদিক বৈঠক শেষ করে দেন ।
পরে পুলিশের ঘরণীরা রীতিমত একটা রাজনৈতিক বিবৃতি দেন৷ সেই বিবৃতিতে বলা হয়, একটি লিখিত বিবৃতি করে প্রকাশ করে তারা জানিয়েছেন, রাজ্যের বিরোধী দলনেতার নেতৃত্বে মিছিল থেকে যে ভাবে পুলিশ কর্মচারীদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে তার নিন্দা জানানো হচ্ছে। বিশেষ করে কনস্টেবল প্রশান্ত পোদ্দারের মাথায় মেরে প্রাণনাশের চেষ্টা করা হয়েছে। এই ঘটনা যাঁরা ঘটিয়েছেন তাঁদের সকলের কঠোর শাস্তি চাই। বিরোধী দলনেতা আদালতের রক্ষাকবচের দৌলতে এই ধরনের ঘটনা ক্রমাগত ঘটিয়ে চলেছেন ।
প্রসঙ্গত, শুভেন্দু অধিকারী কে সুরক্ষা কবজ দেওয়ার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্ট কে নিশানা করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি । সেই একই ভাষা পুলিশের ঘরণীদের বিবৃতিতে পাওয়া যায় । যে কারণে ফের পুলিশকে ‘চটি চাঁটা’ বলে নিশানা করেছে বিজেপি ।
তরুনজ্যোতি তিওয়ারি এক্স-এ লিখেছেন,’কলকাতায় আজ নতুন দৃশ্য— পুলিশের পরিবার মঞ্চে বসে প্রেস কনফারেন্স করছেন। অভিযোগ, শুভেন্দু অধিকারী পুলিশকে খারাপ কথা বলেছেন।সত্যি বলতে, যদি এই প্রেস কনফারেন্সটা বরাহ সম্প্রদায় থেকে হতো, অবাক হতাম না। অন্তত বরাহরা নিজেদের নিয়ে গর্বিত, আর তাদের খাদ্যাভ্যাসে চটি নেই—তাই তারা যুক্তিসঙ্গত ভাবে বিরোধিতা করত। কিন্তু এখানে? পরিবারকে নামিয়ে এনে রাজনৈতিক নাটক! আরও মজার ব্যাপার— অনুব্রত মণ্ডল নিয়ে প্রশ্ন করতেই প্রেস কনফারেন্সের বক্তারা যেন হঠাৎ ‘প্রটেকশন মোড’-এ চলে গেলেন। কী হলো? অনুব্রত কি এত মধুর কথা বলেছিলেন যে সেটাই পরিবারের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে? পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ কি এখন শুধু দায়িত্ব পালনই নয়, চটি সংরক্ষণেও ওস্তাদ হয়ে গেছে? এবার তো পরিবারকেও ঢাল বানানো শুরু। গণতন্ত্রের জন্য এটা লজ্জা নয়, অপমান।’।