দাম্পত্য জীবনে বন্ধাত্ব হল অভিশাপ । বিবাহের এক বছর বা তার বেশি সময় ধরে জন্ম নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই যৌন মিলনের পরও সংসারে সন্তান না এলে দম্পতির মধ্যে হতাশা শুরু হয় । কিন্তু বন্ধ্যাত্বের কারণগুলি কি ? এটা জানা খুব জরুরি । নারী এবং পুরুষ উভয়ের মধ্যেই এই কারণগুলি বিভিন্ন হতে পারে । পুরুষদের ক্ষেত্রে, শুক্রাণু সংখ্যা কম হওয়া, শুক্রাণুর গুণমান খারাপ হওয়া বা শুক্রাণু পরিবহনে সমস্যা ইত্যাদি বিষয়গুলি বন্ধ্যাত্বের কারণ । সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য শুক্রাণুর সংখ্যা কত হওয়া উচিত এবং কম হলে কী করা যেতে পারে তা জানা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ।
সাধারণত সন্তানের জন্ম না হওয়ায় গুরুত্ব দেওয়া হয় মহিলাদের প্রতি ৷ তাই মূলত মহিলাদেরই চিকিৎসা করানোর প্রবনতা বেশি লক্ষ্য করা যায় । বিপরীত দিকে পুরুষদের চিকিৎসা করানোর বিষয়ে অনীহা থাকে । কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে নারীর সন্তান ধারনে অক্ষমতার কারন দেখা যায় পুরুষের শুক্রাণুর খারাপ গুণমানের জন্য । তাই যথাযথ ডাক্তারি পরীক্ষা করে এই সমস্যা নিরসনে সচেষ্ট হওয়াই পরিবারের জন্য হিতকারী হবে । এক্ষেত্রে চিকিৎসকরা কি পরামর্শ দিচ্ছেন সেটা জানা খুব জরুরি ।
পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা কত হলে সন্তান আসে
ডাক্তারের মতে, সন্তান ধারনের জন্য একজন সুস্থ পুরুষের প্রতি মিলিলিটারে কমপক্ষে ১ কোটি ৫০ লক্ষ বা তার বেশি শুক্রাণু থাকা উচিত। যদি এই সংখ্যা ১ কোটি ৫০ লক্ষের কম হয়, তাহলে তাকে ‘কম শুক্রাণু’ বলা হয়, যা গর্ভধারণে অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে।
কিন্তু শুক্রাণুর সংখ্যা কম হওয়ার কারণ কি ?
চিকিৎসকদের মতে, শুক্রাণুর সংখ্যা কম হওয়ার কারণগুলির মধ্যে রয়েছে অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, ধূমপান, অ্যালকোহল, ভারসাম্যহীন খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ এবং ঘুমের অভাব, অতিরিক্ত তাপ, কোলে ল্যাপটপ রাখা, টাইট পোশাক পরা, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, সংক্রমণ বা আঘাত ।
এক্ষেত্রে চিকিৎসকদের পরামর্শ হল
স্বাস্থ্যকর খাবার খান । বিশেষ করে সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, শুকনো ফল এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান । এছাড়া নিয়মিত ব্যায়াম করুন, নিয়মিত যোগব্যায়াম এবং হাঁটাহাঁটি করুন, মানসিক চাপ কমান, ধ্যান এবং শিথিলকরণ কৌশল রপ্ত করুন, খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করুন, ধূমপান এবং অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী জিঙ্ক, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই এবং পরিপূরক গ্রহণ করুন । কিন্তু এসব
এক বছর ধরে নিয়মিত চেষ্টা করার পরেও যদি গর্ভাবস্থা না ঘটে, তাহলে উভয় সঙ্গীরই উর্বরতা পরীক্ষা করা উচিত। পুরুষদের জন্য তাদের শুক্রাণুর সংখ্যা, শুক্রাণুর গতিশীলতা এবং গুণমান পরীক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সন্তান ধারনে চিকিৎসকদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
চিকিৎসকরা বলছেন,সন্তানের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য কেবল মানসিক প্রস্তুতিই নয়, শারীরিক স্বাস্থ্যও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক শুক্রাণুর সংখ্যা, একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা এবং সময়োপযোগী ডাক্তারের পরামর্শের মাধ্যমে, বাবা-মা হওয়ার স্বপ্ন সহজেই পূরণ করা যেতে পারে। তাই বিবাহিতদের জীবনযাপন ও খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা ।।