এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাবুল,২৭ আগস্ট : আফগানিস্থানের কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৬০ আফগান নাগরিক ও ১২ আমেরিকান সেনার মৃত্যু হয়েছে বলে খবর । মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন,হামলায় নিহত তাঁদের সৈনিকদের মধ্যে ১১ জন মেরিন এবং একজন নৌ চিকিৎসক রয়েছেন । এছাড়া আরও ১৫ সেনা গুরুতর জখম হয়েছেন । মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে । এক আফগান আধিকারিক জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে ১৪০ এর অধিক আফগান নাগরিক জখম হয়েছেন ।
এদিকে কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণ থেকে এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের সহযোগী খোরাসান (আইএস-কে) আফগানিস্তানে এখন সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে । মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইতিপূর্বে স্বীকার করেছিলেন, হামিদ কারজাই বিমানবন্দরে আমেরিকা, মিত্র বাহিনী এবং নিরীহ মানুষকে টার্গেট করতে পারে আইএস-কে । শেষ পর্যন্ত তাঁর সেই আশঙ্কাই সত্যি হল । বৃহস্পতিবার বিস্ফোরণের পর বাইডেন হামলাকারীদের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আমরা এটা ভুলবো না । এক একটাকে বেছে বেছে মারবো ।’ সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা আফগানিস্তান থেকে আমেরিকান নাগরিক ও আফগান মিত্রদের উদ্ধার করব । আমাদের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে ।’
যদিও কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের পর ফ্রান্স তাদের উদ্ধার অভিযান বন্ধ করে দিয়েছে । ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জিন কাস্ট (Jean Caste) বলেছেন, ‘শুক্রবার রাতের পর তার দেশ কাবুল বিমানবন্দর থেকে লোকজনকে বের করতে পারবে না ।’
তবে মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ড কমান্ডার জেনারেল কেনেথ এফ ম্যাকেনজি জুনিয়র বলেছেন, ‘কাবুলের হামলায় ১২ আমেরিকান সৈনিক মারা গেছেন । আরও ১৫ জন ঘায়েল হয়েছেন । তা সত্ত্বেও আমরা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি ।’
প্রথম তালিবান আর এখন আইএস-কে-এর বাড়বাড়ন্ত দেখে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছিলেন, তাঁরা সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদী প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছেন । আতঙ্কবাদীরা সর্ব প্রথম কাবুল বিমানবন্দরকে নিশানা করতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা । যার জন্য আইএস-কে-এর সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সর্বদা সজাগ রয়েছে । গত জুন মাসে জাতিসংঘ সতর্ক করে দিয়েছিল,মধ্য এশিয়া, রাশিয়ার উত্তর প্রান্ত,পাকিস্থান ও চীনের জিনজিয়াং প্রদেশ থেকে ১০ হাজার সন্ত্রাসবাদী আফগানিস্তানে ঢুকে পড়েছে । তাদের মধ্যে অধিকাংশ তালিবান, আল-কায়দা অথবা আইএস- কে’র মত সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানও আইএস-কে হামলার পূর্বাভাস দিয়ে তার সৈন্য এবং তালিবানদের সতর্ক করেছিলেন । তালিবান মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদও আইএস-কে হামলার সম্ভাবনার কথা স্বীকার করেছেন ।
উল্লেখ্য, বছর ছয়েক আগে অসন্তুষ্ট পাক তালিবানীরা আইএস-কে তৈরি করেছিল । তারপর এই সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আফগানিস্তানে একের পর এক হামলা চালিয়ে গেছে । হাফিজ খানের মৃত্যুর পর ২০২০ সালের জুন থেকে আইএস-কে’র কমান্ড শাহাব এল মুহাজিরের হাতে এসেছে । আর তার পর থেকেই আইএস-কে সংগঠনটি আফগানিস্তানের কাছে সব থেকে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে ।।
ছবি : ট্যুইটার