এইদিন ওয়েবডেস্ক,শিলিগুড়ি,০১ আগস্ট : উত্তরবঙ্গের জনপ্রিয় লোকসংগীত শিল্পী মনিন্দ্র বর্মনের ফের একটি গান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে । গানের বিষয়বস্তু মূলত এরাজ্যে দুর্নীতি, মুসলিম তোষণের রাজনীতিকে কেন্দ্র করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে নিশানা করে আবর্তিত হয়েছে । নিশানায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । এদিকে এই গান শুনে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ । তিনি শিল্পীকে ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে পেটানোর নিদান দিয়েছেন ।
মনিন্দ্র বর্মনের গানের কথা হল :
“জ্বালাইয়া খাইলো একটা হিরোকরাণী,হায় হায়…
পরনে সাদা শাড়ি পায়েতে হাওয়াই চটি ।
মুখের তার মিথ্যা বুলি,চোর ডাকাতের মধ্যমনী
জ্বালাইয়া খাইলো একটা হিরোকরাণী। হায় হায়…
হায়রে হায়, কন্যাশ্রী ধর্ষিতা হয় রাজ্যজুড়ি
এসব নাকি সর্দি-কাশি বলছে ওই বুড়ি ।
ও-ও-ও দাদা রে…
চারিদিকে গুন্ডাগিরি তার আঁচলেই ধর্ষণকারী
সন্ত্রাসীদের মা জননী মার্কামারা দুনম্বরি ।
জ্বালাইয়া খাইলো একটা হিরোকরাণী, হায় হায়…
রোহিঙ্গা বাংলাদেশি অবৈধ অনুপ্রবেশকারী
ভ্রষ্টাচারী নেতা মন্ত্রী এরাই তার সাথী ।
ও-ও-ও দাদা রে…
জাগোরে বঙ্গবাসী এনআরসির ওই পথটা ধরি
আবর্জনা সাফাই করি, চলবেনা আর জারিজুড়ি ।
জ্বালাইয়া খাইলো একটা হিরোকরাণী। হায় হায়…
মুখে তার কর্কষ বুলি শুনলে পরে পায় যে বমি
ইংরেজি আর হিন্দি বলে পাকায় খিচুড়ি ।
ও-ও-ও দাদা রে…
উচিত কথা বললে আমি পাঠায় পুলিশ আমার বাড়ি
কাটমানি খোর অত্যাচারী চাকরি চোর আর বদমেজাজি ।
জ্বালাইয়া খাইলো একটা হিরোকরাণী। হায় হায়…
এই গান ভাইরাল হওয়ার পর সাংবাদিকরা উদয়ন গুহর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেছেন,’আমার বা আমাদের সামনে পড়লে ও যে ভাষাতে গান করেছে সেই ভাষাতেই উত্তর দেব । ওই গান শোনার পরে ওই গায়ককে ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে পেটানোর স্বাধীনতা যুবকদের আছে ।’ তার কথায়,’যা খুশি করা যায় না। প্রধানমন্ত্রীর একটা সমালোচনা করলেই গেল গেল রব উঠে যায় । আমি জানিনা কি নাম ওর । দেখছি । আগে দেখেছিলাম ওর একটা গান৷ প্রথমটায় বলেছিল যে ওটা সংস্কৃতি । এটা ওনার অধিকারের মধ্যে পড়ে । আমি জানিনা, একজন মুখ্যমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর কথা ছেড়েই দিন, একজন ভারতীয় নাগরিককে ইচ্ছামত যেকোনো ভাষায় গালাগালি করে তাকে কটুক্তি করে গান বেঁধে সেই গান আমি গেয়ে বেড়ালাম, সেটা আমার স্বাধীনতা ? তাহলে অনেক যুবক যদি মনে করে এই গায়ককে ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে পেটাবো তাহলে সেটাও তাদের স্বাধীনতা ।’
প্রসঙ্গত,এর আগে গত এপ্রিলে মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের দুর্নীতি নিয়ে গান গেয়েছিলেন উত্তরবঙ্গের রাজবংশী শিল্পী মনিন্দ্র বর্মন। তার গাওয়া “ও পিসি যা ইচ্ছা তাই করছ চুরি/ রাজ্যটা তোর বাপের নাকি” ব্যাপক ভাইরাল হয়েছিল । একারনে তাকে পুলিশের হুমকির মুখে পড়তে হয়েছিল বলে অভিযোগ । শিল্পি অভিযোগ করেছিলেন যে স্থানীয় মাথাভাঙ্গা থানার পুলিশ প্রতিদিন গিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালাচ্ছে এবং হুমকি দিয়ে আসছে । পাশাপাশি স্থানীয় তৃণমূল নেতারাও বাড়িতে চড়াও হয়ে হুমকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি । যেকারণে তাকে আত্মগোপন করে থাকতে হচ্ছিল বলে তিনি দাবি করেছিলেন । বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কলকাতায় নিজের বাড়িতে শিল্পীকে আশ্রয় দিয়েছিলেন । শিল্পিকে পাশে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে কোচবিহারের পুলিশ সুপারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন,’ক্ষমতা থাকলে শিল্পি মনিন্দ্র বর্মনের কেশাগ্র স্পর্শ করে দেখুন । উনি আমার কাছেন এবং থাকবেন ।’ উল্লেখ্য,মণীদ্র বর্মনের বাড়ি কোচবিহার জেলার মাথাভাঙ্গায় । এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে তার । তার প্রথম গানটি শুধু পশ্চিমবঙ্গ বা ভারতে নয়, গোটা বিশ্বের বাঙ্গালীদের নজর কেড়েছিল।।