এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,০১ আগস্ট : বাংলাদেশী সন্দেহে জাতীয় রাজধানী দিল্লিতে কথিত নির্যাতনের শিকার হওয়া পরিযায়ী শ্রমিক মুক্তার খান তার স্ত্রী সাজেনুর খাতুনের পাশে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করলেন মালদা জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী । বৃহস্পতিবার রাতে মালদার চাঁচলের পিরোজাবাদের গ্রামে মুক্তার খানদের ঝুপড়িতে গিয়েছিলেন ওই তৃণমূল নেতা । সেই সময় তিনি সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে বলেন, ‘বাঙালি মহিলা এবং পুরুষদের জোর করে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে । পুরুষদের পোশাক খুলে পরীক্ষা করা হচ্ছে। এইসব কর্মকাণ্ডের যিনি মাথা সেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একজন চোর-ধাপ্পাবাজ- চিটিংবাজ প্রবৃত্তির সর্বগুণ সম্পন্ন । তাই তার যে পুলিশ তার কাছ থেকে আমরা কি আশা করতে পারি ?’
তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ‘কেউ যদি পরিবারটাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে, বাঙালিকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে, বিজেপি শাসিত রাজ্যের পুলিশ এবং এ রাজ্যের বিজেপি যদি তাদের গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করে তাহলে আমরা হাত কেটে নামিয়ে দেব ।’ তার এই হুমকি বার্তা শোনার পর ওই তৃণমূল নেতার সাঙ্গোপাঙ্গরা “জয় বাংলা” স্লোগান দিয়ে চিৎকার করে ওঠে। আব্দুর রহিম বক্সীর কথায়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নিজেই বাংলাদেশী । তার মা যে বাংলাদেশের সেটা তিনি স্বীকার করেছেন ।’ তিনি বিরোধী দলনেতাকে “নির্লজ্জ বেহায়া” বলে আক্রমণ করেন । পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে দারাজ সার্টিফিকেট দিয়ে ওই তৃণমূল নেতা বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি একজন সৎ-নিষ্ঠাবান-গরিবের বন্ধু এবং মানুষের সেবা কারী একজন মুখ্যমন্ত্রী । তার মুখ দিয়ে মিথ্যা কোনদিন বের হয় না ।’
সম্প্রতি মালদার চাঁচলের পরিযায়ী শ্রমিক মুক্তার খান ও তার স্ত্রী সাজেনুর খাতুনরা দিল্লি থেকে অভিযোগ করেছিলেন যে দিল্লি পুলিশ নাকি তাদের নির্যাতন করছে এবং জোর করে টাকা আদায় করছে । এমনকি সেই ভিডিও নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু পুর্ব দিল্লির ডিজিপি বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন যে ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা । এবং সমগ্র ঘটনাটির চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন সাজেনুর খাতুনের মালদা নিবাসী মামা, যিনি একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য । গত সোমবার দিল্লিতে আটক পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবার মুক্তি পান। এরপর তারা বুধবার কলকাতায় ফিরে আসেন। ওই দিনই শ্রমিকের স্ত্রী সাজেনুর খাতুনকে মাঝে বসিয়ে রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে বাঙালি নির্যাতনের তত্ত্ব তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ ।
পরে পরিবারটি মালদায় ফিরে আসলে বৃহস্পতিবার রাতে মালদার চাঁচলের পিরোজাবাদের গ্রামে পৌঁছান মালদা জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী, জেলাপরিষদের সহকারি সভাধিপতি রফিকুল হোসেন, চাঁচল-১নং ব্লক তৃণমূল সভাপতি সেখ আফসার আলি সহ অন্যান্যরা । মুক্তার খান, তার স্ত্রী সাজেনুর খাতুন সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সংবর্ধনা জানান তারা । পরিবারটির হাতে বেশ কিছু পোশাক পরিচ্ছদ তুলে দেন । অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য তাদের সাহসিকতার প্রশংসা করেন এবং তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
তৃণমূল নেতা আব্দুর রহিম বক্সী বলেন,’কেউ যদি পরিবারটাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে, বাঙালিকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে, বিজেপি শাসিত রাজ্যের পুলিশ এবং এ রাজ্যের বিজেপি যদি তাদের গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করে তাহলে আমরা হাত কেটে নামিয়ে দেব ।’ তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের আমি চ্যালেঞ্জ করছি যে বাঙ্গালীদের নির্যাতন করে দেখান । আমাদের ক্ষমতা থাকলে আমরা রুখে দেব । আমি অন ক্যামেরা বলছি প্রধানমন্ত্রী বিজেপি শাসিত রাজ্যের সমস্ত মুখ্যমন্ত্রী এবং এ রাজ্যের ধাপ্পাবাজ চিটিংবাজ বিজেপি নেতাদের আমি চ্যালেঞ্জ করছি যে ক্ষমতা থাকলে বাঙ্গালীদের গায়ে একটা হাত দিয়ে দেখান ।’।