এইদিন ওয়েবডেস্ক,কোপ্পাল,২৬ জুলাই : দেবতার মূর্তির সামনে পদ্মাসনে বসে বোরখা পরা এক মহিলা । তার দু’হাতের তালু উর্ধদিকে বিশেষ মূদ্রায় রাখা । মহিলা চোখ বুঝে একমনে ধ্যান করছেন ! এমনই এই চিত্র দেখা গেল কর্ণাটকের কোপ্পালে অবস্থিত হিন্দুদের পবিত্র তীর্থস্থান গবিসিদ্ধেশ্বর মঠে । হাসিনা বেগম নামে ওই মহিলা গত আট দিন ধরে কোপ্পালের গভিসিদেশ্বর মঠে ধ্যান করছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা । তার সেই ধ্যানেত ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ৷ মুসলিম মহিলা দাবি করেছেন যে তিনি তার ব্রত পূরণ এবং মানসিক শান্তির জন্য ধ্যান করছেন।
কর্ণাটকের কোপ্পায় অবস্থিত ১০০০ বছরের পুরনো কমণ্ডল প্রভু গণপতি মন্দির অত্যন্ত পবিত্র তীর্থস্থান বলে মনে করা হয় । হিন্দুদের এই পবিত্র তীর্থস্থানটি দেশজুড়ে বিখ্যাত তার ‘কমণ্ডল তীর্থ’-এর জন্য, যা একটি রহস্যময়, অবিরাম, ক্রমাগত প্রবাহিত জলাধার, ভগবান গণেশের পাদদেশ থেকে নির্গত হয়েছে । এই জলধারাই প্রখ্যাত ব্রাহ্মী নদীর উৎপত্তিস্থল । এই মন্দিরের নাগদেবের সামনে গত আট দিন ধরে ধ্যান করছেন মুসলিম মহিলা হাসিনা বেগম ।
কোপ্পাল জেলার ইয়েলাবুর্গা তালুকের কুদারি মতির বাসিন্দা হাসিনা বেগম গাভি মঠে প্রতিদিন এক ঘন্টা ধরে একটানা ধ্যান করছেন। প্রায় ৯০ শতাংশ হিন্দু গাভি মঠে আসেন। কিন্তু এই প্রথমবারের মতো একজন মুসলিম মহিলা মন্দির প্রাঙ্গণে ধ্যান করছেন।
গাভি মঠের সন্ন্যাসীরা প্রতি সন্ধ্যায় যেখানে বসেন তার সামনে ধ্যান করেন হাসিনা বেগম । তিনি মানসিক শান্তির জন্য তাকে মোট ১১ দিন ধ্যান করার ব্রত করেছেন। এই বিষয়ে বলতে গিয়ে হাসিনা বেগম বলেন, ‘আমি ১৩ বছর ধরে গাভি মঠের সন্ন্যাসীদের বিশ্বাস করে আসছি। আমার মন শান্তিতে ছিল না, আমি অনেক কষ্টে ছিলাম। তাই সন্ন্যাসীদের জিজ্ঞাসা করার পর ৮ দিন ধরে ধ্যান করছি। যদিও আমি একজন মুসলিম, তবে সব ধর্মই একই।’ তিনি আরও বলেন, “আমি ১৩ বছর ধরে গাভি মঠের সাধু-সন্তদের উপর বিশ্বাস করে আসছি। মুসলিম হওয়ার কারণে মঠে কোনও বৈষম্য নেই। আমি কারও দ্বারা আহত হইনি । তাই আমি প্রতিদিন এক ঘন্টা ধ্যানে বসে থাকি। সংসারে আমার অনেক কষ্ট হয়, এবং আমি এখানে ধ্যান করে স্বস্তি পাই। আমার সন্তানদেরও আমার দাদুর আশীর্বাদ আছে। আমি নাগপ্পা এবং বাসভান্নার পূজা করি। কারন আমি বিশ্বাস করি যে পুজো করে আমার মন শান্তি পায়।’ প্রসঙ্গত, কোপ্পালের গাভি মঠ (গবিসিদ্ধেশ্বর মঠ) শিক্ষা সহ অনেক কিছুর জন্য বিখ্যাত। গাভি মঠের মেলাকে দক্ষিণের কুম্ভমেলা বলা হয়।।

