এইদিন ওয়েবডেস্ক,নদীয়া,১৪ জুলাই : দীর্ঘ ৫-৬ দিন ধরে হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে কাতড়াচ্ছে এইচআইভি পজিটিভ বৃদ্ধ । মিলছে না চিকিৎসা । খোঁজ নেই পরিবারেও । এমনই অমানবিক চিত্র দেখা গেল নদীয়া জেলার কল্যানীর জেএনএম হাসপাতালের বর্হিবিভাগের সামনে । হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি যে বৃদ্ধের পরিবারকে বারবার ফোন করা হলেও কোনো সদুত্তর মিলছে না ।
জানা গেছে,অসুস্থ বৃদ্ধের নাম নিশীথ মৃধা (৭০) । তার বাড়ি চাকদার চাদুড়িয়া এলাকায় । বৃদ্ধের কথায়, তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে দিন পাঁচেক আগে তার ভাই অমিত মৃধা তাকে কল্যানীর জেএনএম হাসপাতালের বর্হিবিভাগে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে । তারপর থেকে সেখানেই ঠাঁই হয়েছে তার । হাসপাতাল সূত্রে খবর,পরীক্ষা নীরিক্ষা করার পর বৃদ্ধের এইচআইভি পজিটিভ ধরা পড়ে । বৃদ্ধকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা । আর এটা শোনার পরেই পরিবার তাকে বাড়ি ফিরিয়ে না নিয়ে গিয়ে হাসপাতালের বহির্বিভাগের ফেলে রেখে পালিয়ে যায় ।
জানা গেছে,বৃদ্ধের দু’বার বিয়ে৷ প্রথমপক্ষের এক ছেলে এবং দ্বিতীয় পক্ষের দুই মেয়ে রয়েছে । বাবার দ্বিতীয় বিয়ের পর ছেলে নীলেশ মৃধা পৃথক থাকতে শুরু করেন । তিনি বিবাহিত এবং গাড়ি চালকের কাজ করেন । কর্মসূত্রে তাকে বাইরে কাটাতে হয় । অবশ্য তার পরিবার রয়েছে নদীয়ায় শ্বশুরবাড়িতেই ।
কল্যানীর জেএনএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অসুস্থ বৃদ্ধের ছেলেকে বারবার ফোন করা হচ্ছে কিন্তু তিনিও কোনো সদুত্তর দিচ্ছেন না । যদিও নীলেশ মৃধার শালক প্রশান্ত হালদারের কথায়,’আমার জামাইবাবুর সঙ্গে তার বাবার ২০-২৫ বছর কোনো সম্পর্কই নেই । জামাইবাবু গাড়ি চালান । বাইরেই কাটাতে হয় তাকে । নিজেরই ঘরবাড়ি নেই । সেজন্য পরিবারকে শ্বশুরবাড়িতেই রেখে দিয়ে গেছেন । এই অবস্থায় জামাইবাবু তার বাবাকে কোথায় রাখবেন ?’ তিনি আরও বলেন,’চাদুড়িয়া এলাকায় জামাইবাবুর বাবার কিছু জমিজায়গা আছে । জামাইবাবু প্রস্তাব দিয়েছিলেন যে সেখানেই একটু জায়গায় একটা ঘর করে বাবাকে রাখা হোক । ভরনপোষণের জন্য তিনি খরচখরচাও দেবেন বলেছিলেন । কিন্তু কোনো কারনে সেই মত আর কাজ এগোয়নি ।’
হাসপাতালের, এক অস্থায়ী ঝাড়ুদার মহাদেব মন্ডল জানান,বৃদ্ধকে তিনি বেশ কিছুদিন ধরে বহির্বিভাগের সামনে পড়ে কাতরাতে দেখছেন । চিকিৎসকদের চিকিৎসা করতে দেখেন না । পরিবারও কোনো খোঁজ রাখে না । তিনি ওই বৃদ্ধের কোথাও চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য আবেদন জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ।।

