দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১২ জুলাই : এক মাথা-চার হাত ও চার পা বিশিষ্ট অদ্ভুতদর্শন শিশুর জন্ম হল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে । আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে ওই বিরল দর্শন কনজয়েন্ট টুইন বা সংযুক্ত যমজ বা সিয়ামিজ যমজের অস্তিত্ব ধরা পড়লে প্রসূতিকে বাঁচাতে গর্ভবস্থার ২০ সপ্তাহের মাথায় আজ শনিবার অস্ত্রপচার করে প্রসব করান বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র গাইনি সার্জেন ডঃ কৃষ্ণপদ দাস । তিনি জানান, ভূমিষ্ট হওয়ার পরেই শিশুটির মৃত্যু হয় । তবে প্রসূতি সুস্থ আছেন এবং বর্তমানে তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ৷
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব বর্ধমান জেলার নাদনঘাট থানার সাহাজাদপুরের বাসিন্দা জয় মন্ডল নামে এক যুবক তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ১৯ বছরের বিভা মন্ডলকে ভাতার বাজারের কদমতলার সেবালয় হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করান । ডঃ কৃষ্ণপদ দাস জানান, আল্ট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টে বধূর গর্ভে কনজয়েন্ট টুইন বা সংযুক্ত যমজের অস্তিত্ব পাওয়া যায় । জানা যায় যে ভ্রণস্থ শিশুটির একটি মাথা, চারটি হাত ও চারটি পা রয়েছে । এছাড়া মাথাতে টিউমারের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়, যাকে আমরা ডাক্তারি পরিভাষায় এনসেফালাইটিস বলি । তিনি বলেন, ‘এই ধরনের শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে ৷ উপরন্তু প্রসূতির গর্ভাবস্থা অব্যাহত থাকলে তার জীবন সংশয় দেখা দিত ৷ তাই প্রসূতিকে বাঁচাতে আমরা ভ্রুণকে টার্মিনেট করানোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হই ।’
জানা গেছে, আজ শনিবার দুপুর দুটো নাগাদ প্রসূতির সিজার করেন ডঃ কৃষ্ণপদ দাস । তবে ভূমিষ্ট হওয়ার সাথে সাথেই শিশুটির মৃত্যু হয় । কিন্তু ভূমিষ্ট শিশুটির শারিরীক গঠন দেখে চমকে ওঠেন চিকিৎসক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মীরা । দেখা যায় সংযুক্ত পুরুষ যমজের চারটে হাত ও চারটে পা এবং একটি মাথা । এছাড়া মাথা থেকে ঝুঁটির আকৃতির একটি টিউমার ঝুলে থাকতে দেখা যায় । সার্জেন ডঃ কৃষ্ণপদ দাস বলেন,’এই ধরনের কনজয়েন্ট টুইন খুব বিরল । প্রতি দুই লাখে এই ধরনের একটি শিশুর জন্ম হয় । শেষের দিকে যখন জাইগটের বিভাজন হয় তখন কনজয়েন্ট টুইনের রুপান্তর ঘটে ।’
নার্সিংহোমের ম্যানেজার বাপি পাকড়ে বলেন, ‘নার্সিংহোমের শুরু থেকে আমি এখানে কর্মরত আছি । কিন্তু এমন আকৃতির শিশুর জন্ম হতে কখনো দেখিনি ।’ চিকিৎসকরা জানান,দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া এবং আফ্রিকায় এই ধরনের ঘটনা বেশি দেখা যায় । প্রায় অর্ধেক মৃত জন্মগ্রহণ করে এবং বাকি শিশুর মধ্যে এক- তৃতীয়াংশ ২৪ ঘন্টার মধ্যে মারা যায়।।

