নিজের ছেলের বন্ধুর সন্তানের মা হতে চলেছেন বলে বলে নিজেই জানালেন ৫০ বছর বয়সী ‘সিস্টার জিন’ নামে এক চীনা মহিলা ৷ চীনা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ডাউইনে গর্ভধারণের খবর জানিয়ে এই নারী জানিয়েছেন, তিনি মা হতে চলেছেন। প্রায় ২০ বছর আগে ডিভোর্সের পর সন্তানদের একাই বড় করেছেন । এরপর ছেলের বন্ধু ডেফুর সঙ্গে প্রেমে জড়ান তিনি। এই অনন্য রসায়নের শুরু ৬ বছর আগে, যখন জিনের ছেলে কাইকাই তার কিছু আন্তর্জাতিক বন্ধুর জন্য একটি চীনা নববর্ষের পার্টির আয়োজন করেছিল। এই অতিথিদের মধ্যে একজন ছিল ডেফু নামে একজন রাশিয়ান ছাত্র, যে সেই সময় কাইকাইয়ের সহপাঠী ছিল। ডেফু পার্টিতে সিস্টার জিনের আতিথেয়তা এবং খাবার এতটাই পছন্দ করেছিল যে সে এক রাতের জন্য সেখানে থাকতে এসেছিল এবং তারপর পুরো সপ্তাহ সেখানেই থেকে গিয়েছিল। সিস্টার জিন নিজেই বলেছিলেন যে সেই সময় তিনি একজন অত্যন্ত উদ্যমী এবং আত্মনির্ভরশীল মহিলা ছিলেন। ডেফু তার সাথে যোগাযোগ রাখতেন, আশ্চর্য উপহার পাঠাতেন এবং ধীরে ধীরে দুজনের মধ্যে একটি অদ্ভুত কিন্তু দৃঢ় সংযোগ তৈরি হয়েছিল।এরপর ধীরে ধীরে সম্পর্ক গাঢ় হয়। ছয় বছর আগে কাইকাইয়ের নিউ ইয়ার পার্টিতে অতিথি হয়ে আসা সেই রুশিয়ান যুবক ডেফুই আজ মহিলার জীবনসঙ্গী ।
ডাউইনে সিস্টার জিনের অনুসারীর সংখ্যা ১৩ হাজারের বেশি। সেখানে তিনি নিজের বিলাসবহুল জীবন, স্বামী ডেফু এবং সন্তানের আগমনের আনন্দ শেয়ার করেছেন। কেউ কেউ ভালোবাসার এই গল্পে অনুপ্রাণিত হলেও, অনেকে বয়সের ব্যবধান নিয়ে সমালোচনাও করছেন। তবে এসব সমালোচনা পাত্তা না দিয়ে জিন বলছেন, ‘ভালোবাসা বয়স দেখে হয় না।’চলতি বছরের শুরুতে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর চীনের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করেছেন, ক্যান্তনিজ খাবার উপভোগ করেছেন। এমনকি কিংবদন্তি মার্শাল আর্ট বীর ওয়ং ফেই-হাংয়ের শহরও ঘুরে দেখেছেন ।
সবচেয়ে চমকপ্রদ খবরটি আসে ৮ জুন। যখন সিস্টার জিন জানান, তিনি মা হতে চলেছেন। বয়সজনিত ঝুঁকি থাকলেও দেফুর সঙ্গে সম্পর্ককে মূল্যবান বলেই মনে করেন তিনি। আগামী বসন্তে তাদের সন্তান জন্ম নেবে বলে জানা গেছে এবং এরই মধ্যে নবজাতকের জন্য খাটও কিনে ফেলেছেন তারা। তাদের সম্পর্ক নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে তীব্র বিতর্ক চলছে। কেউ বলছেন, এটা নিছক মনোযোগ পাওয়ার জন্য বানানো এক চিত্রনাট্য। সবকিছুই যেন খুব নিখুঁতভাবে সাজানো। কেউবা আবার কটাক্ষ করে বলেন, সে কি এখন রাশিয়ায় চলে যাবে দেফুর সঙ্গে? ছেলের বন্ধুর মায়ের বয়স তো তার শ্বশুর-শাশুড়ির সমান!
সব সমালোচনার জবাবে সিস্টার জিন বলেন, সময় আমাদের ভালোবাসার প্রমাণ দেবে। তিনি নিজের প্রি-নেটাল চেকআপ রিপোর্টও সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন সমর্থকদের আশ্বস্ত করতে। এই ব্যতিক্রমী ভালোবাসার গল্প এখন চীনের সোশ্যাল মিডিয়ায় সবচেয়ে আলোচিত ইস্যুগুলোর একটি।।

