এইদিন ওয়েবডেস্ক,শিলিগুড়ি,২৯ জুন : রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলার সময় মন্দিরের একাংশ ভেঙে যাওয়ার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল শিলিগুড়িতে । জানা গেছে,শিলিগুড়ির থানা সংলগ্ন এসএফ রোডের পাশে রয়েছে শ্রী ঘন্টীবালা হনুমান মন্দির । স্বর্গীয় রামাদেবীর স্মৃতিতে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন তাঁর স্বামী শিবনাথ প্রসাদ ও ছেলে গোপাল গুপ্তা । বৃহস্পতিবার রাতে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলার সময় মন্দিরের একাংশ ভেঙে পড়ে । পরের দিন সকালে বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দাদের নজরে পড়লে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় । স্থানীয় হিন্দু সংগঠনগুলির তরফে ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। অবিলম্বে মন্দির পুনর্নির্মাণের দাবি তোলেন তারা।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়ে গেছে ।
শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব । সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ইতিহাস বিজড়িত স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি মূর্তি বসানোর কাজ হচ্ছিল।সেই কাজের সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে মন্দিরের কিছু অংশ ভেঙে গিয়েছে।বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।প্রশাসনের তরফে দ্রুত মন্দিরটি পুনর্নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে। তবে এই ঘটনাকে ঘিরে কেউ যদি ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করে তা কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। কে বা কারা এই ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক উসকানি দিচ্ছে প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
পাশাপাশি নাম না করে তিনি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও স্থানীয় বিধায়ক ডঃ শঙ্কর ঘোষকে নিশানা করেন গৌতম দেব ।
তিনি বলেন,’ফোন করে আমায় ঘটনার কথা বলতে পারত । সেটা নিয়ে রাজনীতি করবে, হনুমান চালিশা পড়বে,গীতা পাঠ করবে, কর্পোরেশনের সামনে দিয়ে বসে পড়বে । সেটা নয় ওদের কাজ এই বিষয়ে আমি কিছু বলবো না । তবে এই একটা অহেতুক বিষয় নিয়ে ধর্মীয় উত্তেজনার সৃষ্টি করা অত্যন্ত দুর্ভাগ্য দুর্ভাগ্যজনক । আমরা কড়া এবং তীব্র ভাষায় নিন্দা করি । আমাদের কাজ হচ্ছে যারা এই নন ইস্যু গুলোকে ইস্যু করছে তাদের অপ্রাসঙ্গিক করে দেওয়া । আমি তাদেরকে খোলা ময়দানে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি যে ২৬ শে ময়দানে আপনাদের সঙ্গে দেখা হবে। চারটে সিট,৪-০ হবে, ১ ইঞ্চি জায়গা এটা ছাড়বো না । বিজেপির সাথে অনেক ভদ্রতা করেছি । কিন্তু বিজেপি এবার যে ভাষায় কথা বলবে, যে লেভেলে কথা বলবে তাহলে সেই অসভ্যতার জবাব সেই লেভেলে দেওয়া হবে । ভদ্রতাকে ওরা দুর্বলতা মনে করে । আমরা অনেক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই জায়গায় এসেছি ।’ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং স্থানীয় বিধায়ক শংকর ঘোষের নাম না নিয়ে তাদেরকে নিশানা করে তিনি বলেন,’আমরা হাতে ট্যাটু, বুকের চেন লাগিয়ে সিপিএমের সময় সিপিএম এবং কেন্দ্রে বিজেপি সরকার এলে এলওপি এবং চিফ হুইপ হওয়া, আমরা সেই ভাবে আসিনি । আমাদের যেন ধুমকি না দেখায় । এর মোকাবেলা রাস্তাতে হবে এবং রাজনীতিগত হবে হবে ।’
অন্যদিকে শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘গৌতম বাবু একজন অদক্ষ মেয়র । ওনার পৌর কর্পোরেশন চালানোর মত কোন দক্ষতাই নেই । আমার তো মনে হচ্ছে গৌতম বাবুর যারা কাছের লোক আছে তারা তাকে এমন অপদস্ত করবে যাতে তিনি মুখ দেখাতে না পারেন । আমি শিলিগুড়িতে থাকি বা না থাকি ওনার একটাই কাজ হলো আমাকে আক্রমণ করা । উনি যে এইভাবে বিবৃতি দিতে পারেন ভেবে আমি অবাক হয়ে যাই । শিলিগুড়ি শহরটাকে উনি পথে বসিয়েছেন ।’।