এইদিন ওয়েবডেস্ক,নদীয়া,১৯ জুন : আজ বৃহস্পতিবার নদীয়া জেলার কালীগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে । তারই মাঝে ভাগিরথী পারাপার করে ভোটারদের বুথে পৌঁছে দিতে গিয়ে রহস্যজনকভাবে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়ে গেলেন নৌকার মাঝি । নিখোঁজ মাঝির নাম নালা হালদার । পুলিশ তার সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে । তবে এখনো পর্যন্ত মাঝির কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি । এদিকে ঘটনার পর নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফুলবাগান চৌধুরী পড়ার প্রায় ৩০০ জন ভোটারের ভোটদান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে । হিন্দু অধ্যুষিত ফুলবাগান চৌধুরী পড়ার বাসিন্দারা মূলত বিজেপির সমর্থক । এমতাবস্থায় নৌকার মাঝি রহস্যজনকভাবে নদীতে পড়ে তলিয়ে যাওয়ায় ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পাচ্ছেন বিজেপি প্রার্থী আশিস ঘোষ । তার অভিযোগ, সবকিছু জেনেও ফুলবাগান চৌধুরী পড়ার বাসিন্দাদের জন্য কোনো ব্যবস্থায় করেনি নির্বাচন কমিশন । এনিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি ।
জানা গেছে,কালীগঞ্জ বিধানসভার ফুলবাগান চৌধুরী পড়ার ২৬৫ জন ভোটার রয়েছে । কিন্তু গ্রামে কোনো বুথ নেই । কালীগঞ্জের ফুলবাগানের যে স্কুলের ২৫২ নম্বর বুথে তারা ভোট দেন সেখানে যেতে গেলে নৌকায় ভাগিরথী পারাপার করতে হয় । এদিন দুপুরে গ্রামবাসীরা ভোট দেওয়ার জন্য একে একে নৌকায় চড়ে ফুলবাগান ঘাট থেকে চর ঘাটে যাচ্ছিলেন । সেই সময় নালা হালদার রহস্যজনকভাবে নৌকা থেকে ভাগিরথীর জলে পড়ে নিখোঁজ হয়ে যান । তারপরে শোক পালনের জন্য নৌকা চলাচল বন্ধ করে দেন অনান্য মাঝিরা । জানা গেছে,দুপুর ১২ টা পর্যন্ত কোনো ভাবে ৫-৬ জন ঘুর পথে গিয়ে ভোট দিয়ে এসেছেন । কিন্তু ফলে চৌধুরীপাড়া গ্রামের বাকি ভোটারদের ভোট দান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ।
বিজেপি প্রার্থী আশিস ঘোষ বলেন,’ফুলবাগান ২৫২ নম্বর বুথের আমাদের ভোটাররা ভোট দিতে পারছেন না । কারণ রহস্যজনকভাবে একজন মাঝি নদীর জলে পড়ে তলিয়ে গেছেন । বিষয়টা আমাদের কাছে খুব রহস্যজনক লাগছে । আমাদের ভোটাররা বসে আছেন ভোট দিতে যেতে পারছেন না । এতগুলো ভোটারের ভোটদানের জন্য কোন ব্যবস্থাই করেনি নির্বাচন কমিশন । তাই ভোটারা যাতে ভোট দিতে পারে সেই ব্যবস্থা করার জন্য আমরা এসেছি৷’
একজন গৃহবধূ বলেন, আমরা নদী পারাপার করতে পারছি না । ফলে ভোট দিতেও পারছি না । একজন মাঝির ছেলে নদীর জলে পড়ে গেল তারপর বাকি মাঝিরা বলছেন যে আজকে আমরা আর খেয়া বাইবো না । সেই কারণে আমরা ভোটও দিতে পারছি না । বিকল্প একটা রাস্তা আছে ঠিকই কিন্তু সেই রাস্ত কর্দমাক্ত । গাড়ি চলাচল করা তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে পর্যন্ত যাওয়া যায় না৷ ফলে আমরা ৫-৬ জন জন কোনরকম ভাবে ভোট দিতে পেরেছি । বাকি ভোটাররা যাতায়াতের ব্যবস্থা না করলে ভোট দেবে না ।’
জানা গেছে,দুর্যোগের মধ্যেই আজ সকালেই নৌকা ভাড়া করে ভোট দিতে রওনা হয় ফুলবাগান চৌধুরীপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা । প্রথম খেপের ৫-৬ জন ভোটার কোনো রকমে ভোট দিতে সক্ষম হন । ইতিমধ্যে ঘটে যায় নৌকার মাঝির নদীর জলে তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা । এরপর নৌকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা কিভাবে বাড়ি ফিরবেন তা ভেবেই অতান্তরে পড়েছেন।।

