শ্যামসুন্দর ঘোষ,মন্তেশ্বর(পূর্ব বর্ধমান),১৭ জুন : আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে বর্ষার প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে । রাস্তাঘাট সব ভিজে । বৃষ্টির কারনে সকাল থেকেই বাড়ির ভিতরে আটকে থাকতে হয় কিশোরীকে । যেকারণে অধৈর্য হয়ে বাড়ির সামনে বিদ্যুতের খুঁটির কাছে এসে দাঁড়িয়েছিল মেয়েটি । সেই সময় বিদ্যুতের খুঁটিতে লাগানো পথবাতির সুইচের কাছে ঝোলানো বিদ্যুতের তারে তার হাত ঠেকে যায় । সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় । মেয়েটির পিছনে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন তার বাবা । মেয়ে ছটফট করতে দেখে তিনি ছুটে এসে তাকে জাপটে ধরে বিদ্যুতের স্পর্শ মুক্ত করার চেষ্টা করেন । কিন্তু পিতা-পুত্রী দু’জনেই জড়িয়ে পড়েন বিদ্যুৎবাহী তারের জালে ৷ তারপর আর কেউ বাঁচাতে পারেনি তাদের । আজ সকালে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর থানার মন্তেশ্বর গ্রামে । নিহতরা হলেন অরুণ নন্দী(৪৫) ও তার মেয়ে বর্ষা নন্দী(১২) ।
জানা গেছে,মন্তেশ্বর গ্রামের গাদ্দার পাড়ের বাসিন্দা অরুণ নন্দী ছিলেন পেশায় কৃষক৷ মাটির বাড়িতে বসবাস । তাঁর মেয়ে বর্ষা স্কুল ছাত্রী । অরুণবাবুদের বাড়িতে চলাচলার করার জন্য একটা সরু মেঠো রাস্তা রয়েছে । রাস্তাটি মিশেছে গ্রামের মূল রাস্তার সাথে । সেই সংযোগস্থলে থাকা বিদ্যুতের একটা খুঁটি থেকে বাড়িগুলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে । ওই খুঁটিতে রয়েছে একটা পথবাতি । তার সুইচ নাগালের মধ্যেই খুঁটিতে বাঁধা আছে ।
জানা গেছে,আজ সকাল প্রায় ১১টা নাগাদ বৃষ্টি কমলে বাড়ি থেকে কাদাপথ ধরে বেরিয়ে ওই খুঁটির কাছে এসে দাঁড়িয়েছিল বর্ষা । সেই সময় ওই সুইচ থেকে ঝুলে পড়া তারে তার হাত ঠেকে যায় । তার ফলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সে । সেখানেই তারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে থাকে বর্ষা । অরুণবাবু দেথতে পেয়ে ছুটে গিয়ে মেয়েকে তার মুক্ত করার চেষ্টা করেন । কিন্তু তিনিও তারে জড়িয়ে যান । পরে আশপাশের লোকজন মেইন সুইচ অফ করে তাদের মুক্ত করে । বাবা ও মেয়ে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় মন্তেশ্বর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে । কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি । দু’জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা ।
পরে হাসপাতাল থেকে দেহদুটি উদ্ধার করে মন্তেশ্বর থানায় নিয়ে আসে পুলিশ । দুপুরের দিকে ময়নাতদন্তের জন্য কালনা মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয় । এই ঘটনায় শোকে বাকরুদ্ধ নিহতদের পরিবার । গোটা গ্রাম জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া ।।

