মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী… কংগ্রেসের ঘোষিত জাতির জনক । তার অহিংসার চরখা নাকি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের সহিংস স্বাধীনতা সংগ্রামের কারনে ভারত স্বাধীন হয়েছিল তা নিয়ে চুলচেড়া বিশ্লেষণ চলে আজও । কংগ্রেস এখনো পর্যন্ত গান্ধীর তথাকথিত অহিংসাকে মহিমান্বিত করে গেলেও নেতাজীর সহিংস স্বাধীনতা সংগ্রামের কারনেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পালাতে বাধ্য হয়েছিল বলে মনে করেন দেশের বাকি অরাজনৈতিক নাগরিকরা । তবে স্বাধীনতা সংগ্রামে কার কতটা অবদান এটা এই প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু নয় ৷ বিষয়বস্তু হল মুসলিমদের প্রতি মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর অগাধ ভালোবাসা নিয়ে। আর সেই গভীর “ভালোবাসা” র কারন অনুসন্ধান করেছেন ব্রিটেন প্রবাসী পাকিস্তান ‘নাস্তিক’ ইমতিয়াজ মেহমুদ (Imtiaz Mahood) ।
এই বিষয়ে তিনি এক্স-এ লিখেছেন,”গান্ধী কেন মুসলমানদের সমর্থন করতেন ? মহাত্মা গান্ধী তাঁর ব্যক্তিগত পটভূমি এবং প্রাথমিক প্রভাবের কারণে ধারাবাহিকভাবে মুসলমানদের সমর্থন করেছিলেন। শ্রী ঘোষের “দ্য কুরআন অ্যান্ড দ্য কাফির” এবং অধ্যাপক কে.এস. নারায়ণচার্যের রচনায় যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, গান্ধীর মা পুতলিবাঈ প্রণামী সম্প্রদায়ের সদস্য ছিলেন। এই সম্প্রদায় হিন্দু ও ইসলামিক ঐতিহ্যের মিশ্রণ ঘটায়। একটি বিতর্কিত গল্পে অভিযোগ করা হয়েছে যে গান্ধীর বাবা করমচাঁদ গান্ধী একজন মুসলিম জমিদারের কাছ থেকে টাকা চুরি করে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তার অনুপস্থিতিতে, জমিদার পুতলিবাঈকে গ্রহণ করেছিলেন এবং সেই সময়কালে গান্ধীর জন্ম হয়েছিল, যা মুসলিম-প্রভাবিত পরিবেশে তার পিতৃত্ব এবং লালন-পালন নিয়ে প্রশ্ন তোলে।”
গান্ধীর মুসলিমদের প্রতি প্রেমের আরও কিছু দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তিনি লিখেছেন,”দাবি করা হয় যে লন্ডনে গান্ধীর শিক্ষা এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় আইনি প্রশিক্ষণের জন্য মুসলমানরা অর্থায়ন করেছিলেন। তিনি লন্ডনের আঞ্জুমান-এ- ইসলামিয়ার সদস্যও ছিলেন বলে অভিযোগ। গান্ধী খিলাফত আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলেন, ভগত সিংকে মৃত্যুদণ্ড থেকে বাঁচাতে সাহায্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন, স্বামী শ্রদ্ধানন্দের হত্যাকারী আব্দুল রশিদকে সমর্থন করেছিলেন এবং দেশভাগের পর পাকিস্তানকে ৫৫ কোটি টাকা দেওয়ার জন্য ভারতকে চাপ দিয়েছিলেন। তিনি সর্দার প্যাটেলের পরিবর্তে নেহেরুকে (কথিত মুসলিম বংশোদ্ভূত) প্রধানমন্ত্রী করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন বলেও জানা গেছে। গান্ধী প্রায়শই হিন্দুদের চেয়ে মুসলমানদের পছন্দ করতেন।”
“দ্য কুরআন অ্যান্ড দ্য কাফির”
“দ্য কুরআন অ্যান্ড দ্য কাফির” একটি বই, যা কুরআন এবং কাফিরদের (অমুসলিম) সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে। বইটিতে কুরআন এবং কাফিরদের (অমুসলিম) মধ্যে পার্থক্য, তাদের প্রতি কুরআনের দৃষ্টিভঙ্গি এবং ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ১৯৮৩ সালে প্রকাশিত “দ্য কোরান অ্যান্ড দ্য কাফির” বইয়ের সূচিপত্র এবং ভূমিকায় কোরান এবং অন্যান্য ইসলামী গ্রন্থগুলি কীভাবে মুসলমানদের অ-বিশ্বাসীদের সাথে আচরণ করার নির্দেশ দেয় তা বলা হয়েছে। এর লক্ষ্য হল অ-মুসলিমদের এই ইসলামী শিক্ষা সম্পর্কে শিক্ষিত করা যা ঐতিহাসিকভাবে মুসলিম শাসকদের দ্বারা বিজিত দেশগুলিতে সাম্রাজ্যবাদ এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়নকে ন্যায্যতা দিয়েছে। যদিও ইসলাম ভ্রাতৃত্ব প্রচারের দাবি করে, প্রাচীন ধর্মতত্ত্ববিদরা একটি কঠোর সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যেখানে বিশ্বাসীদের শীর্ষে, অবিশ্বাসীদের নরকের জন্য নির্ধারিত ছিল এবং ধর্মীয় গোষ্ঠী এবং দাসদের ইসলামী আইনের অধীনে খুব কম অধিকার ছিল।
বইটির মূল বিষয়গুলো হলো:
কাফিরদের সংজ্ঞা: কোরান অনুযায়ী, কাফির বলতে সেই ব্যক্তি বোঝানো হয় যে আল্লাহকে অস্বীকার করে, তাঁর একত্বে বিশ্বাস স্থাপন করে না বা তাঁর প্রেরিত নবীদের অস্বীকার করে।
কোরানে কাফিরদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি: কোরান কাফিরদের প্রতি বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে, যেমন, তাদের প্রতি কঠোরতা, তাদের প্রতি ক্ষমা এবং তাদের প্রতি আহ্বান।
ইসলামের দৃষ্টিতে কাফিরদের স্থান: ইসলামে কাফিরদের প্রতি বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায়, যেমন, তাদের প্রতি ঘৃণা, তাদের প্রতি সহানুভবতা এবং তাদের প্রতি ইসলামের দাওয়াত।
এই বইটিতে কোরান এবং কাফিরদের সম্পর্ক সম্পর্কিত বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে। এটি কোরান এবং ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে জানার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বই ।।

