এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৯ জুন : এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির জেরে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারিয়েছে ২০১৬ সালের প্যানেলের সমস্ত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা ৷ তাদের মধ্যে গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি কর্মীদের বিশেষ স্কিমে ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সে রাস্তাও বন্ধ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট । আজ সোমবার বিচারপতি অমৃতা সিনহা এই মামলার শুনানিতে একরাশ প্রশ্ন তুলে দেন । বিচারপতি বলেছেন,’যারা ভাতা পাবেন তারা কি বাড়িতে বসেই টাকা পাবেন? নাকি কিছু কাজ করে ভাতা পাবেন? ২০-২৫ হাজার টাকার অঙ্কটা কিসের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়েছে? কত সংখ্যক শিক্ষাকর্মী এই টাকা পাবেন? অতীতে কোন কোন ঘটনায় এভাবে রাজ্য আর্থিক সাহায্য করেছে? তাহলে কি সুপ্রিম কোর্টে একটার পর একটা রিভিউ পিটিশন হতে থাকবে আর ওনারা টাকা পেতেই থাকবেন ?’ সব শেষে বিচারপতি রাজ্যকে নির্দেশ দেন,’এখনই কোনও টাকা দেবেন না।’
নিয়োগ দুর্নীতি ও রাজ্য সরকার যোগ্য-অযোগ্য বাছাই না করে দেওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্যানেলের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী চাকরি হারান৷ যার জেরে শুরু হয় বিক্ষোভ । ফলে চরম বিপাকে পড়ে যায় রাজ্য সরকার । এই পরিস্থিতির মাঝে চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । গত ১৫ মে ভাতা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। তাতে গ্রুপ সি কর্মীদের মাসিক ২৫ হাজার ও গ্রুপ ডি কর্মীদের মাসিক ২০ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। প্রকল্পের নামকরণ করা হয়, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভলিহুড অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি ইন্টারিম স্কিম, ২০২৫।’ গত পয়লা এপ্রিল থেকে টাকা দেওয়া শুরু হয়েছে ।
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয় । মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য প্রশ্ন তোলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট চাকরি বাতিল করার পরেও কী ভাবে কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর নাম করে রাজকোষের টাকা ব্যয় করা হচ্ছে?’ অন্যদিকে, বিকাশের এই মন্তব্যের পর রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, ‘বিশেষ খাত থেকে এই টাকা বরাদ্দ হয়।’ দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি অমৃতা সিনহা অ্যাডভোকেট জেনারেলের দিকে বেশকিছু প্রশ্ন ছুড়ে দেন। এবং রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তকে নির্দেশ বলেন,’কি করে এত তাড়াতাড়ি টাকা দেওয়া শুরু হল ? আবেদন নেওয়ার পরে তার কিছু পদ্ধতি আছে। এখনই এই টাকা দেওয়া যেন শুরু না হয়।’।

