এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),০৮ জুন : কর্মসূত্রে স্বামীকে দিনভর বাইরে থাকতে হত । আর সেই সূযোগে পর পুরুষের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন স্ত্রী । বিষয়টি জানাজানি হলে অশান্তি শুরু হয় । তার জেরে গভীর রাতে ঘুমন্ত স্বামীকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে খুন করল স্ত্রী । ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার আমূল গ্রামে । শনিবার রাতে স্বামী মহাদেব দাস (৩৩)কে খুনের পর আজ রবিবার সকালে হৃদরোগে মৃত্যুর গল্প ফাঁদে নিহতের স্ত্রী মীতা দাস । কিন্তু নিহতের মাথায় ও মুখে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ও গলায় কালশিটে দাগ দেখে সন্দেহ হয় পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীদের । তারা কাটোয়া থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘাতক স্ত্রীকে আটক করে । পাশাপাশি মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ ।
জানা গেছে,আমূল গ্রামের বাসিন্দা অনিল দাসের তিন ছেলের মধ্যে বড় ছিলেন মহাদেব । অনিল দাস, তার ছোট ছেলে সহদেব ও মেজ ছেলে জয়দেব বর্ধমানে কাজ করেন এবং সেখানেই থাকেন। মাঝেমধ্যে বাড়ি আসেন। অনিলবাবুর তিন ছেলেই বিবাহিত । নয়বছর আগে মঙ্গলকোট থানার বাজার বনকাপাসী গ্রামের বাসিন্দা রাজু দাসের মেয়ে মীতার সঙ্গে দেখাশোনা করে বিয়ে হয়েছিল পেশায় জনমজুর মহাদেব দাসের ৷ তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে । মেয়ে মধুশ্রী ক্লাস ওয়ানে পড়ে। ছেলে সন্দীপের বয়স তিনবছর ।
নিহতের ভাই জয়দেব দাসের অভিযোগ,’আমার বউদির সঙ্গে একজনের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। মাস পাঁচেক আগে তার সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিল । কয়েক দিন পর বউদিকে খুজে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু তার পরেও প্রেমিকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলত বউদি । । এনিয়ে দাদার সঙ্গে অশান্তি হত। তাই পথের কাঁটা আমার দাদাকে চিরতরে সরিয়ে দিতে প্রেমিকের সঙ্গে পরিকল্পনা করে তাকে খুন করেছে বউদি ।’ তার দাদাকে খুনের ষড়যন্ত্রে বউদির বাপের বাড়ির লোকজনেরও ইন্ধন রয়েছে বলে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ।
জানা গেছে,শনিবার মধ্যরাতে ঘুমন্ত স্বামীর মাথায় ভারি কিছু দিয়ে আঘাত করে খুন করে মীতা দাস । তারপর দেহটি ঘুমানোর ভঙ্গিমায় রেখে চাদর ঢাকা অবস্থায় রেখে আবার নিজের ঘরে শুয়ে পড়েন তিনি।। সকালে উঠে প্রতিবেশীদের কাছে মীতা গল্প ফেঁদেছিলেন হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে তাঁর স্বামীর। কিন্তু মৃতের শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখেই আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা নিশ্চিত হন যে মহাদেব দাসকে খুন করা হয়েছে ।
মৃতের বন্ধু কেষ্ট দাস বলেন,’মীতা প্রথমে আমাদের বলেছিল মহাদেব হৃদরোগে মারা গেছে। কিন্তু মৃতদেহের মাথার পিছনে ও কানের কাছে আঘাতের দাগ ছিল । এছাড়া গলা ও মুখেও কালসিটের দাগ দেখা যায় । এমনকি মেঝেতে পড়ে থাকা রক্ত যে মুছে ফেলা হয়েছে সেটসও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল । তাই আমরা নিশ্চিত যে মহাদেবকে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে ।’ পুলিশ জানিয়েছে, আটক মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ।।

