এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৮ জুন : গতকাল মুসলিমদের উৎসব ঈদ উদযাপন হয়েছে । গোটা রাজ্যের পাশাপাশি কলকাতাতেও অগনিত পশুর কুরবানি দেওয়া হয়েছে । তার ঝলক দেখা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ ভাইরাল হওয়া কিছু ভিডিওতে । সেই ভিডিওতে কোথাও রক্তে লাল গোটা রাস্তা । কোথাও ট্যাপ থেকে বের হচ্ছে লাল জল । এমনই ভিডিও এক্স-এ পোস্ট করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার । তিনি কলকাতা ও বাংলাদেশের রক্তে লাল রাস্তার পাশাপাশি ট্যাপ থেকে লাল জল বের হওয়ার ভিডিও শেয়ার করে মন্তব্য করেছেন,’পশ্চিমবঙ্গকে ‘বৃহত্তর বাংলাদেশ’-এ পরিণত করতে মরিয়া তোষণে আচ্ছন্ন ‘হীরক রানী’ ।’ ট্যাপ থেকে লাল জল বের হওয়ার ভিডিওটি কলকাতার পার্ক সার্কাস এলাকার বলে দাবি করা হয়েছে ।
সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন, ‘যখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজেই তোষণের মাধ্যমে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার জন্য পশ্চিমবঙ্গকে ‘বৃহত্তর বাংলাদেশ’-এ পরিণত করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন, তখন এর পরিণতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। গতকাল একটি বিশেষ ধর্মীয় উৎসব উদযাপনের পর কলকাতা থেকে যে চিত্রগুলি উঠে এসেছে তা বাংলাদেশের দৃশ্যের সাথে কোনও পার্থক্য করে না! রাস্তাগুলি লাল, এমনকি পৌরসভার কল থেকে প্রবাহিত জলও রক্তে মিশে গেছে বলে জানা গেছে! পশ্চিমবঙ্গকে ধীরে ধীরে বাঙালি হিন্দুদের জন্য একটি বধ্যভূমিতে পরিণত করার জন্য সর্বোচ্চ স্তরে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। তোষণে আচ্ছন্ন ‘হীরক রানী’ যেকোনো মূল্যে আরেকটি বাংলাদেশ তৈরির তার স্বপ্ন পূরণ করতে কোনওভাবেই থামবে না !’
বিজেপির যুবনেতা তরুনজ্যোতি তিওয়ারি রক্তের স্রোত প্রবাহিত রাস্তার ভিডিও এক্স-এ শেয়ার করে একটা বড়সড় পোস্ট করেছেন । তিনি লিখেছেন,’এটা বাংলাদেশ নয়, পাকিস্তানও নয় — এটা আমাদের কলকাতা! গতকাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিওটি ঘুরে বেড়াচ্ছে, তা দেখলে যে কেউ হতবাক হয়ে যাবেন। ভিডিওটি কলকাতা পুরসভা অধীন ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের — চৌরঙ্গী বিধানসভা এলাকায় উত্তর কলকাতার এক রাস্তার দৃশ্য। ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করার জন্য বিশ্বাস করুন ওখানে গিয়ে দেখার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা হয়নি। পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ করবো বিষয়টি দেখার জন্য ।’
তিনি লিখেছেন,’সেখানে দেখা যাচ্ছে, কিভাবে শহরের নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং একইসঙ্গে, জনমানসে উদ্বেগ ছড়ানো এমন কিছু চিত্র উঠে এসেছে যা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। কলকাতার রাস্তায় এই ধরনের দৃশ্য মানা যায় না।
কলকাতার মাননীয় মেয়র মহাশয় সম্প্রতি দাওয়াত এ ইসলাম জানিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যারা ইসলাম নিয়ে জন্মায়নি তারা নাকি দুর্ভাগ্য নিয়ে জন্মেছেন। সেই দাওয়াতের অংশ ছিল কি এটা? আপাতত একটা এলাকার দৃশ্য সামনে এসেছে এই সরকার থাকলে হয়তো এই দৃশ্য কলকাতার এবং পশ্চিমবঙ্গের অলিতে গলিতে দেখা যাবে।’
তরুনজ্যোতি তিওয়ারি লিখেছেন,’একাধিক উচ্চ আদালতের নির্দেশ রয়েছে যে প্রকাশ্যে কোরবানি ও রাস্তার উপর কোরবানি সম্পূর্ণরূপে আইনবিরুদ্ধ। ভারতের আইন অনুযায়ী পশু জবাইয়ের জন্য “Fit for slaughter” সার্টিফিকেট থাকা আবশ্যক এবং তা নির্দিষ্ট স্লটার হাউসে করতে হয়। আমাদের প্রশ্ন —
গতকাল কলকাতা শহরে যত কোরবানি হয়েছে, তার মধ্যে কতগুলো ছিল আইন সম্মত ও প্রত্যয়িত? কতগুলো ঘটনা ঘটেছে যেখানে ওই নিয়ম লঙ্ঘন হয়েছে? প্রশাসন ও পুলিশ কতগুলো ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিয়েছে?’
তিনি বলেছেন,’আমরা কারও ধর্মবিশ্বাস বা উৎসব পালনের বিরোধিতা করছি না। কিন্তু রাষ্ট্রের আইন সকলের জন্য সমান হওয়া উচিত। আইন লঙ্ঘনের ঘটনা ধর্ম নির্বিশেষে সবার ক্ষেত্রেই প্রশ্নযোগ্য। গো মাতার কোরবানির সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। অন্য কোন পশু তারা কোরবানি দিতে পারে । ইচ্ছাকৃতভাবে এটা করা হয় শুধুমাত্র হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবে আঘাত করার জন্য।আমরা চাই শান্তিপূর্ণ, সৌহার্দ্যপূর্ণ, এবং আইনের শাসন অনুযায়ী পরিচালিত এক কলকাতা। হিন্দু-মুসলিম নয়, এটি সবার কলকাতা — যেখানে সকল সম্প্রদায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও সমানাধিকার থাকবে। প্রশাসন যেন প্রতিটি ঘটনায় নিরপেক্ষভাবে আইন অনুসারে পদক্ষেপ নেয়।’।

