এইদিন ওয়েবডেস্ক,তমলুক(পূর্ব বর্ধমান),০৭ জুন : রাজ্য সরকার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ৫৪০ কিলোমিটার জায়গা না দেওয়ায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া যাচ্ছে না, আর সেই সুযোগে দেদার রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি মুসলিমরা ঢুকে পশ্চিমবঙ্গের জনবিন্যাসের পরিবর্তন ঘটাচ্ছে বলে দীর্ঘ দিন ধরে অভিযোগ তুলে আসছিল বিজেপি । অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ভারত-বাংলাদেশের উন্মুক্ত সীমান্তে কাঁটাতার লাগাতে বিএসএফ-কে জমি দেওয়ার ছাড়পত্র দিয়েছেন আজ । প্রতিক্রিয়ায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’আগে জমি দিলে ৭০-৮০ লক্ষ্য রোহিঙ্গা মুসলমান ঢুকে আমাদের এখানে বাচ্চা মেয়েদের তুলে নিয়ে গিয়ে শারীরিক নির্যাতন, লাভ জিহাদ, ধর্ম পরিবর্তন,ভোট জিহাদ,ল্যান্ড জিহাদ করতে পারত না।’
আজ শনিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুকের নিমতৌড়িতে দলীয় কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী । সেখানে বিএসএফ-কে রাজ্যের জমি দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন,’একটা প্রবাদ বাক্য গ্রামে আছে “ঠেলায় না পড়লে বিড়াল গাছে ওঠে না”৷ কঠিন এবং কঠোর বার্তা তে বাধ্য হয়েছে । কিন্তু আমরা এটাকে ওয়েলকাম করছি ।’ শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’৫৪০ কিলোমিটার জায়গা খোলা আছে । হু হু করে রোহিঙ্গা মুসলমানরা ঢুকছে । তারা আমাদের জমি, আমাদের রেশন, সব দখল করছে । লাভ জিহাদ, ভোট জিহাদ, ল্যান্ড জিহাদ, ধর্ম জিহাদ সব এখানে এসে করছে । এদের আটকানো দরকার । আর আটকানো তখনই সম্ভব,যখন কাঁটাতার দেওয়া হবে । স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেদিন নেতাজি ইন্ডোর স্পষ্ট বলেছিলেন ‘জমি দিয়ে দিন বেড়া কমপ্লিট করব, তারপরে যদি মানুষ তো দূরের কথা একটাও পিঁপড়ে পর্যন্ত যদি ঢোকে তাহলে তার দায়িত্ব বিএসএফ- এর’ ।’
তিনি বলেন,’কেন্দ্র স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেদিন ১২ হাজার বিজেপি কর্মীর সামনে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে দিয়েছেন, “জমি দাও হিসাব বুঝে নাও” । এটা আগে দিলে ৭০-৮০ লক্ষ্য রোহিঙ্গা মুসলমান ঢুকে আমাদের এখানে ছোট ছোট বাচ্চা মেয়েদের তুলে নিয়ে গিয়ে শারীরিক নির্যাতন, লাভ জিহাদ, ধর্ম পরিবর্তন, ভোট জিহাদ, জমি দখল করে ল্যান্ড জিহাদ, যেখানে সেখানে ঝুপড়ি তৈরি করে বসতি স্থাপন করা, আর আপনাদের দয়ায় ভুয়ো আধার কার্ড এপিক কার্ড বানাতে পারত না ।’
মমতা ব্যানার্জির উদ্দেশ্যে শুভেন্দু অধিকারী বলেন,
‘আপনার দলের প্রাক্তন মন্ত্রী কাকদ্বীপের এমএলএ মন্টুরাম পাখিরা বলছেন দশ হাজার টাকা দিলে তো সব করে দেওয়া যায় । এবার এটা বন্ধ হবে । এটা ভারতীয় জনতা পার্টির স্বার্থে নয় । সমগ্র ভারতবর্ষের স্বার্থে এই কাজটা যদি মমতা ব্যানার্জি ২০১১ তে ক্ষমতা এসে করতেন তাহলে আজকে পশ্চিমবঙ্গে এই অবস্থা আমাদের দেখতে হতো না ।’
জানা গেছে,সীমান্তে কাঁটাতার লাগাতে এখনও পর্যন্ত ৬৮০ একর জমি কেনার টাকা দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। তারমধ্যে ৩২৪ একর জমি পেয়েছে বিএসএফ। কিন্তু, বাকি ৩৬৫ একর জমি রাজ্য সরকার দিচ্ছিল না বলে অভিযোগ । অবশেষে আজ বাকি ৩৫৬ একর জমি বিএসএফের হাতে দ্রুত হতাস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । ইতিমধ্যেই সব জেলার প্রশাসনের কাছে নির্দেশিকা চলে গেছে বলে খবর ।’ শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন,’কেন দিতে হচ্ছে তো জানেন । অনিচ্ছা সত্ত্বেও দিতে হচ্ছে । পশ্চিমবঙ্গ সরকার জমি দিচ্ছিল না বলে ভারত সরকার ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে গেছে । এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব মাননীয় গোবিন্দ মোহন গত তিন মাসে ৮ বার রাজ্যের প্রধান প্রধান আধিকারিকদের সঙ্গে মিটিং করেছেন । গত রবিবার, যেদিন আইএফএসএল-এর অফিস উদ্বোধন করেন অমিত শাহজি, আমার কাছে খবর আছে সেদিন বিকেলেও রাজ্যের সমস্ত প্রথম সারির আইএএস আইপিএস এর নিয়ে মিটিং করে ভারত সরকার স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে জমি দিন তা না হলে আমরা সরাসরি জমি নেবো ।’ আর তাতেই কাজ হয়েছে বলে তিনি মনে করছেন ।।

