এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৩ জুন : ‘বাক স্বাধীনতার অর্থ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা নয়’- এমনই মন্তব্য করে শর্মিষ্ঠা পানোলির জামিন নাকিচ করে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী পার্থ সারথি চ্যাটার্জি । তার কথায়,’শর্মিষ্ঠা যদি ২ দিন হেফাজতে থাকে তাহলে কিছুই হবে না, ভিডিও তৈরির আগে তার পরিণতি সম্পর্কে ভাবা উচিত ছিল ।’ আজ মঙ্গলবার শর্মিষ্ঠার অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন নিয়ে শুনানি হয় । কিন্তু বিচারপতি সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন । সেই সঙ্গে আদালত জানিয়েছে, শর্মিষ্ঠা পানোলির বিরুদ্ধে গার্ডেনরিচ ছাড়া বাকি যে এফআইআরগুলি হয়েছে সেগুলির ভিত্তিতে কোনো পদক্ষেপ করা যাবে না। এই একই অভিযোগের ভিত্তিতে আর নতুন করে কোনো এফ আই আর করা যাবে না বলেও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি । আগামী ৫ জুন পরবর্তী শুনানি হবে এই ইস্যুতে, ওইদিন কেস ডায়েরি পেশ করতে বলা হয়েছে রাজ্যকে।
২২ বছরের সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার শর্মিষ্ঠা শর্মিষ্ঠা হরিয়ানার গুরুগ্রামের আনন্দপুরের বাসিন্দা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর একটি পোস্টের কারণে বিতর্ক শুরু হয়। যদিও পরে তা মুছে দেন তিনি। এমনকি ওই পোস্টের জন্য ক্ষমাও চান সোশ্যাল মিডিয়ায় । যদিও তাকে ‘সর তন সে জুদা’র অর্থাৎ শিরোচ্ছেদ করার হুমকি অব্যাহত ছিল । কলকাতার গার্ডেনরিচ থানায় শর্মিষ্ঠার বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ দায়ের করে একই এলাকার রশিদী ফাউন্ডেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ৩০ বর্ষীয় ওয়াজাহাত খান। তার অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশ ১৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে গুরুগ্রাম থেকে শর্মিষ্ঠা পানোলিকে কলকাতা পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং তাকে রাতারাতি বিমানে কলকাতায় নিয়ে আসে । বর্তমানে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন শর্মিষ্ঠা ।
এদিন তরুণীকে আদালতে পেশ করা হয়। অন্তর্বর্তী জামিনের আর্জি জানিয়েছিলেন শর্মিষ্ঠা। যদিও তা খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ, বাক স্বাধীনতা নিরঙ্কুশ নয় এবং এটা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অনুমতি দেয় না। হাইকোর্ট বলেছে,’আপনার মন্তব্যে দেশের মানুষের একাংশের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে। আমাদের বাক স্বাধীনতা আছে, কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে আপনি অন্যদের অনুভূতিতে আঘাত করবেন। আমাদের দেশ বৈচিত্র্যে পূর্ণ।’
যদিও খোদ অভিযোগকারী ওয়াজাহাত খানের বিরুদ্ধে দেবী কামাক্ষা মাতা ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে নিয়ে কটুক্তি করার অভিযোগ উঠেছে । তার বিরুদ্ধে গতকাল পর্যন্ত দিল্লি, আসাম, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, গুজরাট প্রভৃতি রাজ্য মিলে মোট ২৭টি এফআইআর দায়ের হয়েছে । কলকাতা পুলিশও পরে একটা অভিযোগ দায়ের করেছে । তবে এখনো পর্যন্ত গ্রেপ্তারির খবর নেই বলে জানা গেছে ।।

