এইদিন ওয়েবডেস্ক,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),০১ জুন : ভিনরাজ্যে একটি সংস্থায় স্বর্ণশিল্পীর কাজ করতেন পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরা শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার কাটাটিকুরি দাসপাড়ার বাসিন্দা রুদ্রপ্রসাদ টিকাদার। স্ত্রী নিলীমা মণ্ডল ও তিন বছরের সন্তানকে নিয়ে ছিল তার সুখের সংসার ৷ কিন্তু স্ত্রীর মারণরোগ ক্যান্সার ধরা পড়লে সবকিছু উলটোপালটা হয়ে যায় । স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে যেটুকু জমানো টাকা ছিল সব নিঃশ্বেষ হয়ে গেছে । এদিকে স্ত্রী ও শিশুসন্তানের দেখভালের জন্য বাড়ি ফিরে আসতে হয়েছে রুদ্রপ্রসাদবাবুকে । অনেক ধারদেনাও হয়ে গেছে তার । এই পরিস্থিতিতে সংসার চালিয়ে স্ত্রীর চিকিৎসা কিভাবে করাবেন ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছেন না তিনি ।
রুদ্রপ্রসাদবাবু জানান,ভিনরাজ্যে কাজ করে যেটুকু উপার্জন করতেন তাদের তার সংসার চালিয়ে অল্প কিছু সঞ্চয় হত । কিন্তু বছর দুয়েক আগে তার স্ত্রীর স্তনে ক্যান্সার ধরা পড়ে। স্ত্রীর চিকিৎসা ও সন্তানের দেখভালের জন্য আট মাস আগে কাজ ছেড়ে দিতে হয় । তারপর তিনি বাড়িতেই আছেন ।
তিনি বলেন,’প্রথমে জমানো অল্পসল্প টাকায় সংসার চালিয়ে স্ত্রীর চিকিৎসার খরচ চালাচ্ছিলাম । সেই টাকা শেষ হয়ে যাওয়ার পর লোকের কাছে হাত পাততে হয় । অনেক ধারদেনাও হয়ে গেছে । এদিকে সংসার খরচ বাদ দিয়ে প্রতিমাসে স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে গিয়েই প্রতি মাসে গড়ে ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে । এখন আমি কি করব জানি না ।’
জানা গেছে,নিলীমাদেবী বর্তমানে শয্যাশায়ী হয়ে গেছেন । লাঠি ধরে তাঁকে হাঁটাচলা করতে হয়। এদিকে একদিকে স্ত্রীর চিকিৎসা ও সংসার খরচের চিন্তার মাঝেই রান্নাবান্না থেকে শুরু করে যাবতীয় গৃহস্থালির কাজ সারতে হচ্ছে রুদ্রপ্রসাদবাবুকে । তার এই করুণ অবস্থার কথা শুনে আজ রবিবার রুদ্রপ্রসাদবাবুর বাড়িতে যান গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখোপাধ্যায় । তার হাতে হাতে কিছু সাহায্য তুলে দেন। পাশাপাশি আজ একটি সংস্থার পক্ষ থেকে ওই ক্যান্সার আক্রান্ত বধূর হাতে বেশকিছু ত্রাণসামগ্রী ও নগদ টাকা তুলে দেওয়া হয় ।
নিলীমাদেবী বলেন,’ বাচ্ছাটাকে দুধ পর্যন্ত কিনে দিতে পারি না । যেটুকু সাহায্য আজ পেলাম তাতে কয়েকদিন চলবে । কিন্তু তারপর কি হবে ? ভেবে কিছু কুলকিনারা পাচ্ছি না ।’ যদিও সংস্থার কর্মকর্তা সুবীর রাণা জানিয়েছেন,মহিলার চিকিৎসায় দামি দামি ওষুধ কেনার জন্য জন্য যাতে কিছু একটা ব্যবস্থা করা যায় সেটা সংস্থার তরফে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে ।।

