এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০১ জুন : সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার শর্মিষ্ঠা পানোলিকে গ্রেপ্তার করতে ১৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে হরিয়ানার গুরুগ্রামে গিয়েছিল কলকাতা পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে,একটি ইনস্টাগ্রাম ভিডিয়োতে একটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শর্মিষ্ঠার বিরুদ্ধে। কিন্তু এরাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি থেকে শুরু করে সাংসদ মহুয়া মৈত্র ও সায়নী ঘোষকে ধর্মনিন্দার অভিযোগে কেন গ্রেপ্তার করা হল না,এই প্রশ্ন তুলছে বিজেপি । তবে শুধু বিজেপিই নয়,অন্ধ্রপ্রদেশের উপ মুখ্যমন্ত্রী পবন কল্যাণও এনিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ।
তিনি গতকাল এক্স-এ মমতা ব্যানার্জির হিন্দুধর্মকে “গন্দা ধর্ম” মন্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছেন । পবন কল্যাণ লিখেছেন,’অপারেশন সিন্দুরের সময়, আইনের ছাত্রী শর্মিষ্ঠা মুখ খুলেছিলেন, তার কথাগুলো কারো কারো কাছে দুঃখজনক এবং আঘাতজনক ছিল। তিনি তার ভুল স্বীকার করেছিলেন, ভিডিওটি মুছে ফেলেছিলেন এবং ক্ষমা চেয়েছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে শর্মিষ্ঠার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিল। কিন্তু তৃণমূলের নির্বাচিত নেতা, সাংসদরা যখন সনাতন ধর্মকে উপহাস করেছিলেন, তখন লক্ষ লক্ষ মানুষের উপর যে গভীর, তীব্র যন্ত্রণার সৃষ্টি হয়েছিল তার কী হবে? আমাদের ধর্মকে ‘গন্দা ধর্ম’ বলা হলে ভুল স্বীকার কই ? কখন ক্ষমা চাওয়া হল ? তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারি কোথায়? সর্বদা ধর্মনিন্দার নিন্দা করা উচিত! ধর্মনিরপেক্ষতা কারও জন্য ঢাল এবং অন্যদের জন্য তরবারি নয়। এটি অবশ্যই দ্বিমুখী রাস্তা হতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ, জাতি দেখছে। সকলের জন্য ন্যায়বিচার করুন।’
রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অন্ধ্রের উপ মুখ্যমন্ত্রীর সেই পোস্ট ট্যাগ করে তৃণমূল নেতাদের হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্যের একটা পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন । তিনি লিখেছেন,’মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় – ‘মহা কুম্ভ হলো মৃত্যু কুম্ভ’। ‘জয় শ্রী রাম’ বললে তাঁর প্রতি অসম্মানজনক অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে। কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
মহুয়া মৈত্র – “আমার কাছে কালী একজন মাংস ভক্ষণকারী, মদ্যপানকারী দেবী,” কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ফিরহাদ হাকিম – “যারা ইসলাম ধর্মে জন্মগ্রহণ করেনি তারা দুর্ভাগ্যজনক। আমাদের তাদের ইসলামের আওতায় আনতে হবে, এবং আমাদের উচিত দাওয়াত-ই-ইসলামকে সমর্থন করে অমুসলিমদের মধ্যে ইসলাম প্রচার করা। কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
শুভেন্দু অধিকারী আরও লিখেছেন,’২২ বছর বয়সী আইনের ছাত্রী এবং প্রভাবশালী শর্মিষ্ঠা পানোলি, পাহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে একটি ব্যক্তিগত মন্তব্য করেছিলেন, যেখানে হিন্দুদের বেছে বেছে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল, যা পরে তিনি মুছে ফেলেন এবং ক্ষমা চান, তবুও তাকে গুরগাঁও থেকে কলকাতা পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
পশ্চিমবঙ্গে যখন হিন্দু দেবদেবীদের মূর্তি ভাঙা হয়,রাম নবমী ও হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রায় যখন পাথর ছোঁড়া হয় তখন এই একই উৎসাহ কোথায়, কলকাতা পুলিশ ? অনুব্রত মণ্ডল যখন আপনার অধস্তন স্ত্রী ও মাকে ধর্ষণের হুমকি দেন, তখন আপনি কোথায় আপনার মেরুদণ্ড বন্ধ করে রেখেছেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজি ? আমি সকলকে আশ্বস্ত করতে চাই যে জাতীয়তাবাদী আইনজীবীরা শর্মিষ্ঠার মামলাটি তুলছেন এবং তাকে সর্বোত্তম আইনি প্রতিরক্ষা প্রদান করা হবে, এবং আমি আশা করি যে তিনি জঘন্য ও দুষ্ট মমতা পুলিশের খপ্পর থেকে মুক্ত হবেন।’।

